সমসাময়িক ভক্ত পরিচয়
যবে প্রভু হরিচাঁদ করে লীলা সাঙ্গ।
বহুত হইল ভক্ত তাঁর অনুসঙ্গ।।
হীরামন গেল চলি গেল মৃত্যুঞ্জয়।
গেলাক ছাড়িল দেহ বিরহ-ব্যথায়।।
শ্রীরাম ভরত পরে উদাসী হইল।
কেবা জানে কোন পথে কোন দেশে গেল।।
প্রেমে-বাধ্য-ভক্ত যারা বিরহে পুড়িল।
শুধু মাত্র দেহধারী গোস্বামী তারক।
মহানন্দ সঙ্গে ফিরে হইয়া পুলক।।
হরিপাল শ্রীঅক্ষয়, মহেশ বেপারী।
শ্রীদেবীচরণ সাধু নিবাস বানেরী।।
কবিবর হরিবর দূর্গাপুর বাসী।
জগদীশ, কুমারেশ মত্ত হ’ল আসি।।
হাদান বদন রায় গোপাল বিশ্বাস।
নেপাল বিপিন সাধু কেনাভাঙ্গা বাস।।
গঙ্গাচর্ণা বাসী সাধু অশ্বিণী কুমার।
কার্ত্তিক যাঁহার পিতা বিদিত সংসার।।
যাদব বিশ্বাস আর যাদব মল্লিক।
শ্রীযাদব ঢালী নাম পরম নৈষ্ঠিক।।
বৈরাগী চন্ডিচরণ তালতলাবাসী।
সূর্য্যনারায়ণ হে হীরামনের “মাসী।।
বাসুড়িয়া বাসী জানি শ্রীরাই চরণ।
তারকের আশীর্ব্বাদে সাধক-জীবন।।
পাতলা নিবাসী ভক্ত নাম ধনঞ্জয়।
গুরুচাঁদ পদে নিষ্ঠা যাঁর অতিশয়।।
শ্রীবিধু চৌধুরী আর ভক্ত যজ্ঞেশ্বর।
রামতনু সাধু যাঁর পদ্মবিলা ঘর।।
কৃষ্ণপুর বাসী ভক্ত তারিণীচরণ।
ব্রহ্মদেশে কার্য করে ডাক্তার সুজন।।
সোনাতন, বিচরণ শ্রীষষ্ঠী চরণ।
বাবুরাম, মাধবেন্দ্র, এই দুইজন।।
টুঙ্গীপাড়া বাস সাধু শ্রীতপস্বী রাম।
ঝোঁকে ঝোঁকে করে যিনি শুধু হরিনাম।।
শ্রীদেবীচরণ সাধু মহিমা অপার।
দেশে দেশে নাম ধর্ম্ম করিল প্রচার।।
দেবীচাঁদ শ্রীতারক আর মহানন্দ।
বিশ্বজীবে বাটি দিল প্রেম-মকরন্দ।।
শ্রীদেবীচাঁদের গুণে বলিহারী যাই।
যিনি ওড়াকান্দী আনে গোপাল গোঁসাই।।
সুন্দরবনের ধারে খুলনা জিলায়।
লবণাক্ত দেশে কেহ প্রচারে না যায়।।
গুরুচাঁদ আজ্ঞা দিল শ্রীদেবীচরণে।
“শোন দেবী এক কথা জাগে মোর মনে।।
দক্ষিণ বাদার কাছে কয়টী জেলায়।
ঠাকুরের লোক আছে তাই মনে হয়।।
সেই দেশে যাও তুমি নাম প্রচারিতে।
তাহাতে মঙ্গল বহু হবে এ জগতে।।”
সেই আজ্ঞা দেবী দক্ষিণিতে যায়।
তাহে বহু ভক্ত হৈল খুলনা জিলায়।।
লহ্মীখালী গ্রামের ঘর শ্রীগোপাল সাধু।
নামে মত্ত হয়ে পান করে প্রেম-মধু।।
তাঁহার মামাতো ভাই শ্রীমাধব নাম।
শ্রীনাথ মন্ডল নামে বেতকাটা গ্রাম।।
এক সঙ্গে সবে যায় ধাম ওড়াকান্দী।
গুরুচাঁদে রূপে মন খে এল বন্ধী।।
এই মত যবে মাত্র ভক্ত সম্প্রদায়।
মতুয়া-জীবন-পট প্রভুজী উল্টায়।।
ধর্ম্ম-কর্ম্ম-সম্মিলনে ভক্তের জীবন।
আপনি গড়িলা প্রভু জীবের কারণ।।
আসক্তি-বিহীন-কর্ম্ম ভক্তে দিল শিক্ষা।
শিক্ষা দিয়া করে প্রভু তাহার পরীক্ষা।।