ভবঘুরেকথা

নমঃশূদ্র সুহৃদ’ প্রকাশ
ফরিদপুরেতে হ’ল লাট দরশন।
তার কিছু পূৰ্ব্বে মীড বলিল বচন।।
সংবাদ পত্রিকা’ যাতে প্রচারিত হয়।
সেই পরামর্শ মীড প্রভুরে জানায়।।
সেই আলোচনা পূৰ্ব্বে লেখা হইয়াছে।
পরবর্তী কথা কিছু বলিতেছি পাছে।।
প্রভুর কনিষ্ঠ পুত্র নামেতে সুরেন্দ্র।
রূপবান গুণবান যেন পূর্ণ চন্দ্র।।
বার শ’ পচানব্বই সালে জন্ম নিল।
ওড়াকান্দী হাই স্কুল পাঠ সাঙ্গ হ’ল।।
উনিশ শ’ বার অব্দে প্রবেশিকা পাশ।
তার পূৰ্ব্বে করিলেন পত্রিকা প্রকাশ।।
ডক্টর মীডের কথা প্রভু মান্য করে।
পত্রিকা বাহির করি দিল ঘরে ঘরে।।
আদিত্য চৌধুরী নাম ওড়াকান্দী বাসী।
সম্পাদক হ’ন তিনি আনন্দেতে আসি।।
কৰ্ম্মাধ্যক্ষ সাজিলেন সুরেন্দ্র ঠাকুর।
স্বত্বাধিকারীর নাম হইল প্রভুর।।
জ্ঞানগর্ভ নীতি কত হইল প্রচার।
নমঃশূদ্র জাতি শিখে আচার বিচার।।
ঘরে ঘরে বন্ধু রূপে যেত পত্ৰখানি।
তা’তে নাম “নমঃশূদ্র সুহৃদ” বাখানি।।
বিংশ বর্ষ বয়ঃক্রম শ্ৰীসুরেন্দ্ৰ নাথ।
পত্রিকা চালনে ছিল অতি সিদ্ধ-হাত।।
নিরলস জ্ঞানবান কৰ্ম্মাধ্যক্ষ রূপে।
স্বজাতির সেবা করে অতি চুপে চুপে।।
কোন স্থানে কোন দিনে জাগিলে সংশয়।
শ্ৰীশশিভূষণ ঠাঁই তাহা পুঁছি লয়।।
ষষ্ঠ বর্ষ এই ভাবে চলিল পত্রিকা।
নমঃশূদ্র জাগরণে হ’ল কথা লেখা।।

দেখিয়া ডক্টর মীড আনন্দিত অতি।
বহু ব্যাখ্যা করিলেন সুরেন্দ্রের প্রতি।।
‘চণ্ডাল’ বলিয়া দিত নমঃশূদ্রে গালি।
করিলেন চেষ্টা প্ৰভু মুছিতে সে কালী।।
সে বৃত্তাস্ত আদ্যোপান্ত বলিব পশ্চাতে।
এবে বলি পত্রিকাটি কি করিল তা’তে ?
বহু আন্দোলন করে সে পত্রিকা খানি।
জনে জনে জানাইল দুঃখের কাহিনী।।
কি ভাবে ঘুচিল দুঃখ কে দুঃখ ঘুচায় ?
ঘরে ঘরে পত্রিকাটি সে বাৰ্ত্ত জানায়।।
গালি গেল নমঃশূদ্র হইল নিৰ্মল।
মুছে ফেলে নমঃশূদ্র নয়নের জল।।
মেঘ-মুক্ত-রবি সম হাসিতে লাগিল।
হেন কালে বিনা মেঘে বজ্রাঘাত হল।।
অকালে সুরেন্দ্রনাথ পর পারে যায়।
নমঃশূদ্র জাতি সবে করে হায় হায়।।
প্রাণ চলি গেলে দেহ চলিবে কেমনে ?
“নমঃশূদ্র সুহৃদ” বন্ধ হ’ল এতদিনে।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!