দেখিয়া কন্যার রূপ চিন্তে ধনপতি।
কাহারে করিবে দান কন্যা প্রভাবতী।।
ভট্টকে ডাকিয়া আনি বলে সদাগর।
আনহ কন্যার বর পরম সুন্দর।
কবি কাব্য পাঠে ভট্ট মধুর বচন।
আনিতে কন্যার বর করিল গমন।।
প্রথমে গমন ভট্ট পশ্চিম শহর।
তথায় দেখিল ভট্ট বহু সদাগর।।
জিজ্ঞাসিল নাম গোত্র তাহারা কহিল।।
বুঝিয়া কার্যের গতি অন্যত্র চলিল।।
দক্ষিণ শহরে ভট্ট করে অবস্থিত।
তথায় আছেন সাধু নাম জয়পতি।।
গোবিন্দ তাহার পুত্র পরম সুন্দর।
ভাবিয়া বুঝিল ভট্ট এই জন বর।।
তাহার সদনে ভট্ট করিল গমন।
কবি কাব্য পাঠে ভট্ট করে নিবেদন।।
শুন শুন মহাশয় সাধু জয়পতি।
উজানী নগরে সাধু নাম ধনপতি।।
প্রভাবতী তার কন্যা কি কহিব আর।
তাহার বরণযোগ্য তোমার কুমার।।
শুনিয়া ভট্টের বাণী আনন্দিত মন।
পুত্রের বিবাহ দিন করে নিরূপণ।
গণক আনিয়া সাধু আপনার পুরে।
লগ্ন পত্র দিয়া তারে দিন ধার্য করে।
করিয়া দিবস ধার্য চলিল সত্বর।
উপস্থিত হইল আসি উজানী নগর।
হরি হরি মুখ ভরি বল সর্বজন।
বলিল পাঁচালী দ্বিজ গঙ্গানারায়ণ।
পুত্র সঙ্গে করি সাধু মহাহৃষ্ট মনে।
উপস্থিত হইল আসি সাধুর সদনে।।
ভট্ট বলে সদাগর করি নিবেদন।
এনেছি কন্যার বর ভুবনমোহন।।
যে রূপ তোমার কন্যা অতি গুণনিধি।
সেইরূপ আনি পাত্র মিলাইল বিধি।
ভ্রমিলাম যত দেশ কি করিব আর।
বিবেচনা করি সাধু কর পুরস্কার।।
শুনিয়া ভট্টের কাথা সাধু হৃষ্টমতি।
নানা রত্ন দিয়া কি করিল মিনতি।
দিলেন বরের বাসা অপূর্ব সদন।
পুরিমধ্যে জয়ধ্বনি করে বামাগণ।।
বিবাহ দিবস শুধু করিয়া শ্রবণ।
স্থানে স্থঅনে সদাগর করে নিমন্ত্রণ।।
দুমদুমি বাজন বাজে শুনিতে সুন্দর।
আনন্দে আসিল সবে সাধুর নগর।
রজনী প্রবৃত্ত হইল সূর্য অস্তমিত।
উপস্থিত হইল আসি কুল পুরোহিত।।
বলে সাধু শুন দিয়া মন।
মিথুন লগ্নেতে কন্যা কর সমর্পণ।।
পুরোহিত বাক্য শুনি সাধু হরষিত।
স্নান আহ্নিক সাধু করিলেন ত্বরিত।।
দিব্যবস্ত্র পরি সাধু বসিল আসনে।।
পূজিতে জাহ্নবী দেবী চলে বামাগণে।।
বিমলার করে ধরি, চলে চন্দ্রকলা নারী,
তার পাছে চলে ভানুমতি।
সুনয়না সুশোভনা, বিধুমুখী সুলোচনা,
চিত্ররেখা আর গুণবতী।
যত সদাগর সুতা, রতি-যিনি রূপযুতা,
অবিরত করে শুভ গান।
চরণে নুপুর সাজে ক্ষুদ্র ঘণ্টা কটিমাঝে,
হংসী যিনি গতির বাখান।
নয়নযুগল হেরী, কৃষ্ণসার দেশান্তিরি,
কুচজিত কুম্ভী হইল মত্ত।
পরাভবে এ দুর্জনে, নাহি অপমান মানে,
নারায়ণে বলে এই তত্ত্ব।
মস্তকে লইয়া ঝারি, চলিল সাধুর নারী,
উপস্থিত জাহ্নবীর তটে।
সঙ্গে যত সীমন্তিনী দিল সবে জয়ধ্বনি,
অবশেষে উপস্থিত ঘাটে।।
পূজিল জাহ্নবী শ্যামা, চলিল সকল রামা,
উপস্থিত কন্যার মন্দিরে।।
বিমলা সাধুর নারী, সঙ্গে লইয়া সুন্দরী,
জয়ধ্বনি করে বারে বারে।।
সাধুর রমণী শেষে লয়ে নারীগণ।
কন্যাকে মঙ্গল স্নান করায় তখন।।