ব্রাহ্মমুহুর্ত্তে উত্থান, ভগবৎ প্রবোধন, বাদ্যের সহিত আরত্রিক, বিধিপূর্ব্বক প্রাত:স্নান, পবিত্র বস্ত্রযুগ ধারণ, জলে তর্পণাদি দ্বারা অভীষ্টদেবের পূজন, চরণামৃত সেবন, তুলসী মণিমালাদি ভূষণ ধারণ, বিষ্ণুর নির্ম্মাল্য জল ক্ষেপন, বিষ্ণুর নির্ম্মাল্য চন্দন অঙ্গে বিলেপন, ভক্তিপূর্ব্বক শালগ্রাম শিলা ও প্রতিমাসমূহে ইষ্টদেবতার পূজাকরণ, পূজাদি কার্য্যে শিখাবন্ধনকরণ, বিষ্ণুপাদোদক দ্বারা পিতৃলোকের তর্পন, শক্তি থাকিলে মহারাজোপচারে শ্রীহরির পূজা করণ, বিষ্ণুভক্তির বিরুদ্ধ না হয়, এমন নৈমিত্তিক কার্য্যকরণ, ফল পুষ্পাদি ভক্তি পূর্ব্বক, ভগবানকে নিবেদন, নিত্য ভগবৎ পূজা, প্রত্যহ ত্রিলোকবিষ্ণু পূজন, প্রত্যহ পুরাণ শ্রবণ, বিষ্ণুর নিবেদিত বস্ত্রাদি ধারণ, ভগবানের আজ্ঞাবোধক সমুদয় পুণ্যকার্য্যে প্রবৃত্ত হওয়া, গুরুর আজ্ঞা গ্রহণ, গুরুর বাক্যে বিশ্বাস, ভক্তি সহকারে নৃত্যগীতাদি, নিত্য নৈবেদ্যার্পণ, সাধুগণের অভ্যর্থনা ও পুজাদি-করণ, নৈবেদ্য-শেষ গ্রহণ, তাম্বুল শেষে গ্রহণ, বৈষ্ণবের সঙ্গকরণ, দশম্যাদি দিনত্রয়ে বিশেষরূপে ধর্ম্ম জিজ্ঞাসাকরণ, একাদশী ব্রতের নিয়ম প্রতিপালন হেতো অস্বচ্ছন্দ বা অশান্তি বোধ না করা, জন্মাষ্টমী প্রভৃতির মহোৎ সবকরণ, দেবালয়াদিতে গমন, সদ্ব্যবস্থা অনুসারে অষ্টমহাদ্বাদশীর ব্রতকরণ, সমস্ত বৈষ্ণব ব্রতের প্রতিপালিত, গুরুতে ঈশ্বরবুদ্ধি স্থাপন ঊষার সন্ধ্যায় ময়ন না করা, মৃত্তিকা ব্যতীত শৌচ না করা, দণ্ডায়মান হইয়া আচমন না করা, অভক্তের সহিত মিত্রাদির না করা, উর্দ্ধজনানু হইয়া উপবেশন না করা, মন্ত্র ব্যতিরেকে তিলক রচনা ও আচমন না করা, অসৎ শ্রবণ না করা, তুচ্ছ সঙ্গ ও তুচ্ছ সুখে আসক্তি না হওয়া, মদ্য মাংস সেবন না করা, মাদক ঔষধ সেবন না করা, মুসুরাদি অন্ন ভোজন না করা, অভক্তের নিকট হইতে অন্ন সংগ্রহ না করা, (ক্ষুৎপীড়িত ব্যক্তির উদর ভরণ মাত্র অন্নের গ্রহণকে সংগ্রহ বলে), বিষ্ণু সম্বন্ধ ব্যতিরিক্ত অন্য ব্রত আচরণ না করা, বিষ্ণুমন্ত্র ভিন্ন অন্য মন্ত্র জপ না করা, মারণ উচাটন প্রভৃতি না করা, সামর্থ্য থাকিতে ন্যূনকল্পে উপচার প্রদান না করা, শোকাদির বশীভূত না হওয়া, ব্রত করিয়া দ্যূত ক্রীড়াদি না করা, সামর্থ্য থাকিলে ব্রতদিনে ফলাদিও ভোজন না করা, একাদশী ব্রতের দিন শ্রাদ্ধ না করা, দ্বাদশী দিবসে নিদ্রা না যাওয়া, দ্বাদশীতে তুলসী চয়ন না করা, দ্বাদশীতে দিবায় বিষ্ণুকে স্নান না করান, বিষ্ণুর অনিবেদিত অন্ন শ্রাদ্ধ না করা, বৃদ্ধিশ্রাদ্ধে তুলসী ব্যতিরেকে শ্রাদ্ধ না করা, চরণামৃত পান করিয়া শুদ্ধির জন্য অন্য জল দ্বারা আচমন করা, কাষ্ঠাসনে বা নিজাসনে উপবেশন করিয়া বাসুদেবের পূজা করা, পূজাকালে অসৎ আলাপ না করা, লৌহময় ধূপ পাত্রাদি ব্যবহার না করা, ভ্রম প্রযুক্ত ও বক্র তিলক না করা, এক হস্তে নমস্কার ও একবার প্রদক্ষিণ না করা, পয্যুষিত বা দুষিত অন্নাদি নিবেদন না করা, শীক্ত থাকিতে মুখ্যকালের লোপও গৌণকালে পরিগ্রহ না করা, বিষ্ণুর প্রসাদ গ্রহণে অনাদর না করা ইত্যাদি। ফল কথা, সাধ্যানুসারে দেব, দ্বিজ ও বৈষ্ণবকে তৃপ্তি করা অবশ্য কর্ত্তব্য।
……………………………………..
তত্ত্বরসামৃত জ্ঞানমঞ্জরী
-শ্রীশ্রী চরণ দাস