ভবঘুরেকথা
রাধারমণ দত্ত

কান্দে রাধা চন্দ্ৰমুখী দিবসরজনী
গোবিন্দ ছাড়িয়া গেলা মুই অভাগিনী।
চৈত্রমাসের দিন নিদ্রার আবেশ
আমায় ছাড়িয়া (ঠাকুর) কৃষ্ণ রইলা কোন দেশ।
কোন দেশে রইলা কৃষ্ণ নিলয় না জানি
গোকুলে কান্দিয়া বেড়ায় রাধা বিনোদিনী।
বৈশাখ মাসের দিন বিরহিত হইয়া
শীতল চন্দন রাধে অঙেজগতে লাগাইয়া।
শীতল চন্দন অঙ্গে লাগাও সখীগণ
বন্ধু দরশন বিনা বাঁচে না জীবন।
জ্যৈষ্ঠ মাসের দিন ফুটে নানান ফুল
রাধার বন্ধু কুঞ্জে নায় রমণীর পুড়ে বুক।
আষাঢ় মাসের দিনে আশা ছিল মনে
আসিবা ঠাকুর কৃষ্ণ রথযাত্ৰা দিনে।
শ্রাবণ মাসের দিনে দেখিলা স্বপন
শিয়রে গোবিন্দ বইছইন প্ৰভু নারায়ণ।
ভাদ্রমাসের দিনে ধাদা ছিল মনে
ভাণ্ড ভাণ্ডি মাখন খাইব গোয়ালের বাথানে।
আশ্বিন মাসের দিনে উদ্ধবরে জিজ্ঞাসে
যাইবা নি রে প্রাণ উদ্ধব শ্ৰীকৃষ্ণের উদ্দেশে—।
একথা শুনিয়া উদ্ধাব করিলা গমন
কৃষ্ণের সাক্ষাতে উদ্ধাব দিলা দরশন।
উদ্ধবরে দেখিয়া কৃষ্ণ জিজ্ঞাসে কুশল
কুশলে নি আছইন আমার রমণীসকল।
কার্তিক মাসের দিনে উদ্ধাব আইল দেশে
কান্দিয়া কান্দিয়া রাধা উদ্ধাবরে জিজ্ঞাসে।
কহ কহ আরো উদ্ধাব কহ রে কুশল
কুশলেনি আছইন আমার শ্ৰীমধুসুধন।
অঘ্রাণ মাস হইল শেষ পৌষের তিন দিন
এবো তো না ঠাকুর কৃষ্ণের দেশে আইবার চিন
মাঘ মাসের দিন ভীম একাদশী
স্নান করিতে চলিলা রাধা তীৰ্থ বারাণসী।
সোনা না হয় রূপা না হয় অমূল্য রতন
সধবা থাকিতে রাধার বিধবা লক্ষণ।
ফাল্গুন মাসের দিন দোল পুর্ণমাসী
আসিলা ঠাকুর কৃষ্ণ আবিরের বৃষ্টি।
ভাবিয়া বাধারমণ বলে শুন সখীগণ
রাধাকৃষ্ণের মিলন হইল রাসববৃন্দাবন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!