চুরাশী ক্রোশেতে ব্যাপ্ত শ্রীব্রজমন্ডল।
তাতে বৃন্দাবন ধাম অতি রম্যস্থল।।
ছয় ঋতুর সুবাসিত সুন্দর কুসুমে।
সুশোভিত সুরভিত নানা বিহঙ্গমে।।
কালিন্দী যমুনা স্পর্শে মৃদু সমীরণ।
প্রবাহিত হয়ে করে আনন্দ বর্দ্ধন।।
রোগ শোক মোহ জরা ক্ষয় মৃত্যু আদি।
সংসার জ্বালা যন্ত্রণা নাহি কোন ব্যাধি।
কল্প বৃক্ষমূলে মণি-মাণিক্য উজ্জ্বল।
ভূখণ্ড উপরি যোগপীঠ অষ্টদল।।
সেই পদ্ম মধ্যভাগে প্রাত:সূর্য্য সম।
প্রভাবশালী শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র থাকে অধিষ্ঠান।।
সচ্চিদানন্দময় এই অপ্রাকৃত ধামে।
গো গোপ গোপীসহ ক্রীড়াক্রমে।।
বৃন্দাবন ভিন্ন অন্য একাদশ বনে।
শ্রীকৃষ্ণ করেন লীলা সদা ভক্ত সনে।
ভদ্র, বিল্ব, ভান্ডারী, গোকুল ঝাউবন।
তাল, খদির, বহুলা, কুমুদ, কাম্য, মধুবন।।
বৃন্দাবন মধ্যে দুই ক্ষুদ্র বন রয়।
নিধুবন, কুঞ্জবন, আছে পরিচয়।
বৃন্দাবন হতে তিন ক্রোশ দক্ষিণেতে।
শ্রীমথুরা ধাম তথ্য আছে বিরাজিতে।।
পশ্চিমেতে নয় ক্রোশে রয় রাধাকুণ্ড।
রাধাকুণ্ড অগ্নিকোণে আছে শ্যামকুণ্ড।।
পশ্চিমের চৌদ্দ ক্রোশে নন্দীশ্বর গ্রামে।
শ্রীকৃষ্ণের পিতা নন্দ মহারাজ মোকাম।।
নন্দীশ্বর অর্দ্ধক্রোশ যাবট গ্রামেতে।
শ্রীমতীর শ্বশুরালয় স্বর্গ মন্দিরেতে।
নন্দীশ্বর দক্ষিণেতে দুই ক্রোশ দূর।
শ্রীরাধার পিতৃগৃহ বৃষভানুপুর।।
তার তিন ক্রোশ পূর্বে সূর্য্যাকুণ্ড হয়।
শ্রীরাধিকা সূর্য্যপূজা যথায় করয়।।
তার দুই ক্রোশ পূর্ব্বে রাধাকুণ্ড আছে।
নয় ক্রোশ বৃন্দাবন পূর্ব্বে বলা গেছে।।
রাধাকুণ্ড তীরে রম্য বন উপবন।
পূর্ব্ব তটে রাসস্থলী বিলাস ভবন।।
শ্রীকৃষ্ণের পাদপদ্ম হৃদে করি আশ।
বৃন্দাবন তত্ত্ব কহে শ্রীচরণ দাস।।