গুরুবীজ অঙ্কুর হবে কি
গুরুবীজ অঙ্কুর হবে কি মোর এ পাষাণে।
চাষ হোল কই?
পড়ল না মই,
পতিত রইল জমি মনের গুণে।।
মন-চাষা মোর বিষম কুড়ে,
ভুলে যায় না জমির ধারে,
কৃষাণ ছ’টা গোঁফ-খেজুরে
আ’লে বসে সদায় তামাক টানে।।
হিংসা-নিন্দা উলু-বেনা,
যত খুঁজি তার মূল মেলে না,
আসল জমি চোট নিলে না,
ফেরে প’লাম এবার জমি না চিনে।।
উঁচু জমি জল টেকে না,
নীচু হ’লে ফলত সোনা,
নদীর বেগে নটা-হানা,
ভেঙে গেল জমি তোড়-তুফানে।।
ভক্তিশূন্য মনানলে
গুরু-বীজ ঐ যাচ্ছে জ্ব’লে,
ভক্তি-বারি সিঞ্চন করিলে
বেড়ে যেত লতা দিনে দিনে।।
এক জমি, তার তিন শরিকদার,
কোন্ সীমানায় কার অধিকার,
ভবা বলে জানব এবার,
জানায় যদি গুরু নিজগুণে।।
……………………
অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ‘বাংলার বাউল ও বাউল গান’ গ্রন্থ থেকে এই পদটি সংগৃহিত। ১৩৬৪ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত এই গ্রন্থের বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। লেখকের এই অস্বাধারণ সংগ্রহের জন্য তার প্রতি ভবঘুরেকথা.কম-এর অশেষ কৃতজ্ঞতা।
এই পদটি সংগ্রহ সম্পর্কে অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয় লিখেছেন- কর্তাভজা সম্প্রদায়ের প্রচারক দুলালচাঁদ ওরফে লালশশী রচিত ‘ভাবের গীত’ নামক পুস্তক হইতে নমুনার জন্য উপরের গানটি এখানে উদ্ধুত করা গেল। এগুলি ঠিক গান নহে, দীর্ঘ কবিতা; অনেকক্ষেত্রে অবান্তর উল্লেখবহুল এবং আসল কথাটি ঢাকিতে গিয়া নানা দুর্বোধ্যতার সৃষ্টি করা হইয়াছে।
লাল শশী কে এরূপ ভণিতাই বা কেন হইল? এরূপ বোধ হয় দু-একটি পাঠক মহাশয়ের মনে উদিত হইতে পারে। কর্তা-ভজন-ধর্ম-প্রচারক স্বর্গীয় রামদুলাল যিনি দুলালচাঁদ বা শ্রীযুত বলিয়া খ্যাত, তাঁহারই রচিত। লালশশী তাঁহার নামের অপভ্রংশমাত্র। (দু) লাল+চাঁদ=শশী।
…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন-
voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….