সহজ ভজন কঠিন করণ
সহজ ভজন কঠিন করণ যে পারে এই সহজের ঘরে।
সহজ ভজন না যায় লিখন আছে বেদবিধি পরে।।
বেদবিধি-পার, সৃষ্টিছাড়া, সহজের করণ নিহারা।
হ’তে হয় জীয়ন্তে মরা, আগুন-পারা সে ধরে।।
অগ্নিস্পর্শ হইলে ঘৃত যদি নাহি গলে।
(তখন) রূপ-রতি-রস উজান চলে, বত্রিশ কোঠার উপরে।।
বত্রিশ কোঠার তালা আঁটা, তার উপরে মণি-কোঠা।
রূপ-রসেতে চাবি-আঁটা, সদর-খিড়কি দুইধারে।।
সদর-খিড়কি এই দুই দ্বারে রূপ-রতি-রস বসত করে।
দেখতে হবে নিহার ধ’রে সেথায় রসরাজ বিরাজ করে।।
রসরাজরূপ রসের স্বরূপ, মহাভাবে মিলে হয় এক রূপ।
সাকার বিন্দু নিরাকার রূপ অধর-ধরা যে ধরে।।
সহজে আসে সহজে যায়, এই কথাটি সকলে কয়।
না হইলে সহজের প্রায় যেতে হয় ধামান্তরে।।
আরেক সহজ বিন্দু আছে, সে বিন্দু নায়কের কাছে।
পুরুষ-নারী লবে বেছে, সমর্থার গুণ যে ধরে।।
আরেক সহজ বিন্দু মিলে অধ:-ঊর্ধ্ব দু’দিক চলে।
শ্রীঅঙ্গে ভাণ্ডার হইলে বিন্দু বিন্দু দান করে।।
অদ্বৈত সহজ উপায়, যত উপায় তত অধ্যায়।
সিন্ধু কভু নাহি শুকায়, বেঙাটুনি পান করে।।
শ্রীকৃষ্ণ বিলাসের সিন্ধু, কল্লোলের এক বিন্দু।
রাধা পেলেন পূর্ণবিন্দু, গোপীগণে বিন্দু বিন্দু।
পান করে যত ভক্তবৃন্দ কামবিন্দু জগৎ-সংসারে।।
যাদুবিন্দু বলছেন স্পষ্ট, যার যে ভাব সেই সে শ্রেষ্ঠ।
নৈষ্ঠিক হইলে পরে তথা-বস্তু বিচার করে।।
……………………
অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ‘বাংলার বাউল ও বাউল গান’ গ্রন্থ থেকে এই পদটি সংগৃহিত। ১৩৬৪ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত এই গ্রন্থের বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। লেখকের এই অস্বাধারণ সংগ্রহের জন্য তার প্রতি ভবঘুরেকথা.কম-এর অশেষ কৃতজ্ঞতা।
এই পদটি সংগ্রহ সম্পর্কে অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয় লিখেছেন- এই পদটি সংগ্রহ সম্পর্কে অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয় লিখেছেন- কেঁদুলীর মেলায় বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, মানভূম, মূর্শিদাবাদ, বীরভূম, বর্ধমান প্রভৃতি জেলা হইতে সমাগত বাউলদের নিকট হইতে বিশেষভাব গৃহীত বাউল গান।
…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন-
voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….