শ্রীরামকৃষ্ণের একচিন্তা ও এককথা, ঈশ্বর – “সা চাতুরী চাতুরী”
দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে রতন প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে
শ্রীরামকৃষ্ণ ৺কালীবাড়ির সেই পূর্বপরিচিত ঘরে ছোট খাটটিতে বসিয়া আছেন, সহাস্যবদন। ভক্তদের সহিত কথা কহিতেছেন। তাঁহার আহার হইয়া গিয়াছে। বেলা ১টা-২টা হইবে।
আজ রবিবার। ৯ই সেপ্টেম্বর, ১৮৮২ খ্রীষ্টাব্দ। ভাদ্র শুক্লা সপ্তমী। ঘরের মেঝেতে রাখাল, মাস্টার, রতন বসিয়া আছেন। শ্রীযুক্ত রামলাল, শ্রীযুক্ত রাম চাটুজ্যে, শ্রীযুক্ত হাজরা মাঝে মাঝে আসিতেছেন ও বসিতেছেন। রতন শ্রীযুক্ত যদু মল্লিকের বাগানের তত্ত্বাবধান করেন। ঠাকুরকে ভক্তি করেন ও মাঝে মাঝে আসিয়া দর্শন করেন। ঠাকুর তাঁহার সহিত কথা কহিতেছেন। রতন বলিতেছেন, যদু মল্লিকের কলিকাতার বাড়িতে নীলকণ্ঠের যাত্রা হবে।
রতন – আপনার যেতে হবে। তাঁরা বলে পাঠিয়েছেন, অমুক দিনে যাত্রা হবে।
শ্রীরামকৃষ্ণ – তা বেশ, আমার যাবার ইচ্ছা আছে। আহা! নীলকণ্ঠের কি ভক্তির সহিত গান!
একজন ভক্ত – আজ্ঞা হাঁ।
শ্রীরামকৃষ্ণ – গান গাইতে গাইতে সে চক্ষের জলে ভেসে যায়। (রতনের প্রতি) – মনে কচ্ছি রাত্রে রয়ে যাব।
রতন – তা বেশ তো।
রাম চাটুজ্যে প্রভৃতি অনেকে খড়ম চুরির কথা জিজ্ঞাসা করিলেন।
রতন – যদুবাবুর বাড়ির ঠাকুরের সোনার খড়ম চুরি হয়েছে। তার জন্য বাড়িতে হুলস্থূল পড়ে গেছে। থালা চালা হবে, সব্বাই বসে থাকবে, যে নিয়েছে তারদিকে থালা চলে যাবে।
শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) – কিরকম থালা চলে? আপনি চলে?
রতন – না, হাত চাপা থাকে।
ভক্ত – কি একটা হাতের কৌশল আছে – হাতের চাতুরী আছে।
শ্রীরামকৃষ্ণ – যে চাতুরীতে ভগবানকে পাওয়া যায়, সেই চাতুরীই চাতুরী। “সা চাতুরী চাতুরী!”
-১৮৮৩, ৯ই সেপ্টম্বর-
………………..
রামকৃষ্ণ কথামৃত : চর্তুদশ অধ্যায় : বিংশ পরিচ্ছেদ
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….