আছে মানুষ মানুষেতে
আছে মানুষ মানুষেতে,
যে পারে মানুষ দেখিতে চিনিতে।
মান-হুঁশ হ’য়ে মানুষ ল’য়ে
ফিরছেন সদাই তিনি হুঁশেতে।।
মানুষই চোর, মানুষেতে মানুষ মিলে-
মানুষেতে কই তা বলে!
মানুষেতেই মানুষ খেলে
মানুষকে ছলিতে।।
মানুষেতে মানুষ আছে,
মানুষ নাচায়, মানুষই নাচে;
মানুষ যায় মানুষের কাছে
মানুষ হইতে।।
মানুষ বাঁকা, মানুষ সোজা;
মানুষ ভূত, আর মানুষ ওঝা,
মানুষ রাজা, মানুষ প্রজা,
মানুষকে পূজিতে।।
মানুষ ধার্মিক, মানুষই দস্যু,
মানুষই মানুষের পোষ্য,
মানুষ গুরু, মানুষই শিষ্য,
দৃশ্য হয় সূক্ষ্মেতে।।
মানুষ ইতর, মানুষই ভদ্র,
মানুষ নরক, আর মানুষই শুদ্ধ,
মানুষ মুক্ত, আর মানুষই বদ্ধ,
মানুষের মায়াতে।।
মানুষ চণ্ডাল,
মানুষই দয়াল,
কেউ মনিব, কেউ মুনিষ-বাগাল,
মানুষ হ’য়ে নন্দের দুলাল
এসেছেন এ নদীয়াতে।।
মানুষ পিতা, মানুষ মাতা,
মানুষ ভগ্নী, মানুষ ভ্রাতা,
পুত্র-মিত্র-দারা-সুত
গাঁথা প্রেম-সূত্রেতে।।
নারায়ণ মানুষ রূপ ধ’রে
নর-নারায়ণ হন দ্বাপরে,
যুগে যুগে অবতহার তিনি
এই মানুষ-রূপেতে।।
মানুষ্ মানুষকে মারে,
মানুষে মানুষকে ধরে,
মানুষে মানুষকে সারে
সারে-অসারেতে।।
মানুষ ডোবে, মানুষ ভাসে,
মানুষ কাঁদে, মানুষ হাসে,
মানুষ যায়, মানুষ আসে
কেবল কর্ম প্রকাশিতে।।
যদি মানুষ হ’তে খোঁজ,
তবে মানুষ, মানুষ ভজ;
ক্ষ্যাপা নিত্য বলে নিত্য পূজ,
এই মানুষের চরণেতে।।
……………………
অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ‘বাংলার বাউল ও বাউল গান’ গ্রন্থ থেকে এই পদটি সংগৃহিত। ১৩৬৪ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত এই গ্রন্থের বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। লেখকের এই অস্বাধারণ সংগ্রহের জন্য তার প্রতি ভবঘুরেকথা.কম-এর অশেষ কৃতজ্ঞতা।
এই পদটি সংগ্রহ সম্পর্কে অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয় লিখেছেন- এই পদটি সংগ্রহ সম্পর্কে অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয় লিখেছেন- বর্ধমান জেলার বেতালবন গ্রামের বাউল সমাবেশ হইতে বিশেষভাবে সংগৃহিত-
…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন-
voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….