অনুরাগ বিহনে সে মানুষ না যায় ধরা
অনুরাগ বিহনে সে মানুষ না যায় ধরা।
দেখ সাধ্যসাধন, কৃষ্ণভজন, করেছে রসিক যারা।।
যে জন অনুরাগী হয়, রাগে ডুবে রয়।
রাগ ধরে সে রাগী জনা, রাগের কথা কয়।
মনের অনুরাগে ফেরে সদা ঠিক রেখে নয়ন-তারা।।
অনুরাগে যুত ক’ষে রয়েছে বসে,
আজবলীলা দেখতে পায় সে এক ঠাঁই বসে।
যত কাম-কামনা দূর করিয়ে হয় যেন জ্যান্তে মরা।।
ও সে অধরের গোরা, যোগে যায় ধরা।
যোগ ফুরালে নিত্য মানুষ হবি রে হারা।
ও সে যোগের ঘাটে থাকলে বসে, তবে হয় করম সারা।।
গোঁসাই মদন কয় হেসে, কঠিন কথা সে,
অধর ধরা জ্যান্তে মরা হ’তে হয় শেষে।
ওর চণ্ডী ভেড়ো, করগে দৃঢ়, স্বরূপে বিশ্বাস করা।।
……………………
অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ‘বাংলার বাউল ও বাউল গান’ গ্রন্থ থেকে এই পদটি সংগৃহিত। ১৩৬৪ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত এই গ্রন্থের বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। লেখকের এই অস্বাধারণ সংগ্রহের জন্য তার প্রতি ভবঘুরেকথা.কম-এর অশেষ কৃতজ্ঞতা।
এই পদটি সংগ্রহ সম্পর্কে অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয় লিখেছেন- চণ্ডীদাস গোঁসাই নবদ্বীপের বনচারী বাগানের চণ্ডীদাস-রজকিনী আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা। যশোহর জেলার কামারহাটি গ্রামে তাঁহার আদিনিবাস ছিল। তিনি ছিলেন জাতিতে নম:শূদ্র (কাপালি)।
নবদ্বীপে তিনি ৪০ বৎসর বাস করিয়াছিলেন। ১৩৪১ সালে তিনি দেহত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁহার বয়স নাকি ১৫১ বৎসর হইয়াছিল।
চণ্ডীদাসের শিষ্য ৯৭ বৎসর-বয়স্ক নবদ্বীপবাসী সনাতন দাস আমাকে চণ্ডীদাস গোঁসাই-এর অনেকগুলি গান ও তাঁহার নিজের রচিত কতকগুলি গান দিয়াছেন এবং নবদ্বীপে তাঁহার বাড়ীতে আমাকে বিশেষ আদরের সহিত অভ্যর্থনা করিয়া সপ্তাহব্যাপী বাউল মতবাদ ও সাধনা সম্বন্ধে অনেক গূঢ় তথ্যের আলোচনা করিয়াছেন। তাঁহার নিকট আমার কৃতজ্ঞতা ভাষায় প্রকাশের যোগ্য নয়।
…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন-
voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….