গোল তো ঘোচে না
শুধু পাগল হ’লে গোল তো ঘোচে না।
পাগল সে যে ভবের মাঝে করতেছে আনাগোনা।।
ভবে পাগল হয় যারা,
বুঝে সকল পাগলের গোল
জীয়ন্তে মরা,
তাদের নাই কোন ভয়, সরল হৃদয়,
অন্তরে কালো সোনা।।
রিপু ইন্দ্রিয়গণ, বড় দুষ্ট এই কয় জন,
সর্বদা সঙ্গেতে ফেরে করে জ্বালাতন,
এদের দমন ক’রে রাখে যে জন,
ভবে পাগল সেই জনা।।
যারা প্রকৃত পাগল,
তাদের বোঝা যায় না বোল,
সেই মানুষ ধ’রে তাদের নয়ন-যুগল
হেরে যুগল,
তারা যুগল প্রেমে মগনা।।
গোপী-ভাব করি’ অঙ্গীকার
রাত্রিদিন চিন্তে রাধাকৃষ্ণের বিহার,
তাদের কোথায় নিদ্রা কোথায় আহার,
স্বসুখ-বিহার জানে না।।
প্রেমানন্দে তারা কৃষ্ণ-সেবাতে
সদা নিযুক্ত থাকে নিষ্ঠা মনেতে,
তারা কোটি সুখ পায় স্ব-সুখ হ’তে
অসুখ কেমন জানে না।।
গোঁসাই হরিচাঁদ রটে, কথা সত্য বটে,
শ্রীদাম তোর কি যেতে মানা সতের নিকটে,
(ও তুই) আজন্ম রইলি ছটফটে
তোর লম্পট-স্বভাব গেল না।।
……………………
অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ‘বাংলার বাউল ও বাউল গান’ গ্রন্থ থেকে এই পদটি সংগৃহিত। ১৩৬৪ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত এই গ্রন্থের বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। লেখকের এই অস্বাধারণ সংগ্রহের জন্য তার প্রতি ভবঘুরেকথা.কম-এর অশেষ কৃতজ্ঞতা।
এই পদটি সংগ্রহ সম্পর্কে অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয় লিখেছেন- কর্তাভজা সম্প্রদায়ের প্রচারক দুলালচাঁদ ওরফে লালশশী রচিত ‘ভাবের গীত’ নামক পুস্তক হইতে নমুনার জন্য উপরের গানটি এখানে উদ্ধুত করা গেল। এগুলি ঠিক গান নহে, দীর্ঘ কবিতা; অনেকক্ষেত্রে অবান্তর উল্লেখবহুল এবং আসল কথাটি ঢাকিতে গিয়া নানা দুর্বোধ্যতার সৃষ্টি করা হইয়াছে।
লাল শশী কে এরূপ ভণিতাই বা কেন হইল? এরূপ বোধ হয় দু-একটি পাঠক মহাশয়ের মনে উদিত হইতে পারে। কর্তা-ভজন-ধর্ম-প্রচারক স্বর্গীয় রামদুলাল যিনি দুলালচাঁদ বা শ্রীযুত বলিয়া খ্যাত, তাঁহারই রচিত। লালশশী তাঁহার নামের অপভ্রংশমাত্র। (দু) লাল+চাঁদ=শশী।
…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন-
voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….