কেউ সহজ মানুষ চিনতে পারে না
কেউ সহজ মানুষ চিনতে পারে না।
লোক পার হয় নিমিষে, যায় সহজের দেশে,
অনা’সে দেখতে পায় সে কারখানা,
যা দেখতে এক্ষণেতে করছ বাসনা।।
ফিরে যে মুলুকে সহজ লোকে
বানিয়েছে কুঠি,
হাজারি হয় সবাকরি সাড়ে ছয়,
তেত্রিশ কোটি
গেলে মিলবে দেখা তার কি লেখা,
কেউ খামকা ফেরে না।।
কোন লোক-জবানি কোন ধনীর
শুনে সংবাদ,
এক্ষণে তাই ক্ষণে ক্ষণে
দর্শনের হচ্ছে মনে সাধ।।
সেই সহজ দেশে সহজ এসে
করতেছে কারবার;
সেই যে সহজের দেশে বাস করিতে
ইচ্ছা হয় তোমার।
আমি পার করিব, পৌঁছে দিব,
বাতলাব ঠায়-ঠিকানা।।
এসে করলে বিধি তদবিধি
সৃষ্টি-স্থিতি-পালন,
সেই অবধি বিধি-কৃত বিধি
ভব জলধির চলন।
এই যে স্বর্গ-মর্ত্য, পাতাল ইস্তক
চোদ্দ ভুবন;
তাই ফলবে ফল, দেখতে পাবে
কালেতে যা করবে রোপণ।
যারা কৃষি ক’রে ভরসা করে
ধরণী ধরিয়ে,
ফলবে আলবৎতা কালে তাই ভেবে
দেবতারে ধিয়ে।
তাই এই মুলুকে সহজ লোকে
করতেছে দেনা-পাওনা।।
বড় মেঘ করেছে, আকাশে হচ্ছে
আঁধিয়ারি,
দেখছি কটা মস্ত মস্ত ফোঁটা,
জলটা হবে ভারি।
লোকের চেষ্টা ছিল, বৃষ্টি হ’ল,
ঘুচল সংশয়;
ধার যোগায় আর ব্রহ্মডাঙ্গার,
তার ডগায় প্রেম-তরঙ্গ বয়।
যত তল তলাতল, আসমানী কল,
জল যোগাবার মূল;
মানুষের আদেশে রসে সহজে
ভাসতেছে তিনকূল।
দেশে রস যোগাতে মানুষ এসে
করতেছে আনাগোনা।
লালশশী রচে, মানুষ এসে
করতেছে আনাগোনা।।
……………………
অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ‘বাংলার বাউল ও বাউল গান’ গ্রন্থ থেকে এই পদটি সংগৃহিত। ১৩৬৪ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত এই গ্রন্থের বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। লেখকের এই অস্বাধারণ সংগ্রহের জন্য তার প্রতি ভবঘুরেকথা.কম-এর অশেষ কৃতজ্ঞতা।
এই পদটি সংগ্রহ সম্পর্কে অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয় লিখেছেন- এই পর্যায়ের গানগুলি বীরভূম, বাঁকুড়া, মোদিনীপুর, বর্ধমান, নদীয়া, চব্বিশ পরগণা যশোহর, ফরিদপুর, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি জেলার নানা স্থান হইতে বিভিন্ন সময়ে সংগৃহীত এবং এই মতবাদের সাধিকা নবদ্বীপের শ্রীমতী অমিয়বালা দাসীর গানের সংগ্রহ খাতা ও ঘোষপাড়ার নিকটবর্তী মদনপুরের ফকির আকবর শাহের সংগীত সংগ্রহ খাতা হইতে গৃহীত।
…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন-
voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….