কৃষ্ণ অনুরাগের বাগানে
মন, চল যাই ভ্রমণে কৃষ্ণ অনুরাগের বাগানে,
সেথা গেলে প্রাণ জুড়াবে
মন্দ মন্দ আনন্দ-সমীরণে।।
সেই বাগানে নিত্য ফোটে পাঁচ রকমের ফুল,
তার সৌরভে প্রাণ মুগ্ধ করে
গৌরবে অতুল,
ও সে প্রাণ-মন ব্যাকুল করে রে
অর্পূব তার সুঘ্রাণে।।
সেই বাগানে আছে দু’জনা মালী,
তাদের একজন উড়ে, একজন বাঙালী,
তারা বাগান চষে, খুঁড়ে, নাড়ে চাড়ে,
গাছ বাড়ে তাদের যতনে।।
সেই বাগানে আছে চতুর্দিকে বেড়া,
আছে গাছ আসমানে খাড়া,
খুঁজে তার মেলেনা গোড়া,
কত দেব-দেবতা আছে খাড়া
প্রবেশ করবার সন্ধানে।।
বাগানের মধ্যে সরসী,
তার সুধাতুল্য জলরাশি,
সেই স্বচ্ছ জলে, সদা খেলে
হংস আর হংসী,
ওরে কোটি জন্মের পিপাসা যায়
তার একবিন্দু জল-পানে।।
সেই বাগানে ফলে মেওয়া ফল,
তার কাছে তুচ্ছ চারি ফল,
সে ফল যে খেয়েছে, সেই মজেছে
হয়েছে পাগল।
তার জন্ম সফল, কর্ম সফল,
ফলের সন্ধান সেই জানে।।
গোঁসাই তাই বলছেন অন্তরে,
শোন অনন্ত রে,
সেই বাগান আছে কোটি জন্মের অন্তরে,
সেথা যাবি যদি সকাম নদী
পার হবি বল কেমনে।।
…………………..
অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ‘বাংলার বাউল ও বাউল গান’ গ্রন্থ থেকে এই পদটি সংগৃহিত। ১৩৬৪ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত এই গ্রন্থের বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। লেখকের এই অস্বাধারণ সংগ্রহের জন্য তার প্রতি ভবঘুরেকথা.কম-এর অশেষ কৃতজ্ঞতা।
এই পদটি সংগ্রহ সম্পর্কে অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয় লিখেছেন- অন্তরের (অনন্ত গোঁসাই) দীর্ঘ কয়েকটি গান বাংলার বাউল-মহলে বিশেষ পরিচত। অনন্ত কোথাকার লোক, তাহা জানিতে পারি নাই। তবে রচনা-রীতি ও দীর্ঘ সাঙ্গরূপক ব্যবহার দৃষ্টে মনে হয়, ইনি খুব সম্ভব রাঢ়ের বাউল।
…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন-
voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….