মথুরামোহন চক্রবর্ত্তী ছিলেন ঢাকা প্রসিদ্ধ শক্তি ঔষাধলয়ের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি লোকনাথ বাবার অন্যতম প্রধান শিষ্য। বাল্যকালে এক দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হন।
পরে তিনি লোকমুখে শুনে বারদীতে বাবার কাছে আসেন- এইভাবে রোগমুক্তির জন্য ভবরোগের বৈদ্যের নিকট এসে উপস্থিত হলেন। অবশেষে অবিলম্বে তিনি রোগমুক্ত হন। সেই সঙ্গে বাবা লোকনাথের চরণে সমস্ত মন সমর্পণ করলেন তিনি চিরদিনের মত।
পরে তিনি দীক্ষাগ্রহণ করেন লোকনাথ বাবার কাছে। তাঁর গুরুভক্তিতে প্রসন্ন হয়ে বাবা তাঁকে কর্মযোগের নির্দেশ দেন ; সংসারে থেকে নিষ্কামভঅবে কর্ম করে যাওয়াই মুক্তির উপায়।
গুরুর কৃপায় ব্যবসায় প্রচুর উন্নতি হতে থাকে মথুরামোহনের। অল্পকালের মধ্যে শক্তি ঔষধালয়ের খ্যাতি সারা বাংলার সর্বত্র ছড়িয়ে পরে। কিন্তু ব্যবসার উন্নতি কোন মোহ সৃষ্টি করতে পারেনি তাঁর মনে। তিনি নিষ্ঠা ও ভক্তির সঙ্গে তাঁর বাবা লোকনাথের পূজা ও নিত্যসেবা করে যেতে থাকেন।
ঢাকার দয়াগঞ্জের শক্তি ঔষধালয়ের মধ্যে একটি মন্দির নির্মাণ করেন মথূরামোহন। সেই মন্দিরের মধ্যে বাবা লোকনাথের মূর্তি বিগ্রহরূপে প্রতিষ্ঠা করেন। সেই মন্দিরটি আজও ঢাকা লোকনাথ ব্রহ্মচার্যাশ্রম নামে খ্যাত হয়ে আছে।
ব্রহ্মচারী বাবার দেহত্যাগের পর এক অলৌকিক ঘটনা ঘটে মথুমোহনের জীবনে। একবার তিনি বিশ্বনাথ দর্শনের জন্য কাশীধামে যান ; সেখানে গিয়ে এই মহাতীর্থে বাবা লোকনাথকে দর্শন করার ইচ্ছা জাগে তাঁর মনে, কিন্তু এখন তা সম্ভব নয় বলে সে ইচ্ছা মনের মধ্যে চেপে রাখলেন তিনি।
সেখানে তিনি একটি বাড়ি কেনার সময় দু-তিনটি বাড়ির মধ্যে কোনটি কিনবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পরলেন। এমন সময় একদিন একদিন সহসা মথুমোহনের সামনে আকাশ পথে আবির্ভূত হলেন বাবা। তারপর একটি বাড়ির দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে বললেন- আচ্ছা হ্যায়।
একদিন সন্ধ্যার সময় বিশ্বনাথের সন্ধ্যারতি দেখবার জন্য মন্দিরে গেলেন মথুমোহন।কিন্তু প্রবেশদ্বারে অত্যধিক ভিড় থাকায় ঢুকতে পারলেন না। তাই বাইরের করজোড়ে দাঁড়িয়ে রইলেন।
এমন সময় সহসা অনুভব করলেন, কে যেন তাঁর হাত ধরে টানছে। সঙ্গে সঙ্গে তাকিয়ে দেখলেন- বাবা লোকনাথ। এই আকস্মিক ঘটনায় বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গেলেন মথুমোহন।
বিস্ময়ের ঘোর কাটার পর দেখলেন, বাবা লোকনাথ তাঁর হাত ধরে তাঁকে মন্দিরের ভিতর নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে দেখে এত ভিড়ের মধ্যেও দু’পাশের লোক পথ ছেড়ে দিচ্ছে। বাবার দিব্যকান্তি দর্শন করে বিশ্বনাথ দর্শনের কথা ভুলে গেলেন। তিনি বিহ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন, আবেগে বিভোর হয়ে উঠলেন। অন্তর্যামী বাবা লোকনাথ এভাবে যে তাঁর মনের গোপন ইচ্ছাটিকে পূরণ করে দেবেন, তা তিনি কল্পনাও করতে পারে নি।
এদিকে আরতি শেষ হয়ে গেলে বাবাই আবার তাঁর হাত ধরে মন্দিরের বাইরে নিয়ে এলেন। বাবার চরণে প্রণত: হয়ে বাবার পদধুলি গ্রহণ করলেন মথুমোহন। তারপর বাড়ির দিকে অন্ধকার গলিতে পথ চলতে চলতে একসময় অদৃশ্য হয়ে গেলন বাবা লোকনাথ।
সেখানে তিনি একটি বাড়ি কেনার সময় দু-তিনটি বাড়ির মধ্যে কোনটি কিনবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পরলেন। এমন সময় একদিন একদিন সহসা মথুমোহনের সামনে আকাশ পথে আবির্ভূত হলেন বাবা। তারপর একটি বাড়ির দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে বললেন- আচ্ছা হ্যায়।
মথুমোহন এই নির্দেশের অর্থ বুঝতে পেরে সেই বাড়িটিই কিনলেন।
………………………
সূত্র:
শ্রীযামিনী কুমার দেবশর্ম্মা মুখোপাধ্যায়ের ধর্ম্মসার সংগ্রহ গ্রন্থ থেকে।
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
…………………
আরও পড়ুন-
লোকনাথ বাবার লীলা : এক
লোকনাথ বাবার লীলা : দুই
লোকনাথ বাবার লীলা : তিন
লোকনাথ বাবার লীলা : চার
লোকনাথ বাবার লীলা : পাঁচ
লোকনাথ বাবার লীলা : ছয়
লোকনাথ বাবার লীলা : সাত
লোকনাথ বাবার লীলা : আট
লোকনাথ বাবার লীলা : নয়
লোকনাথ বাবার লীলা : দশ
লোকনাথ বাবার লীলা : এগারো
লোকনাথ বাবার লীলা : বারো
লোকনাথ বাবার লীলা : তের
লোকনাথ বাবার লীলা : চৌদ্দ
লোকনাথ বাবার লীলা : পনের
লোকনাথ বাবার লীলা : ষোল
লোকনাথ বাবার লীলা : সতের
লোকনাথ বাবার লীলা : আঠার
লোকনাথ বাবার লীলা : উনিশ
লোকনাথ বাবার লীলা
……………..
আরও পড়ুন-
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : এক
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : দুই
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : তিন
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : চার
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : পাঁচ
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : উপসংহার