একদিন ভাওয়ালের রাজা রাজেন্দ্রনারায়ণ পাত্রমিত্র ও লোকজন নিয়ে হাতির পিঠে চড়ে বাবাকে দর্শন করার জন্য বারদীর আশ্রমে এলেন। গুরুদর্শন ও পাদ-বন্দনার পর প্রসাদ খেলেন রাজা। তারপর বিদায় নেবার জন্য বাবার কাছে অনুমতি চাইলেন, বললেন- বাবা, এবার আমাকে যাবার অনুমতি দিন; আমার বিশেষ কাজকর্ম আছে।
বাবা তখন বলে উঠলেন- না না, এখন যাসনি। যদি একান্ত যেতে হয়, কিছু পরে যাবি।
কিন্তু ভাওয়ালে ফিরে যাবার জন্য তখনি বাবাকে প্রণাম করে হাতির পিঠে চড়ে রওনা হলেন।
তখন আকাশ পরিষ্কার থাকলেও, রাজা কিছুদূর পথ যেতেই সহসা আকাশে কালো মেঘ দেখা দিল। দেখতে দেখতে সমস্ত আকাশ মেঘে ছেঁয়ে গিয়ে প্রবল ঝড়বৃষ্টি শুরু হলো, রাজা তখন বাধ্য হয়ে আশ্রমে ফিরে এলেন। এসে বাবাকে বললেন, ঝড়বৃষ্টির জন্য ফিরে এলাম, না থামলে যাবার উপায় নেই।
রাজা তখন নিশ্চিন্ত মনে সদলবলে যাত্রা করলেন। তিনি বুঝলেন, সর্বজ্ঞ বাবা শুধু মানুষের জগতের নয়, প্রকৃতি-জগতেরও সব কিছুই জানেন। প্রকৃতি জগতের কোনও রহস্যই তাঁর অজানা নেই; তাঁর দেহের মধ্যেই সব দেবতা আছেন। তিনিই পুরুষ এবং তিনিই প্রকৃতি।
কিছুক্ষণ পর ঝড়বৃষ্টি থামলে রাজা আবার রওনা হলেন। বাবা কিছু বললেন না, শুধু মনে মনে হাসলেন। কিন্তু এবারেও কিছুদূর যেতেই আবার ঝড়বৃষ্টি শুরু হলো; রাজা আবার ফিরে এলেন।
এবার রাজা নিজের ভুল বুঝতে পেরে বাবার চরণ ধরে ক্ষমা চাইলেন- বাবা, আপনার আদেশ অমান্য করে মহা অপরাধ করেছি। বুঝেছি, আপনার অনুমতি না নিয়ে আশ্রম থেকে চলে যাবার সাধ্য নেই আমার, আর আমি কখনো আপনার কথার অবাধ্য হব না, এখন কৃপা করে আমাকে যাবার অনুমতি দিন। বিশেষ কাজ আছে বলেই যেতে চাইছি ; আপনিই তো বলেছিলেন- কর্তব্য-কর্ম ঠিকমত পালন করতে হয়।
বাবা লোকনাথ বললেন- আমি তো তোকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলেছিলাম, কিন্তু তুই তো আমার কথা শুনলি না। যাই হোক, এবার তুই যা ; পথে আর কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।
রাজা তখন নিশ্চিন্ত মনে সদলবলে যাত্রা করলেন। তিনি বুঝলেন, সর্বজ্ঞ বাবা শুধু মানুষের জগতের নয়, প্রকৃতি-জগতেরও সব কিছুই জানেন। প্রকৃতি জগতের কোনও রহস্যই তাঁর অজানা নেই; তাঁর দেহের মধ্যেই সব দেবতা আছেন। তিনিই পুরুষ এবং তিনিই প্রকৃতি।
<<লোকনাথ বাবার লীলা : পাঁচ ।। লোকনাথ বাবার লীলা : সাত>>
………………………
সূত্র:
শ্রীযামিনী কুমার দেবশর্ম্মা মুখোপাধ্যায়ের ধর্ম্মসার সংগ্রহ গ্রন্থ থেকে।
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
…………………
আরও পড়ুন-
লোকনাথ বাবার লীলা : এক
লোকনাথ বাবার লীলা : দুই
লোকনাথ বাবার লীলা : তিন
লোকনাথ বাবার লীলা : চার
লোকনাথ বাবার লীলা : পাঁচ
লোকনাথ বাবার লীলা : ছয়
লোকনাথ বাবার লীলা : সাত
লোকনাথ বাবার লীলা : আট
লোকনাথ বাবার লীলা : নয়
লোকনাথ বাবার লীলা : দশ
লোকনাথ বাবার লীলা : এগারো
লোকনাথ বাবার লীলা : বারো
লোকনাথ বাবার লীলা : তের
লোকনাথ বাবার লীলা : চৌদ্দ
লোকনাথ বাবার লীলা : পনের
লোকনাথ বাবার লীলা : ষোল
লোকনাথ বাবার লীলা : সতের
লোকনাথ বাবার লীলা : আঠার
লোকনাথ বাবার লীলা : উনিশ
লোকনাথ বাবার লীলা
……………..
আরও পড়ুন-
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : এক
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : দুই
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : তিন
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : চার
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : পাঁচ
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : উপসংহার