ভবঘুরেকথা

(তাল-কাওয়ালী)
আমি গৃহবাসে আছি কিসে দয়াময়।
হয়েছি নিরাশ্রয় দয়াল যে হতে তোমার চন্দ্রস্য নয়নে করেছি দৃশ্য
আমার মনৌদাস্য সর্বস্ব ত্যাগ সে দিন হয়।

জ্বালায় সন্ন্যাসীরা অগ্নি-ধুনী গাছ তলায়
দয়াল সে অগ্নি আর কিসের অগ্নি, মোর দেহে তোর বিচ্ছেদ অগ্নি
দিন রজনী দহিছে আমার হৃদয়
শান্তি নাই তোর বিরহ গাছ তলায়,
হল দশ ইন্দ্রিয় তোর রূপের বশ্য, তাইতে করি তোর উদ্দেশ্য,
কায়া কৃশ ভাবের ভস্ম মাখা গায়।

জানি সন্ন্যাসীরা অন্নত্যাগী ভক্ষে ফল
আমি চারি বর্গ আমান্ন ত্যজি, নামামৃত ফলভোজী
সেই ফলের কাছে ক্ষেতে আছে কার এক ফল,
শ্রীগুরুর মুখ পদ্মবীজ ফল,
আমার মন লাগে না ভোগে যোগে, তোর ভাবনা ভাব উদ্বেগে
যোগ নিদ্রা বিমাতা ত্যজছে আমায়।

আমার ইচ্ছা লজ্জা ছিল দুটি রমণী,
তাতে নিছনী বিপত্নী ধনী, বিবাদ করে তিন সতিনী,
তাদের লইয়া গেছে নিবৃত্তি ভগ্নি,
ছিল যে মহামায়া জননী,
ও তার বিবেক বিবর্তে পুত্র, তাইতে হই মার ত্যজ্য পুত্র,
জ্ঞান নামে এক পুত্র সেদিন মৃত্যু হয়।

ছিল ঘরে পুণ্য তার সুবৃতিদ্বয়
তাদের সুখালঙ্কার কুলাম্বরে, সাধন ভজন মুকুট শিরে,
দাসী করে দিলাম ভক্তি কন্যার পায়,
কন্যাটি নিল তনুরাগাশ্রয়,
তোর বিশুদ্ধ প্রেম নবরসে, তাতে সকল গেছে ভেসে,
আছি একা বসে তথাচ না তোরে পাওয়া যায়।

সেই রসেতে মত্ত মাতাল গোলকচাঁদ,
যোগী সন্ন্যাসী ন্যাসী ফকিরী, পরমহংস ব্রহ্মচারী,
সে রসে নয় অধিকারী এমনি পদ,
সে রসে পাগল মহানন্দচাঁদ,
বীর করুণ রসে হীরামন ধায়, মৃত্যুঞ্জয় কর ও রসময়
এবার নিরাশ্রয় তারকে দিও পদাশ্রয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!