রামকান্ত বৈরাগীর মানবলীলা সম্বরণ
পয়ার
কত দূরে গিয়া রামকান্ত কয়।
টানিতে নারিব রথ তোরা চ’লে আয়।।
বলিতে বলিতে ঘড় ঘড় শব্দ হয়।
কেহ না টানিল রথ বেগে চলে যায়।।
আশ্চর্য্য মানিয়া সবে দৃঢ়ভক্তি হ’য়ে।
এক দৃষ্টে রথপানে সবে রৈল চেয়ে।।
লোকভিড় নিকটে না সবে যেতে পারে।
কেহ কেহ দূরে থেকে রথ দৃষ্টি করে।।
কোন কোন ভাগ্যবান করে দরশন।
জগন্নাথ বাসুদেব যুগল মিলন।।
ঘড় ঘড় শব্দে রথখানা চলে এল।
রামকান্ত পথ মাঝে বসিয়া রহিল।।
কেহ বলে উঠ উঠ উঠ হে বৈরাগী।
এখানে বসিলে কেন মরিবার লাগি।।
অষ্টাঙ্গ লোটায়ে সাধু করে দন্ডবৎ।
রামকান্ত উপরে উঠল গিয়া রথ।।
পৃষ্ঠোপরে রথখানা উঠিল যখন।
উঠে এক জ্যোতি প্রাতঃ সূর্য্যের মতন।।
দেখিয়া সকল লোকে লাগে চমৎকার।
রথ নীচ হ’তে যেন উঠে দিবাকর।।
বিদ্যুতের ন্যায় তেজ রথোপরে গেল।
জগন্নাথ বাসুদেবের অঙ্গেতে মিশিল।।
পূর্ব্ব মুখ রথখান হইল সুস্থির।
পথে পড়ে রইল রামকান্তের শরীর।।
সকলে দেখিল গেছে ব্রহ্মরন্ধ্র ফাটি।
রামকান্তের মৃতদেহে হ’ল পুষ্পবৃষ্টি।।
রামকান্ত লীলা সাঙ্গ হরিবল ভাই।
শ্রবণে গোলোকে বাস কাল ভয় নাই।।
জগন্নাথ রথ হ’তে হ’ল অর্ন্তধান।
বাসুদেবে ল’য়ে দ্বিজগণ গৃহে যান।।
ভূবন পবিত্র হেতু রামকান্ত এল।
এই রামকান্ত বরে হরি জনমিল।।
রামকান্ত ভক্ত সব একত্র হইল।
ঘৃতাগ্নি সংযুক্ত করি সৎকার করিল।।
রামকান্ত মহাসাধু রসিক সমাজ।
কান্তলীলা রচিল তারক রসরাজ।।