ভবঘুরেকথা

জন্ম কথা
গঙ্গাচর্ণা বাস করে রাজচন্দ্র নাম।
পোদ্দার বংশেতে জন্ম অতি গুণধাম।।
সরল স্বভাব নিয়া করিত বসত।
তার হল তিন পুত্র সকলেই সৎ।।
জ্যেষ্ঠ পুত্র ছিল তার শ্রীকার্তিক নাম।
মধ্যম গনেশ চন্দ্র কনিষ্ঠ শ্রীদাম।।
কার্তিকের সদা ছিল বৈষ্ণব আচার।
বৈরাগী উপাধী পরে হইল তাহার।।
মাসে মাসে করাইত বৈজ্ঞব ভোজন।
তার বাড়ী আসে কত সাধু মহাজন।।
হরিচান্দ ঠাকুরের মতুয়ার দল।
সেই গ্রামে আসে কত বলে হরি বল।।
একদিন শ্রীগোলোক আসিল তথায়।
মতুয়ার গণ লয়ে হরি গুণ গায়।।
পাগলের ভাব দেখে কার্তিক বৈরাগী।
পাগলের পদে পড়ে হল অনুরাগী।।
সেই হতে গুরু বলে করিল স্বীকার।
মন প্রাণ সপে দিয়ে হল নির্বিকার।।
রাই চরণ অক্রুর মদন মোহন।
গোস্বামী চরণে করে আত্ম সমর্পন।।
গঙ্গাচর্ণা গ্রামবাসী করে কত লোক।
পাগলেরে পেয়ে সবে হইল পুলক।।
সেই হতে গোস্বামীজী করে যাতায়াত।
ভক্তবৃন্দ থাকে কত পাগলের সাত।।
কার্তিক বৈরাগী যবে বিবাহ করিল।
ক্রমে ক্রমে নয় বর্ষ গত হয়ে গেল।।
অম্বিকা নামেতে হয় কার্তিকের নারী।
পুত্র কন্যা না জন্মিল মনে দুঃখ ভারী।।
পাগলেরে কাছে সবে জানাইয়া তাই।
কোন কিছু বলে নাক পাগল গোঁসাই।।
একদিন দৈব যোগে কার্তিকের ঘরে।
মতুয়ারগণ লয়ে হরি নাম করে।।
মহাভাব উথলিল প্রেমের তরঙ্গ।
কান্দিতে কান্দিতে সেই কার্তিকের নারী।।
পাগলের পদে পড়ে যায় গড়াগড়ি।
অমনি পাগল চন্দ্র ধরিয়া তুলিল।
মা মা বলিয়া পাগল ডাকতে লাগিল।।
মা মা বলিয়া পাগল স্তন পান করে।
বলে মাগো ছেলে হবে তোমার উদরে।।
হরিভক্ত হবে সে যে বলিলাম বাণী।
নাম করণেতে নাম রাখিস অশ্বিনী।।
পাগলের বরে মাতা গর্ভিণী হইল।
দশ মাস দশ দিনে প্রসব করিল।।
বার শত চুরাআশি সালে বুধবার।
কার্তিক মাসেতে জন্ম হইল তাহার।।
ব্রহ্ম মুহুর্তের কালে পূর্ণিমা যে তিথি।
পুত্র কোলে পেয়ে মাতা আনন্দিত অতি।।
আশে পাশে যত লোক শুনিতে পাইল।
হরি বলে সবে মিলে দেখিতে আসিল।।
উলুধ্বনি জয়ধ্বনি করে সবে মিলে।
দেশবাসী সকলেই হরি হরি বলে।।
অশ্বিনীর জন্ম ক্ষণ হেন জ্ঞান হয়।
আকাশে বাতাসে যেন হরিগুণ গায়।।
অশ্বিনীর জন্ম কথা শুনে যেই জন।
ভক্তির উদয় হবে শুদ্ধ হবে মন।।
এদিন বিনোদ বলে পাচালীর ছন্দে।
হরিচান্দ ছবিখানি হৃদয়েতে বন্দে।।
তাই বলি ভাই সব আর কিবা চাও।
অশ্বিনীর প্রীতে সবে হরিগুণ গাও।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!