-ফাহিম ফেরদৌস
জয়গুরু
‘সর্ব সাধুগুরুর চরণে পাপীর মস্তক দন্ডপাত’
বাউল; মানে যিনি বাতাসের সন্ধান করেন। সাধুর সঙ্গে বিচরণ করেন। গুরুভজনার সাধনা করেন। কারণ সাধক জানেন এই পথেই সত্য, এই পথেই পরম আনন্দ, এই পথেই মুক্তি। সাধনায় ত্রিনয়ন উম্মোচিত হয়, পরমপ্রাপ্তি হয়, প্রেম-ভক্তির দুয়ার খুলে যায়, দ্যুতি ছড়াতে শুরু করে।
লোকেরা তখন তাকে সহজেই দিব্যজ্ঞানী নির্দেশিত করে; আর তার চরণতলে নিজেকে সর্মপন করে। দরদী কণ্ঠে তখন বাউল-সাধক ও মহতের ভাববাণী ভাবুকের দেহমন উতলা করে। তার মুখনিঃসৃত কথামালা হয় অমিয় সুধা আর অজানাকে জানার সূত্র।
আত্মতত্ত্ব দর্শন ও দম সাধনালব্ধ এই বিশেষ লোকাচারটির উৎপত্তি আদিবাংলায় এবং এখনো যার বিস্তৃতি বর্তমান বাংলাদেশ ও ভারতের বঙ্গীয় সাংস্কৃতিক অঞ্চলে বিদ্যমান রয়েছে বেশ মোটাদাগেই। এটির নামই সহজিয়া মতবাদ।
এটি বাংলার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য। আর যেহেতু বাউল চর্চার সাথে চৈতন্যধারা, সূফীবাদ ও বোধিবাদের সংযোগ আছে তাই আরো মোটা দাগে বলতে গেলে এটি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার সম্পদ ও বহু আগে থেকে চর্চিত যোগ পরম্পরা।
ফকির লালন সাঁই হচ্ছেন ফকিরকুলের শিরোমনি। মানবতাবাদের প্রতীক। মহান সাধক। বাংলার মানুষের অসাম্প্রদায়িক চেতনা। বাংলাভাষা কিংবা ভিনভাষীদের জন্যও তিনি সমসমাদৃত। আর বাউল-ফকিরদের কেন্দ্র বলা যায় বাংলাদেশের কুষ্টিয়া-মেহেরপুর-ভারতের কৃষ্ণনগর বা অখণ্ড বাংলার নদীয়া জেলা।
গানের মধ্যে যেমন আছে “তিন পাগলের হইলো মেলা নদে এসে”-এটি হলো সেই নদীয়া। এই নদীয়ায় শত বাউল-ফকিরের জন্ম হয়েছে যুগে যুগে। এপার বাংলা-ওপার বাংলার বাঁকে বাঁকে বাউল সাধুদের আস্তানা রয়েছে।
মহতের মৃত্যু নেই। তারা অমর হয়ে আমাদের মাঝেই বিচরণ করেন; গোচরে বা অগোচরে। বাংলাদেশে যেমন প্রতিবছর কুষ্টিয়ায় লালন আখড়ায় বছরে দুটি অনুষ্ঠান হয়। লাখো মানুষের এই মিলনমেলা দিনকে দিন আরো যেন উজ্জল থেকে উজ্জল হয়ে উঠছে যতই দিন যাচ্ছে।
এছাড়াও সারাদেশ জুড়ে সারাবছরই কোথাও না কোথাও ফকির লালন সাঁইজির সাধুসঙ্গ-স্মরণোৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। অন্যদিকে ওপারে জয়দেবের মেলা বা সাধুসঙ্গগুলোতে সাঁইজির স্মরণ চলছেই। বাউল ফকিরের সাথে লালন ফকিরের নাম এখন তাই সারা পৃথিবীতে চর্চিত।
এই ২০২০ এ দাঁড়িয়ে। দুই বাংলার কয়েকজন তরুণ বাউল-সাধুভক্ত ও লালন ফকিরের অনুসারীরা এক হয়েছে এই সাধু মিলনমেলার আনন্দ পরস্পরের মাঝে ভাগ করে নিতে এবং ছড়িয়ে দিতে। তাদের অনেকেই শহর জীবনের মধ্যে আটকে থাকলেও, ভাববাদ ও গুরুবাদ অন্তরে বেঁধে শৈশব থেকেই লালন বাণীতে মাতোয়ারা হয়েছে। আর তারাই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে হাতে একতারা-ডুগি নিয়ে বিশ্বজুড়ে ঘুরে বেড়াবে।
তারা ফকির লালন সাঁই সহ আরো বিভিন্ন মহতের ভাববাণীকে আঁকড়ে বাঁচতে চায়। তাই লালন সাঁইজির ও একই সারির মহতের ভাববাণী প্রচার করতে তারা ‘দিব্যজ্ঞানী’ নামে একটা গানের দল তৈরি করেছে ২০১৮ সালের নভেম্বরে। এই দিব্যজ্ঞানীর সাথে পরবর্তীতে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের বয়োজ্যেষ্ঠ সাধু-ফকির ও পেশাদার শিল্পী, কলাকুশলী ও বাদ্যযন্ত্রীরা।
এখান থেকেই প্রশ্নটার জন্ম হয়- ‘দিব্যজ্ঞানী’ কি শুধুই একটা গানের দল? নাকি এর সাথে জড়িয়ে আছে আরো কিছু?? এই প্রশ্নে জবাবে বলতে হয় দিব্যজ্ঞানী কেবল কোনো গানের দল নয়, শুদ্ধ বাউল চর্চার ধারাকে মানুষের জীবনে প্রতিস্থাপন করতে সচেষ্ট থাকার জন্যই এর শিল্পী-কর্মীরা একত্রীত হয়েছে।
দিব্যজ্ঞানী শুধু ভাব গান পরিবেশনই নয় পাশাপাশি ভাববাদ নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা-প্রকাশনা-কর্মশালা ও নানাবিধ মিলনমেলার আয়োজন করার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এছাড়াও মানুষের মেলায় মনের মানুষের খোঁজে অনাঢ়ম্বড় ভক্তি সাধন করতে থাকবে।
বাংলা একাডেমীর ঢাকা লিট ফেস্ট ২০১৮ তে সন্ধ্যাকালীন অনুষ্ঠানে দিব্যজ্ঞানীর প্রথম আত্মপ্রকাশ। আকলিমা ফকিরকে প্রধান করে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত বাদ্যযন্ত্রীদের নিয়ে বাউল শেলীর নেতৃত্বে নয়া দল হিসেবে দিব্যজ্ঞানী ভাব গান পরিবেশন করে।
তারপর ২০১৯ এর ১৮ জানুয়ারি ঢাকাস্থ দিব্যজ্ঞানীর স্টুডিওর সম্মুখ রাস্তায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাধুবাউলদের চরণধুলি নেয়ার জন্য সাধু-সমাবেশের আয়োজন করা হয় এবং সাধুবাউলদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দিব্যজ্ঞানীর আত্মপ্রকাশ হয়।
এরপর বিষয়টিতে নয়া মোড় আসে। ভারতের মুর্শিদাবাদের শিল্পী ও কম্পোজার অরিন্দম জানা দিব্যজ্ঞানীর সাথে যুক্ত হন। মুম্বাই থেকে দেব অরিজিৎ মিক্সিং এর জন্য এগিয়ে আসেন। এছাড়াও কলকাতার কিছু তরুণপ্রাণ মেধাবী শিল্পীরাও দিব্যজ্ঞানী’র সাথে আত্মিকভাবে যুক্ত হয়েছেন এবং হচ্ছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় দলের প্রধান শেলীর কণ্ঠে “যার ভাবে মুড়েছি মাথা’’ এবং অরিন্দম জানার কণ্ঠে “কাল কাটালি কালের বশে” রের্কডিং ও মিক্সিং শুরু হয় দিব্যজ্ঞানীর কোলকাতার শাখা স্টুডিও ভাব’স থেকে। “যার ভাবে মুড়েছি মাথা’’ সম্প্রতি দিব্যজ্ঞানীর সাউন্ডক্লাউড একাউন্টে আপলোড করা হয়েছে। এই কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
দিব্যজ্ঞানী শুধুই গানরে দল নয়, এটা বাউলদের জন্য একটা প্লাটফর্ম। উদ্দেশ্য দুই বাংলার বাউল-সাধকদের সাথে নিয়ে একটা ভ্রাম্যমাণ মিলনযাত্রা করা। আর সেই হেতু বাংলাদেশের আকলিমা ফকির, সাত্তার ফকির ও সিদ্দিক ফকির এবং কলকাতার সাধন বৈরাগ্যের মত সাধকশিল্পীদের আর্শিবাদসহ দিব্যজ্ঞানী এগিয়ে চলছে।
দিব্যজ্ঞানী’র দলনেতা ও কণ্ঠশিল্পী শেলীর কথা
এই বাতাসটা নিয়েই আমাদের সবকিছু। সাধু-বাউলরা এই বাতাসের সন্ধানই করে। আামদের নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের যে ব্যাপারটা আছে; সেই পাখিটার বিষয়েই লালন সাইঁজি বেশি করে বলেছেন। এটা আসলে গুরুবিদ্যা-গুপ্তজ্ঞান। এগুলো এভাবে ভেঙ্গে সবসময় তো বলা যায় না। এরজন্য গুরু ধরতে হয়। সাইঁজির প্রত্যেকটা বাণীতে এইরকম আহ্বান করেছেন যে তোমরা আসো এই পথে।
আমি আমার মতো করে সাধুসঙ্গ করি, অনুষ্ঠান করি। হঠাৎ করে একদিন ফাহিম ভাই’র সাথে দেখা হয়ে গেলো সাধুসঙ্গে, ফাহিম ভাই’র গুরু বাড়িতে। সেখান থেকেই আসলে আমাদের শুরুটা হয়। আমরা মনে মনে পরিকল্পনা করি যে, একটা দল করবো সাধুদেরকে নিয়ে।
যারা প্রবীণ সাধু আছে, অজপাড়াগাঁয়ে পরে আছে। যাদেরকে তুলে ধরার মতো কেউ নেই, আমরা তাদেরকে নিয়ে একটা দল বানাবো। ২০১৮তেই আমরা প্রথম অনুষ্ঠান করলাম ঢাকা লিট ফেস্ট। সেখান থেকেই আমরা আমাদের এই দলটার নাম দিলাম ‘দিব্যজ্ঞানী’।
সাধুরা পূর্বজন্মের সুকৃতিকে মানে। আমার এই দল করতে গিয়ে ঐ রকমি একটা ব্যাপার মনে হয়েছে। এই যে কোলকাতাতে গিয়ে এতগুলো মিউজিশিয়ান এক জায়গায় করে, তাদের সাথে অনুশীলন করে একটা দল গঠন করা, গানগুলো রের্কড করা, এটা আমাদের কল্পনার বাইরে ছিল। সেখান থেকে মনে হলো যে সাইঁজি নিজেই আমাদেরকে আমাদের লক্ষ্যে নিয়ে যাচ্ছেন।
আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে দিব্যজ্ঞানীকে নিয়ে। এটা নিয়ে আমরা অনেক ভাবছি। চেষ্টা করছি ভাবার। আসলে তো ভাবতে পারি না আমরা। তারপরেও চেষ্টা যেহেতু করছি, সেখান থেকে আমরা চাইবো যে আমাদের বাদ্যযন্ত্রগুলো হবে মাটির-আদিভাব যেগুলোর। এইগুলো দিয়েই মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করবো। এটাই আমাদের লক্ষ্য।
এইখানের শিল্পীরা কেউ শুধু শিল্পী থাকবে না। সাধুশিল্পী বা যারা প্রকৃত সাধু, সাধনা করে সাধু হয়েছে; আমরা চাচ্ছি তাদেরকে আমাদের সাথে জড়াতে। তাদের স্পর্শে আমরা যদি মানুষ হতে পারি। বা আমাদের এই দিব্যজ্ঞানীকে যাতে মানুষ এইভাবে দেখে যে, না শুধুমাত্র এরা গানের দল না; আমাদেরকে ডেকে নিয়ে গেলে যাতে ভেতর থেকে যথেষ্ট পরিমাণ ঐ ভক্তিটা আসে মানুষের মনে; মূলত আমাদের ঐ চেষ্টাটাই আছে।
মঞ্চে অনুষ্ঠান করতে গেলে আমরা আমাদের বাদ্যযন্ত্রগুলো অবশ্যই দেশীয় যন্ত্র রাখার চেষ্টা করবো। কিন্তু সেগুলো একটু ভিন্ন রকমের হতে পারে। কিছুদিন আগেও আমাদের একটা গান মুক্তি পেয়েছে। এইখানে কোনোরকম ইলেকট্রিক যন্ত্র নেই। একদম সহজ-সাধারণভাবে গানটা পরিবেশন করা হয়েছে; তারপরেও যতটুকু আমরা মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি গানটা থেকে, আমার মনে হয় না সেখানে ইলেকট্রিক কোনো যন্ত্র ব্যাবহার করার কোনো প্রয়োজন ছিল।
দিব্যজ্ঞানী’র উদ্যোক্তা ও প্রযোজক ফাহিমের কথা
দিব্যজ্ঞানী সাধু-ফকিরদের বা আমাদের লালন ফকিরের যে ধারা, সেই ধারার যে সাধুরা আছে বা আমাদের অন্যান্য যে ঘর আছে যেমন দুদ্দু শাহ, পাঞ্জু শাহ, বেহাল শাহ উনাদের গান করবো। ভারতেও অনেক সাধুরা আছে। তাছাড়া আমরা আমাদের সাত্তার ফকিরের গান করবো। যার গান সাইঁজির ভাবধারার সাথে একই সিলসিলার গান, একই কর্মের গান, তাদের গান আমরা করবো। আমাদের নিজেদের লেখা গান করার ইচ্ছা বা স্পর্ধা আমাদের নাই।
দিব্যজ্ঞানীকে গানের দল না বলে এটাকে একটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখছি। যেহেতু এখানে অনেক ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার শিল্পীরা যুক্ত হবে; এটার একটা পরিচালনার দিক আছে এবং আরেকটা দিক আছে যারা শুধুমাত্র সাধনায় ব্যস্ত থাকবে, গান করবে, পরিবেশনার ব্যাপার আছে। আমরা যদি আর্ন্তজাতিকভাবে নিজেদের উপস্থাপন করতে চাই তাহলে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে সেরকম।
লালন মানেই বাংলা। আমরা বলতে চাই, যদি আপনি বাংলাকে বুঝতে চান, বাউলকে বুঝতে চান, আমার কাছে মনে হয় লালন ছাড়া অন্য কোনো বড় গভীর বিকল্প আর নেই। বাংলা সংস্কুতি নিয়ে যখন আমরা কথা বলবো তখন আসলে বাংলা ভাষা চর্চার পেরিফেরাটাকে আপনি হয়তো মাঝখানে সীমানা দিয়ে দেখছেন একভাবে, কিন্তু বাংলা সংস্কৃতিকে আপনি যদি বুঝতে চান, বাংলা ভাষার চর্চা যতদূর র্পযন্ত আছে সবটুকু নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে।
সাধুরতো কোনো কাঁটাতারের সীমানা নাই। লালন যখন এখানে বেড়ে উঠেছেন তখন এখানে কোনো সীমানা ছিল না। তখনো দেশ ভাগ হয়নি। আমাদের সংস্কৃতি তো ৫০ বছরের না, হাজার বছরের। তাই গত কয়েকদিনের আগের একটা কল্পিত রেখা দিয়ে যদি আমরা আমাদের পুরো সংস্কৃতিকে বুঝতে চাই এটা কখনোই সম্ভব না।
আমার কাছে মনে হয় আমাদের সাংস্কৃতিক বিকাশ ঐরকম পর্যায়ে ঘটছে না আমাদের কিছু মানসিক সীমাবদ্ধতার কারণে। আমরা বাংলাকে বুঝতে পারছি না, লালনকে বুঝতে পারছি না, মহৎদের বুঝতে পারছি না; যে কারণে এতো সংকট আমাদের জীবনে।
ভারতে কাজ করছি এমন না। আমরা কাজ করছি মুর্শিদাবাদ-কোলকাতা অঞ্চলে। হয়তো মুম্বাইতে আমাদের মিক্সিং হচ্ছে কিন্তু সেটা আমরা ভারতের সাথে করছি এমন না। হ্যাঁ! এখন তো আমরা বাংলাদেশ-ভারত; কিন্তু ব্যাপারটা তা না। কারণ আমরা দুইদেশের কিছু তরুণ বাউলরা যখন এক জায়গায় হয়েছি এবং প্রত্যেকেই যারা এই দলের সাথে মুখ্য ভূমিকায় রয়েছে তারা প্রত্যেকেই গুরুবাদী মানুষ। তাদের গুরু আছে। নিজ পরিবারের চেয়েও আমরা আমাদের এই তরিকতের সম্পর্ককে অনেক বেশি আপন মনে করি। এ সম্পর্ক বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নয়। এ সম্পর্ক আমাদের আত্মার সম্পর্ক।
আমরা গ্রামে গ্রামে ঘুরেও মানুষদের গান শোনাই। সেগুলোর বাইরে একটু অন্যরকম করে আমরা আমাদের নিজেদের ক্ষমতাটা একটু যাচাই করে দেখার চেষ্টা করছি যে, আমরা লালনের গান নিয়ে কতদূর যেতে পারি। এবং এই যাত্রায় যারা আমাদের সঙ্গী হবে, নিবেদিত প্রাণ হবে, তারাই আমাদের এই দিব্যজ্ঞানী প্লাটফর্মের সদস্য।
………………………………..
ফাহিম ফেরদৌস
চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজক
ব্যাবস্থাপনা পরিচালক, নেসন হাট লিমিটেড
5 Comments