ভবঘুরেকথা

মহাপ্রভুর কুঠি হইতে প্রত্যাবর্তন
দীর্ঘ ত্রিপদী

নাচিতে নাচিতে চলে মতুয়ার গণ মিলে
বাহু তুলে বলে হরিবল।
কেহ আগে কেহ পিছে গেল সে নিয়ম ঘুচে
চলিল যেন চৌদ্দ মাদল।।
কেহ করে গাল বাদ্য কেহ করে কক্ষ বাদ্য
কেহ কেহ বক্ষ চাপড়ায়।
বাহুতে মারিয়া থাবা কেহ বলে কই বাবা
কেহ এক চরণে লাফায়।।
কেহ বলে জয় জয় জয় হরিচাঁদ জয়
কেহ বলে জয় হীরামন।
বিশে দরবেশ জয় গোলোক চাঁদের জয়
কেহ বলে জয় ভক্তগণ।।
জয় দশরথ জয় জয় রামতনু জয়
জয় ত্রিভুবন জন।
ডিক সাহেবের জয় জয় তার মাতৃ জয়
পালাইল দুরন্ত শমন।।
কেহ বলে বল ওকি শমন পা’লাবে সেকি
পালাবে কই শমন আসুক।
এই কীর্তনের মাঝে কাঙ্গাল বেহাল সেজে
যম এসে সঙ্গেতে নাচুক।।
সুমধুর উচ্চৈঃস্বরে দৈববাণী শূন্যোপরে
বলে আমি এসেছি শমন।
আছি কীর্তন উৎসবে তোমরা মহৎ সবে
আমারে তাড়াও কি কারণ।।
এই মত ভাবাবেশে দশরথ বাড়ী এসে
হরি বলে নাচে আর গায়।
সবে সমভাব ধরে কে কারে বারণ করে
অর্ধ বিভাবরী গত হয়।।
মাধ্যাহ্নিক দ্রব্য যত উদ্ধৃত আছিল কত
তাহা সব হ’য়েছে রন্ধন।
ঠাকুরের আজ্ঞা পেয়ে সংকীর্তন ক্ষান্ত দিয়ে
বসিলেন করিতে ভোজন।।
সদ্য ঘৃত মাখনাদি ভোজ শেষে ক্ষীর দধি
দিলেন প্রহ্লাদ চন্দ্র ঘোষ।
সূপদ্রব্য আর যত দিতেছেন দশরথ
সবে খায় হইয়া সন্তোষ।।
সবার ভোজন হ’লে প্রভু হরিচাঁদ বলে
ঠাই নাই শয়ন দিবার।
যেটুকু আছে শর্বরী বল সবে হরি হরি
প্রভাতে যাইও নিজ ঘর।।
শীঘ্র আচমন করি সবে বলে হরি হরি
প্রেমাবেশে রজনী পোহায়।
মহাভাবাবেশ রঙ্গে ভক্তগণ ল’য়ে সঙ্গে
মহাপ্রভু যান নিজালয়।।
হরিচাঁদ সুধা লীলা পদ্মমধু পদ্মবিলা
যত কিছু শুনিয়াছ তার।
যে কিছু শুনি শ্রবণে ধ্যানে জ্ঞানে দৈবে জেনে
রচিল বাসনা রসনার।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!