প্রভুদের বাল্য খেলা
পয়ার
ফরিদপুর জিলা গ্রাম সফলা ডাঙ্গায়।
পঞ্চভ্রাতা জন্মিলেন এসে এ ধরায়।।
প্রভু আগমনে ধন্য হ’ল মত্ত্যপুরী।
বঙ্গদেশে ধন্য গ্রাম সফলা নগরী।।
অগ্রগন্য কৃষ্ণ দাস ভজনেতে।
শুদ্ধ্বাচারী কৃষ্ণ ভক্তে আর্তি বৈষ্ণবেতে।।
একাদশী উপবাসী তুলসী ভজন।
শ্রীহরি বাসর হরিব্রত পরায়ন।।
নাম সংকীর্ত্তন আদি সদা সাধু সঙ্গ।
অন্তরে মাধুর্য শুধু প্রেমের তরঙ্গ।।
বৈষ্ণব দাসের মন শুধু বৈষ্ণব সেবায়।
বৈষ্ণবের সঙ্গে রঙ্গে কৃষ্ণ গুণ গায়।।
প্রভুর অংশেতে জন্ম ভক্তি যুক্ত কায়।
ভক্তের হইয়া ভক্ত ভক্তি শিখায়।।
স্বয়ং এর প্রতিজ্ঞা এ চিরদিন রয়।
ভক্তের হইতে ভৃত্য মোর বাঞ্ছা হয়।।
জানেনা বৈষ্ণব দাস সাধু সেবা বিনে।
গৃহেতে বৈষ্ণব দাস সাধু সেবা দিনে।।
জিজ্ঞাসা করিত মাতা অন্নপূর্ণা ঠাঁই।
বলে মাগো আজ তো বৈষ্ণব আসে নাই।।
বৈষ্ণবের পাক করা লাবড়া ব্যঞ্জন।
বৈষ্ণব প্রসাদ নিতে বড়ই মনন।।
বৈষ্ণবে নিঃশ্বাস ছাড়ে হরে কৃষ্ণ বলে।
তখন আমার মনে আনন্দ উথলে।।
যার গলে মালা ভালে তিলক ধারন।
তারে গিয়া করিত বৈষ্ণব সম্বোধন।।
বালক নিকট যেত বাল্য খেলা লাগি।
বলে ভাই এস খেলি বৈরাগী বৈরাগী।।
একত্র হইয়া সব বালকের সনে।
বলে ভাই ভালো মাটি পাবো কোন খানে।।
যে স্থানে বিশুদ্ধ মাটি আনিত তুলিয়া।
অষ্টাঙ্গে লইত ফোঁটা সে মাটি গুলিয়া।।
বৈষ্ণবেরা যেমন পরিত বহির্বাস।
তেমতি পরিত নিজ পরিধান বাস।।
তুলসির চারা আনি করিত রোপণ।
বলে ভাই হেথা কর নাম সংকীর্ত্তন।।
হরি বলি বাহুতূলি নাচিয়া নাচিয়া।
ভূমে দিত গড়াগড়ি মাতিয়া মাতিয়া।।
নামরসে খেলা বশে মত্ত সুধা পানে।
আহারাদি ক্ষুদা তৃষ্ণা না থাকিত মনে।।
গৌরীদাস গুণভাষ কহন না যায়।
অহরহ বদনেতে হরি গুণ গায়।।
থাকিতেন বৈষ্ণবদাসের হয়ে অনুগত।
বৈষ্ণব দেখিলে হইতেন পদানত।।
মাতৃ পিতৃ আজ্ঞা মানি করিতেন কার্য্য।
ভাতৃগণ আজ্ঞা করিতেন শিরধার্য্য।।
পৌগণ্ডেতে বালকের সঙ্গেতে মিশিয়া।
হরি হরি বলিতেন নাচিয়া নাচিয়া।।
স্বরূপ দাসের বাল্য লীলা চমৎকার।
পিতৃ সেবা মাতৃ সেবা বিশুদ্ধ আচার।।
ভাতৃগণ আজ্ঞাধীন সদা করে কায্য।
ভৃত্যবৎ ভ্রাতৃ পরিচরজাদি গাম্ভীর্য।।
অতিথি বৈষ্ণব পেলে করিত সেবন।
বালক বৈষ্ণব সঙ্গে নাম সংকীর্ত্তন।।
অষ্টাবিংশ মন্বন্তরে পুষ্পবন্ত কলি।
কাঁচা মধু পূর্ণ অফুটন্ত পুষ্প কলি।।
শ্রীহরি ভাস্কর জ্যোতি তাতে ভাতি দিল।
পুষ্পবন্ত কলি “ফুল্ল” জগৎ মাতিল।।
পুষ্পবন্ত কলি ধন্য বৈষ্ণবোপসনা।
সে রসে রস না কেন তারক রসনা।।