১৮৮৬, ২৩শে এপ্রিল
মাস্টার, নরেন্দ্র, শরৎ প্রভৃতি
মাস্টার ঠাকুরের কাছে বসিয়া। হীরানন্দ এইমাত্র চলিয়া গেলেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি) – খুব ভাল; না?
মাস্টার – আজ্ঞা হাঁ; স্বভাবটি বড় মধুর।
শ্রীরামকৃষ্ণ – বললে এগার শো ক্রোশ। অত দূর থেকে দেখতে এসেছে।
মাস্টার – আজ্ঞা হাঁ, খুব ভালবাসা না থাকলে এরূপ হয় না।
শ্রীরামকৃষ্ণ – বড় ইচ্ছা, আমায় সেই দেশে নিয়ে যায়।
মাস্টার – যেতে বড় কষ্ট হবে। রেলে ৪।৫ দিনের পথ।
শ্রীরামকৃষ্ণ – তিনটে পাস!
মাস্টার – আজ্ঞে, হাঁ।
ঠাকুর একটু শ্রান্ত হইয়াছেন। বিশ্রাম করিবেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি) – পাখি খুলে দাও আর মাদুরটা পেতে দাও।
ঠাকুর খড়খড়ির পাখি খুলিয়া দিতে বলিতেছেন। আর বড় গরম, তাই বিছানার উপর মাদুর পাতিয়া দিতে বলিতেছেন।
মাস্টার হাওয়া করিতেছেন। ঠাকুরের একটু তন্দ্রা আসিয়াছে।
শ্রীরামকৃষ্ণ (একটু নিদ্রার পর, মাস্টারের প্রতি) – ঘুম কি হয়েছিল?
মাস্টার – আজ্ঞে, একটু হয়েছিল।
নরেন্দ্র, শরৎ ও মাস্টার নিচে হলঘরের পূর্বদিকে কথা কহিতেছেন।
নরেন্দ্র – কি আশ্চর্য! এত বৎসর পড়ে তবু বিদ্যা হয় না; কি করে লোকে বলে যে, দু-তিনদিন সাধন করেছি, ভগবানলাভ হবে! ভগবানলাভ কি এত সোজা! (শরতের প্রতি) তোর শান্তি হয়েছে; মাস্টার নহাশয়ের শান্তি হয়েছে, আমার কিন্তু হয় নাই।
মাস্টার – তাহলে তুমি বরং জাব দাও, আমরা রাজবাড়ি যাই; না হয় আমরা রাজবাড়ি যাই আর তুমি জাব দাও! (সকলের হাস্য)
নরেন্দ্র (সহাস্যে) – ওই গল্প উনি (পরমহংসদেব) শুনেছিলেন – আর শুনতে শুনতে হেসেছিলেন।১
………………………….
১ কথাটি প্রহ্লাদ চরিত্রের। প্রহ্লাদের বাবা, ষণ্ড আর অমর্ক, দুই গুরু মহাশয়কে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। রাজা জিঞ্চাসা করিবেন, প্রহ্লাদকে তারা কেন হরিনাম শিখাইয়াছে? তাদের রাজার কাছে যেতে ভয় হয়েছিল। তাই ষণ্ড অমর্ককে ওই কথা বলছে।