ভবঘুরেকথা

(তাল-যৎ)
বল কানাই তোরে গৌর করল কে।
কালরূপ ঢেকে রসান দিল কে,
এমন কাঁচা সোনা, গোরচনা, কে দিল তোর গায় মেখে।

এখন মনাগুনে মরছিস পুড়ে, জ্বলছে আগুন জগত জুড়ে,
শিখিপাখা গেছে পুড়ে, চূড়া নাই তোর মস্তকে।
রাধা বলে হাঁকা ডাকা, ছিল ত’ নাম চূড়ায় লেখা,
এমন চূড়া বাঁশি বাঁকা, ত্যজিলি রে কি দায় ঠেকে।

এলি কি দোষে ভাই ত্যজ্য করে, লুকালি পর্বত গহ্বরে,
খুঁজে দেখা পাইনে তোরে, বুক ফেটে যায় ঐ দুঃখে।
আয়রে তোরে স্কন্ধে করি, হৃদপদ্মে পাদপদ্ম ধরি,
তাপিত অঙ্গ শীতল করি, মরিরে তোয় না দেখে।

ত্যজিবি যদি শ্রীবৃন্দাবন, কেন বা ধরলি গোবর্ধন,
কালীয় নাগ করলি দমন, সখাগণ করলি রক্ষে।
মরে ত মলেম না সেদিন, হারায়ে তোরে বৃথা যায় দিন,
তোরে দেখলেম দীনেরও দীন, এই হল বেঁচে থেকে।

আমরা গোপ জাতি রাখাল স্বভাবে, হারে রে রে করছি সবে,
উচ্ছিষ্ট ফল মিষ্টি ভেবে, দিতাম রে তোর চাঁদমুখে।
আর হবে না এমন কপাল, ক্ষুধায় কাতর দেখে রাখাল,
মণি পত্নী দ্বারে গোপাল, করলি রে অন্ন ভিক্ষে।

গোঁসাই গোলকচাঁদ কয় এলি চোরা,
দাসদাসী তোর কেঁদে সারা, মহানন্দ জীর্ণ জ্বরা হা হরিচাঁদ।
তোর শোকে গুরুচরণ করণ ধরে, শান্ত হতে চাই অন্তরে,
রিপুর বশে, কর্মদোষে, পারবে না তা তারকে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!