সুখের ধান ভানা
ওগো, সুখের ধান ভানা-
ধনি, এমন ব্যবসা ছেড় না।
কর কৃষ্ণপ্রেমের ভানা-কুটা, কষ্ট তোমার থাকবে না।।
তোমার দেহ-ঢেঁক্শালে, অনুরাগের ঢেঁকি বসালে,
ভজন-সাধন পাড়ুই দুটো দুদিকে দিলে,
আবার নিষ্ঠা আঁশকল লাগালে,
ঢেঁকি চলবে, ও সে টলবে না।।
ওগো সুখের ধানভানা।।
রাগ বৈধী দুজন ভানুনী,
তাদের নাম কৃষ্ণ-মোহিনী,
তাদের একজন সদগোপের মেয়ে, একজন তেলেনী,
তারা ধান ভানে ভাল, জানে ভাল,
তাদের গায়ে সোনার গহনা।।
ঘরে বৃদ্ধা শ্রদ্ধা সেকেলে গিন্নি,
শুদ্ধমতি শুদ্ধরতি কুলো-চালুনি,
এবার কাম-কামরা ছেড়ে, ঝেড়ে ঝুড়ে
তুষ-কুঁড়ো চেলে লওনা।।
রাগ-বিবেকের মূষল-আঘাতে,
বাসনা-তুষ তোমার যাবে ছেড়ে
পাড় দিতে দিতে,
চাল উঠবে সেঁটে, বিকার কেটে,
ঠিক যেন মিছরিদানা।।
শ্রীগুরু শ্রীমহাজনের ধান, তাতে হবে রে সাবধান,
ষোলআনা বজায় রেখে করবে সমাধান,
তুমি লাভে লাভে কাল কাটাবে,
আসল যেন ভেঙ্গ না।।
গোঁসাই বলে, অনন্ত, তুই ধান ভানতে জানিস না,
ও তোর ঘটবে যন্ত্রণা,
পাপ-ঢেঁকি তোর মাথা নাড়ে গড়ে পড়ে না,
দেখিস যেন বেহুঁশারে হাতে ঢেকি ফেলিস না।।
…………………..
অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ‘বাংলার বাউল ও বাউল গান’ গ্রন্থ থেকে এই পদটি সংগৃহিত। ১৩৬৪ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত এই গ্রন্থের বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। লেখকের এই অস্বাধারণ সংগ্রহের জন্য তার প্রতি ভবঘুরেকথা.কম-এর অশেষ কৃতজ্ঞতা।
এই পদটি সংগ্রহ সম্পর্কে অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয় লিখেছেন- অন্তরের (অনন্ত গোঁসাই) দীর্ঘ কয়েকটি গান বাংলার বাউল-মহলে বিশেষ পরিচত। অনন্ত কোথাকার লোক, তাহা জানিতে পারি নাই। তবে রচনা-রীতি ও দীর্ঘ সাঙ্গরূপক ব্যবহার দৃষ্টে মনে হয়, ইনি খুব সম্ভব রাঢ়ের বাউল।
…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন-
voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….