স্বামী-শিষ্য-সংবাদ ১-৫
১
স্থান-কলিকাতা, প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়ের বাটী, বাগবাজার
কাল-ফেব্রুআরি(শেষ সপ্তাহ), ১৮৯৭
প্রথমবার বিলাত হইতে ভারতে ফিরিবার পর তিন চারিদিন হইল স্বামীজী কলিকাতায় পদার্পণ করিয়াছেন। আজ মধ্যাহ্নে বাগবাজারের রাজবল্লভপাড়ায় শ্রীরামকৃষ্ণ-ভক্ত শ্রীযুক্ত প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে স্বামীজীর নিমন্ত্রণ। সংবাদ পাইয়া বহু ভক্ত আজ তাঁহার বাড়িতে সমাগত হইতেছেন। শিষ্যও লোকমুখে সংবাদ পাইয়া মুখুয্যে মহাশয়ের বাড়িতে বেলা প্রায় ২ টার সময় উপস্থিত হইল। স্বামীজীর সঙ্গে শিষ্যের এখনও আলাপ হয় নাই। শিষ্যের জীবনে স্বামীজীর দর্শনলাভ এই প্রথম।
শিষ্য উপস্থিত হইবামাত্র স্বামী তুরীয়ানন্দ তাহাকে স্বামীজীর নিকটে লইয়া যাইয়া পরিচয় করাইয়া দিলেন। স্বামীজী মঠে আসিয়া শিষ্যরচিত একটি ‘শ্রীরামকৃষ্ণস্তোত্র’ পাঠ করিয়া ইতঃপূর্বেই তাহার বিষয় শুনিয়াছিলেন; শ্রীরামকৃষ্ণদেবের ভক্তগরিষ্ঠ নাগ-মহাশয়ের১ কাছে তাহার যে যাতায়াত আছে-ইহাও স্বামীজী জানিয়াছিলেন।
শিষ্য স্বামীজীকে প্রণাম করিয়া উপবেশন করিলে স্বামীজী তাহাকে সংস্কৃতে সম্ভাষণ করিয়া নাগ-মহাশয়ের কুশলাদি জিজ্ঞাসা করিলে এবং তাঁহার অমানুষিক ত্যাগ, উদ্দাম ভগবদনুরাগ ও দীনতার বিষয় উল্লেখ করিতে করিতে বলিলেন-‘বয়ং তত্ত্বান্বেষাদ্ হতাঃ মধুকর ত্বং খলু কৃতী’২। কথাগুলি নাগ-মহাশয়কে লিখিয়া জানাইতে শিষ্যকে আদেশ করিলেন। পরে বহু লোকের ভিড়ে আলাপ করিবার সুবিধা হইতেছে না দেখিয়া, তাহাকে ও স্বামী তুরীয়ানন্দকে পশ্চিমের ছোট ঘরে লইয়া গিয়া শিষ্যকে ‘বিবেকচূড়ামণি’র এই কথাগুলি বলিতে লাগিলেনঃ
মা ভৈষ্ট বিদ্বন্ তব নাস্ত্যপায়াঃ
সংসারসিন্ধোস্তরণেহস্ত্যুপায়ঃ।
যেনৈব যাতা যতয়োহস্য পারং
তমেব মার্গং তব নির্দিশামি।।৩
এবং তাহাকে আচার্য শঙ্করের ‘বিবেকচূড়ামণি’ নামক গ্রন্থখানি পাঠ করিতে আদেশ করিলেন।
নানা প্রসঙ্গ চলিতেছে এমন সময় একজন আসিয়া সংবাদ দিল যে, ‘মিরর’৪- সম্পাদক শ্রীযুক্ত নরেন্দ্রনাথ সেন স্বামীজীর সঙ্গে দেখা করিতে আসিয়াছেন। স্বামীজী বলিলেন, ‘তাঁকে এখানে নিয়ে এসো।’ নরেন্দ্রবাবু ছোট ঘরে আসিয়া বসিলেন এবং আমেরিকা ও ইংলণ্ড সম্বন্ধে স্বামীজীকে নানা প্রশ্ন করিতে লাগিলেন। উত্তরে স্বামীজী বললেনঃ
আমেরিকাবাসীর মতো এমন সহৃদয়, উদারচিত্ত, অতিথিসেবাপরায়ণ, নব নব ভাবগ্রহণে একান্ত সমুৎসুক জাতি জগতে আর দ্বিতীয় দেখা যায় না। আমেরিকায় যা কিছু কাজ হয়েছে, তা আমার শক্তিতে হয়নি; আমেরিকার লোক এত সহৃদয় বলেই তাঁরা বেদান্তভাব গ্রহণ করেছেন।
ইংলণ্ডের কথায় বলিলেনঃ ইংরেজের মতো conservative (প্রাচীন রীতিনীতির পক্ষপাতী) জাতি জগতে আর দ্বিতীয় নেই। তারা কোন নূতন ভাব সহজে গ্রহণ করতে চায় না, কিন্তু অধ্যবসায়ের সহিত যদি তাদের একবার কোন ভাব বুঝিয়ে দেওয়া যায়, তবে তারা কিছুতেই তা আর ছাড়ে না। এমন দৃঢ়প্রতিজ্ঞা অন্য কোন জাতিতে মেলে না। সেইজন্য তারা সভ্যতায় ও শক্তি-সঞ্চয়ে জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে।
উপযুক্ত প্রচারক পাইলে আমেরিকা অপেক্ষা ইংলণ্ডেই বেদান্ত-প্রচারকার্য স্থায়ী হইবার অধিকতর সম্ভাবনা, ইহা জানাইয়া স্বামীজী বলিলেনঃ
আমি কেবল কাজের পত্তন মাত্র ক’রে এসেছি। পরবর্তী প্রচারকগণ ঐ পন্থা অনুসরণ করলে কালে অনেক কাজ হবে।
নরেন্দ্রবাবু। এইরূপ ধর্মপ্রচার দ্বারা ভবিষ্যতে আমাদের কি আশা আছে?
স্বামীজী। আমাদের দেশে আছে মাত্র এই বেদান্তধর্ম। পাশ্চাত্য সভ্যতার তুলনায় আমাদের এখন আর কিছু নেই বললেই হয়। কিন্তু এই সার্বভৌম বেদান্তবাদ-যা সকল মতের, সকল পথের লোককেই ধর্মলাভে সমান অধিকার প্রদান করে-এর প্রচারের দ্বারা পাশ্চাত্য সভ্য জগৎ জানতে পারবে, ভারতবর্ষে এক সময়ে কি আশ্চর্য ধর্ম -ভাবের স্ফুরণ হয়েছিল এবং এখনও রয়েছে। এই মতের চর্চায় পাশ্চাত্য জাতির আমাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি হবে-অনেকটা এখনই হয়েছে। এইরূপে যথার্থ শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি লাভ করতে পারলে আমরা তাদের নিকট ঐহিক জীবনের বিজ্ঞানাদি শিক্ষা করে জীবন-সংগ্রামে অধিকতর পটু হবো। পক্ষান্তরে তারা আমাদের নিকট এই বেদান্তমত শিক্ষা করে পারমার্থিক কল্যানলাভে সমর্থ হবে।
নরেন্দ্রবাবু। এই আদান-প্রদানে আমাদের রাজনৈতিক কোন উন্নতির আশা আছে কি?
স্বামীজী। ওরা (পাশ্চাত্যেরা) মহাপরাক্রান্ত বিরোচনের৫ সন্তান; ওদের শক্তিতে পঞ্চভূত ক্রীড়াপুত্তলিকার মতো কাজ করছে; আপনারা যদি মনে করেন, আমরা এদের সঙ্গে সংঘর্ষে ঐ স্থূল পাঞ্চভৌমিক শক্তি- প্রয়োগ করেই একদিন স্বাধীন হবো, তবে আপনারা নেহাত ভুল বুঝছেন। হিমালয়ের সামনে সামান্য উপলখণ্ড যেমন, ওদের ও আমাদের ঐ শক্তি- প্রয়োগকুশলতায় তেমন প্রভেদ। আমার মত কি জানেন? আমরা এইরূপ বেদান্তোক্ত ধর্মের গূঢ় রহস্য পাশ্চাত্য জগতে প্রচার করে, ঐ মহাশক্তিধরগণের শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি আকর্ষণ ক’রে ধর্মবিষয়ে চিরদিন ওদের গুরুস্থানীয় থাকব এবং ওরা ইহলৌকিক অন্যান্য বিষয়ে আমাদের গুরু থাকবে। ধর্ম জিনিসটা ওদের হাতে ছেড়ে দিয়ে ভারতবাসী যেদিন পাশ্চাত্যের পদতলে ধর্ম শিখতে বসবে, সেইদিন এ অধঃপতিত জাতির জাতিত্ব একেবারে ঘুচে যাবে। দিনরাত চীৎকার করে ওদের-‘এ দেও, ও দেও’ বললে কিছু হবে না। আদান-প্রদানরূপ কাজের দ্বারা যখন উভয়পক্ষের ভিতর শ্রদ্ধা ও সহানুভূতির একটা টান দাঁড়াবে , তখন আর চেঁচামেচি করতে হবে না। ওরা আপনা হতেই সব করবে।
আমরা বিশ্বাস-এইরূপে, ধর্মের চর্চায় ও বেদান্তধর্মের বহুল প্রচারে এদেশ ও পাশ্চাত্য দেশ-উভয়েরই বিশেষ লাভ। রাজনীতিচর্চা এর তুলনায় আমার কাছে গৌণ(secondary) উপায় বলে বোধ হয়। আমি এই বিশ্বাস কাজে পরিণত করতে জীবনক্ষয় করব। আপনারা ভারতের কল্যাণ অন্যভাবে সাধিত হবে বুঝে থাকেন তো অন্যভাবে কাজ করে যান।
নরেন্দ্রবাবু স্বামীজীর কথায় সম্মতি প্রকাশ করিয়া কিছুক্ষণ বাদে উঠিয়া গেলেন। শিষ্য স্বামীজীর পূর্বোক্ত কথাগুলি শুনিয়া অবাক হইয়া তাঁহার দীপ্ত মূর্তির দিকে অনিমেষ নয়নে চাহিয়া রহইল।
নরেন্দ্রবাবু চলিয়া গেলে পর, গোরক্ষিণী সভার জনৈক উদ্যোগী প্রচারক স্বামীজীর সঙ্গে দেখা করিতে উপস্থিত হইলেন। পুরা না হইলেও ইঁহার বেশভূষা অনেকটা সন্ন্যাসীর মতো-মাথায় গেরুয়া রঙের পাগড়ি বাঁধা, দেখিলেই বুঝা যায় ইনি হিন্দুস্থানী। গোরক্ষা-প্রচারকের আগমন-বার্তা পাইয়া স্বামীজী বাহিরের ঘরে আসিলেন। প্রচারক স্বামীজীকে অভিবাদন করিয়া গোমাতার একখানি ছবি তাঁহাকে উপহার দিলেন। স্বামীজী উহা হাতে লইয়া নিকটবর্তী অপর এক ব্যক্তির হাতে দিয়া তাঁহার সহিত নিম্নলিখিত আলাপ করিয়াছিলেনঃ
স্বামীজী। আপনাদের সভার উদ্দ্যেশ্য কি?
প্রচারক। আমরা দেশের গোমাতাগণকে কসাইয়া হাত হইতে রক্ষা করিয়া থাকি। স্থানে স্থানে পিঁজরাপোল স্থাপন করা হইয়াছে। সেখানে রুগ্ন, অকর্মণ্য এবং কসাইয়ের হাত হইতে ক্রীত গোমাতাগণ প্রতিপালিত হণ।
স্বামীজী। এ অতি উত্তম কথা। আপনাদের আয়ের পন্থা কি?
প্রচারক। দয়াপরাবশ হইয়া আপনাদের ন্যায় মহাপুরুষ যাহা কিছু দেন, তাহা দ্বারাই সভার ঐ কার্য নির্বাহ হয়।
স্বামীজী। আপনাদের গচ্ছিত কত টাকা আছে?
প্রচারক। মারোয়াড়ী বণিকসম্প্রদায় এ কার্যের বিশেষ পৃষ্ঠপোষক। তাঁহারা এই সৎকার্যে বহু অর্থ দিয়াছেন।
স্বামীজী। মধ্য-ভারতে এবার ভয়ানক দুর্ভিক্ষ হয়েছে। ভারত গর্ভনমেন্ট নয় লক্ষ লোকের অনশনে মৃত্যুর তালিকা প্রকাশ করেছেন। আপনাদের সভা এই দুর্ভিক্ষকালে কোন সাহায্যদানের আয়োজন করেছে কি?
প্রচারক। আমরা দুর্ভিক্ষাদিতে সাহায্য করি না। কেবলমাত্র গোমাতাগণের রক্ষাকল্পেই এই সভা স্থাপিত।
স্বামীজী। যে দুর্ভিক্ষে আপনাদের জাতভাই লক্ষ লক্ষ মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হল, সামর্থ্য সত্ত্বেও আপনারা এই ভীষণ দুর্দিনে তাদের অন্ন দিয়ে সাহায্য করা উচিত মনে করেননি?
প্রচারক। না। লোকের কর্মফলে-পাপে এই দুর্ভিক্ষ হইয়াছিল; যেমন কর্ম তেমনি ফল’ হইয়াছে।
প্রচারকের কথা শুনিয়া স্বামীজীর বিশাল নয়নপ্রান্তে যেন অগ্নিকণা স্ফুরিত হইতে লাগিল, মুখ আরক্তিম হইল; কিন্তু মনের ভাব চাপিয়া বলিলেনঃ
যে সভা-সমিতি মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে না নিজের ভাইঅনশনে মরছে দেখেও তার প্রাণরক্ষার জন্য এক মুষ্টি অন্ন না দিয়ে পশুপক্ষিরক্ষার জন্য রাশি রাশি অন্ন বিতরণ করে, তার সঙ্গে আমার কিছুমাত্র সহানুভূতি নেই; তার দ্বারা সমাজের বিশেষ কিছু উপকার হয় ব’লে আমার বিশ্বাস নেই। কর্মফলে মানুষ মরছে-এরূপে কর্মের দোহাই দিলে জগতে কোন বিষয়ের জন্য চেষ্টাচরিত্র করাটাই একেবারে বিফল বলে সাব্যস্ত হয়। আপনাদের পশুরক্ষার কাজটাও বাদ যায় না। ঐ কাজ সম্বন্ধেও বলা যেতে পারে-গোমাতারা নিজ নিজ কর্মফলেই কসাইদের হাতে যাচ্ছেন ও মরছেন, আমাদের ওতে কিছু করবার প্রয়োজন নেই।
প্রচারক। (একটু অপ্রতিভ হইয়া) হাঁ, আপনি যাহা বলিয়াছেন, তাহা সত্য; কিন্তু শাস্ত্র বলে-গরু আমাদের মাতা।
স্বামীজী। (হাসিতে হাসিতে) হাঁ গরু আমাদের যে মা, তা আমি বিলক্ষণ বুঝেছি-তা না হলে এমন সব কৃতী সন্তান আর কে প্রসব করিবেন?
হিন্দুস্থানী প্রচারক ঐ বিষয়ে আর কিছু না বলিয়া (বোধ হয় স্বামীজীর বিষম বিদ্রুপ তিনি বুঝিতেই পারিলেন না) স্বামীজীকে বলিলেন যে, সেই সমিতির উদ্দেশ্যে তিনি তাঁহার কাছে কিছু ভিক্ষাপ্রার্থী।
স্বামীজী। আমি তো সন্ন্যাসী ফকির লোক। আমি কোথায় অর্থ পাবো, যাতে আপনাদের সাহায্য করব? তবে আমার হাতে যদি কখনও অর্থ হয়, আগে মানুষের সেবায় ব্যয় করব; মানুষকে আগে বাঁচাতে হবে- অন্নদান, বিদ্যাদান, ধর্মদান করতে হবে। এ-সব ক’রে যদি অর্থ বাকী থাকে, তবে আপনাদের সমিতিতে কিছু দেওয়া যাবে।
কথা শুনিয়া প্রচারক মহাশয় স্বামীজীকে অভিবাদন করিয়া প্রস্থান করিলেন। তখন স্বামীজী আমাদিগকে বলিতে লাগিলেনঃ
কি কথা বললে! বলে কিনা-কর্মফলে মানুষ মরছে, তাদের দয়া করে কি হবে? দেশটা যে অধঃপাতে গেছে, এই তার চূড়ান্ত প্রমাণ। তোদের হিন্দুধর্মের কর্মবাদ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে দেখলি? মানুষ হয়ে মানুষের জন্যে যাদের প্রাণ না কাঁদে, তাদের কি আবার মানুষ?
এই কথা বলিতে বলিতে স্বামীজীর সর্বাঙ্গ যেন ক্ষোভে দুঃখে শিহরিয়া উঠিল। পরে স্বামীজী শিষ্যকে বলিলেনঃ
আবার আমার সঙ্গে দেখা করো।
শিষ্য। আপনি কোথায় থাকিবেন? হয়তো কোন বড় মানুষের বাড়িতে থাকিবেন। আমাকে তথায় যাইতে দিবে তো?
স্বামীজী। সম্প্রতি আমি কখন আলমবাজার মঠে, কখন কাশীপুরে গোপাললাল শীলের বাগানবাড়িতে থাকব। তুমি সেখানে যেও।
শিষ্য। মহাশয়, আপনার সঙ্গে নির্জনে কথা কহিতে বড় ইচ্ছা হয়।
স্বামীজী। তাই হবে-একদিন রাত্রিতে যেও। খুব বেদান্তের কথা হবে।
শিষ্য। মহাশয়, আপনার সঙ্গে কথকগুলি ইংরেজ ও আমেরিকান আসিয়াছে শুনিয়াছি, তাহারা আমার বেশভূষা ওকথাবার্তার রুষ্ট হইবে না তো?
স্বামীজী। তারাও সব মানুষ-বিশেষতঃ বেদান্তধর্মনিষ্ট। তোমার সঙ্গে আলাপ করে তারা খুশী হবে।
শিষ্য। মহাশয়, বেদান্ত অধিকারীর যে-সব লক্ষণ আছে, তাহা আপনার পাশ্চাত্য শিষ্যদের ভিতরে কিরুপে আসিল? শাস্ত্রে বলে-অতীতবেদ-বেদান্ত,কৃতপ্রায়শ্চিত্ত, নিত্যনৈমিত্তিক কর্মানুষ্ঠানকারী, আহার-বিহারে পরম সংযত, বিশেষতঃ চতুঃসাধনসম্পন্ন না হইলে বেদান্তের অধিকারী হয় না। আপনার পাশ্চাত্য শিষ্যেরা একে অব্রাহ্মণ, তাহাতে অশন-বসনে অনাচারী; তাহারা বেদান্তবাদ বুঝিল কি করিয়া?
স্বামীজী। তাদের সঙ্গে আলাপ করেই বুঝতে পারবে, তারা বেদান্ত বুঝেছে কি না।
অনন্তর স্বামীজী কয়েকজন ভক্তপরিবেষ্টিত হইয়া বাগবাজারের শ্রীযুক্ত বলরাম বসু মহাশয়ের বাটীতে গেলেন। শিষ্য বটতলায় একখানা ‘বিবেক- চূড়ামণি’ গ্রন্থ ক্রয় করিয়া দরজীপাড়ায় নিজ বাসার দিকে অগ্রসর হইল।
……………………………………………..
১ শ্রীরামকৃষ্ণের গৃহী-ভক্ত দুগর্রাচরণ নাগ
২ অভিজ্ঞানশকুন্তলম্-কালিদাস
৩ ‘হে বিদ্বন্! ভয় পাইও না, তোমার বিনাশ নাই, সংসার-সাগর পার হইবার উপায় আছে। যে পথ অবলম্বন করিয়া শুদ্ধসত্ত্ব যোগিগণ এই সংসার-সাগর পার হইয়াছেন, সেই পথ আমি তোমায় নির্দেশ করিয়া দিতেছি। ‘
৪ ‘Indian Mirror’ পত্রিকা
৫ অসুর, দেহাত্মবাদী, ভোগবাদী-দ্রষ্টব্যঃছান্দোগ্য উপ, ইন্দ্র-বিরোচন-সংবাদ