ফকির লালনের বাণী : সিদ্ধিদেশ
৫১.
নিগূঢ় প্রেম কথাটি তাই আজ আমি
শুধাই কার কাছে।
যে প্রেমেতে আল্লাহ্ নবি মেরাজ করেছে।
৫২.
মেরাজ সে ভাবেরই ভুবন
গুপ্ত ব্যক্ত আলাপ হয়রে দুইজন।
৫৩.
কে পুরুষ আকার কে প্রকৃতি তার
শাস্ত্রে প্রমাণ কি রেখেছে।
৫৪.
কোন প্রেমের প্রেমিকা ফাতেমা
করেন সাঁই কে পতি ভজনা।
৫৫.
কোন প্রেমের দায় ফাতেমাকে সাঁই
মা বোল বলেছে।
৫৬.
কোন প্রেমে গুরু হয় ভবতরী
কোন প্রেমে শিষ্য হয় কাণ্ডারি।
৫৭.
না জেনে লালন প্রেমের উদ্দীপন
পিরিত করে মিছে।
৫৮.
সব সৃষ্টি করলো যে জন
তাঁরে সৃষ্টি কে করেছে।
৫৯.
সৃষ্টি ছাড়া কি রূপে সে
সৃষ্টিকর্তা নাম ধরেছে।
৬০.
সৃষ্টিকর্তা বলছো যারে
লা শরিক হয় কেমন করে।
৬১.
ভেবে দেখো পূর্বাপরে
সৃষ্টি করলেই শরিক আছে।
৬২.
চন্দ্র সূর্য যে গঠেছে
তাঁর খবর কে করেছে।
৬৩.
নীরেতে নিরঞ্জন আছে
নীরের জন্ম কে দিয়েছে।
৬৪.
স্বরূপ শক্তি হয় যে জনা
কে জানে তাঁর ঠিক ঠিকানা।
৬৫.
জাহের বাতেন যে জানে না
তাঁর মনেতে প্যাঁচ পড়েছে।
৬৬.
আপনার শক্তির জোরে
নিজ শক্তির রূপ প্রকাশ করে।
৬৭.
আপন আপন খবর নাই।
গগনের চাঁদ ধরবো বলে
মনে করি তাই।
৬৮.
যে গঠেছে এ প্রেমতরী
সেই হয়েছে চরণদাঁড়ি।
৬৯.
কোলের ঘোরে চিনতে নারি
মিছে গোল বাঁধাই।
৭০.
আঠারো মোকামে জানা
মহারসের বারামখানা।
৭১.
সে রসের ভিতরে সে-না
আলো করে সদাই।
৭২.
না জেনে চাঁদ ধরার বিধি
কথায় কৈটী সাধন সাধি।
৭৪.
ময়ূররূপে কে গাছের পরে
দুই ঠোটে তসবি জপ করে।
৭৫.
গাছের গোড়ায় করিম রহিম শুনি
গাছের নাম রেখেছেন সাঁই রব্বানী।
৭৬.
গাছের ছারটি শাখা, দেখতে বাঁকা
কোন শাখায় কোন রঙ ধরে।
৭৭.
তিপ্পান্ন হাজার সেই গাছের নাম
সেই নামটি হয় মারফতি মোকাম।
৭৮.
ডাকলে একনাম ধরে, জীবের যতো পাপ হরে
সাধ্য কি জীবে এতো পাপ করে।
৭৯.
সত্তর লাখ আঠারো হাজার দল
নাম নিতে গেলো এতোকাল।
৮০.
একাকারে হুহুংকার মেরে আপনি সাঁই রব্বানা
অন্ধকার,ধন্দকার,কুওকার,নৈরেকার সব লীলা।
৮১.
কুন বলে এক শব্দ করে
সেই শব্দে নূর ঝরে।
৮২.
ছটি গুটি হলো তাতে
শোনগো তাঁর বর্ণনা।
৮৩.
সেই ছয় গুটি হতে
ছয়টি জিনিস পয়দা তাতে।
৮৪.
আসমান জমিন সৃজনীতে
মনে তাঁর হয় না বাসনা।
৮৫.
ছয়েতে তসবি হলো
সেই তসবি জব করিল।
৮৬.
একাকারে হুহুংকার মেরে আপনি সাঁই রব্বানা
অন্ধকার, ধন্দকার, কুওকার, নৈরেকার সব লীলা।
৮৭.
কুন বলে এক শব্দ করে
সেই শব্দে নূর ঝরে,
ছটি গুটি হলো তাতে
শোনগো তাঁর বর্ণনা।
৮৮.
সেই ছয় গুটি হতে
ছয়টি জিনিস পয়দা তাতে,
আসমান জমিন সৃজনীতে
মনে তাঁর হয় না বাসনা।
৮৯.
ছয়েতে তসবি হলো
সেই তসবি জব করিল।
৯০.
কোরানেতে প্রমাণ রলো
লালন কয় শোন ঠিকানা।
৯১.
যেদিন ডিম্বভরে ভেসেছিলেন সাঁই।
সেদিন কে হলো তার সঙ্গী কাহারে শুধাই।
৯২.
পয়ার রূপ ধরিয়ে সে
দেখা দিলো ঢেউতে ভেসে,
কি নাম তাহার পাইনে দিশে
আগম ঈশারায় বল কহে তাই।
৯৩.
সৃষ্টি না করিল যখন
কে ছিল তার আগে তখন।
৯৪.
শুনতে অ-সম ভাব সে বচন
একের কুদরতে দুজনে তারাই।
৯৫.
তারে না চিনতে পারি
অধর কেমনে ধরি।
৯৬.
কারে শুধাবরে মর্মকথা কে বলবে আমায়।
পশুবধ করলে কি খোদা খুশি হয়।
৯৭.
ইব্রাহিম নবীকে শুনি
আদেশ করেন আল্লাহ গনি।
৯৮.
প্রিয় বস্তু দাও কোরবানী
দুম্বা বলীর আদেশ কোথায়।
৯৯.
মরণের আগে মরা
আপন প্রাণ কোরবানী করা।
১০০.
প্রাণ অপেক্ষা সেই পেয়ারা
সে ভেদ কী বুঝায় শরায়।