১.
তুমি ডুবায়ে ভাসাতে পারো
ভাসায়ে কিনার দাও কারো,
রাখো মারো হাত তোমারও
তাইতো তোমায় ডাকি আমি।।
২.
নবী না মানে যারা
মোহাহেদ কাফের তারা,
সেই মোহাহেদ দায়মাল হবে
বেহিসাবে দোজখে যাবে।।
৩.
একেক দেশে একেক বাণী
কয় খোদা পাঠায়।
৪.
এক যুগে যা পাঠায় কালাম
অন্য যুগে হয় কেন হারাম,
দেশে দেশে উপমা তামাম
ভিন্ন দেখা যায়।।
৫.
যদি এক খোদার হয় বর্ণনা
তাতে তো ভিন্ন থাকে না,
মনুষের সব রচনা
তাইত ভিন্ন হয়।।
৬.
একেক দেশে একেক বাণী
পাঠান কী সাঁই গুণমনি,
মানুষের রচিত জানি
লালন ফকির কয়।।
৭.
পারে কে যাবি নবীর নৌকাতে আয়
রূপকষ্ঠের নৌকাখানি
নাই ডুবায় ভয়।।
৮.
বেহুঁশে নেয়ে যারা
তুফানে যাবে মারা
একই ধাক্কায়।।
৯.
যেহি মুর্শিদ নেই তো রাছুল
ইহাতে নেই কোন ভুল
খোদাও সে হয়;
লালন কয় না এমন কথা
কোরআনে কয়।।
১০.
মদিনায় রসুল নামে কে এল ভাই
কায়াধারী হয়ে কেন
তাঁর ছায়া নাই।।
১১.
ছায়াহীন যাঁরে দেখি
শরিক নাই যাঁর সেই লা-শরিকী,
লালন বলে তার হাকিকী
বলতে ডরাই।।
১২.
সবাই বলে নবী নবী
নবী কি নিরঞ্জন ভাবি,
ঢেল ঢুঁড়িলে জানতে পাবি-
আহম্মদ নাম হলো কারে।।
১৩.
যার মর্ম সে যদি না কয়
সাধ্য কার কে জানিতে পায়,
তাইতে আমার দীন দয়াময়
মানুষ রূপে ঘোরে ফেরে।।
১৪.
নফী নজবাত যে বোঝেনা
মিছে রে তাঁর পড়াশুনা।।
১৫.
রসুল কে চিনলে পরে
খোদা পাওয়া যায়।।
১৬.
জন্ম যাঁহার এই মানবে
ছায়া তাঁর পড়ে নাই ভূমে।
দেখ দেখি তাই বর্তমানে
কে এলো এই মদিনায়।।
১৭.
আহমদ নাম লিখিতে
মিম হরফ কয় নফি করতে।
সিরাজ সাঁই কয় লালন
তোকে কিঞ্চিৎ নজির দেখাই।।
১৮.
ভুলো না মন কারো ভোলে।
রাছুলের দিন সত্য মান ডাক তারে আল্লা বলে।।
১৯.
খোদা প্রাপ্তি মূল সাধনা
রাছুল বিনা আর কেউ জানে না,
জাহের বাতুন উপাসনা
রাসুল হইতে প্রকাশিলে।।
২০.
দেখাদেখি সাধিলে যোগ
বিপদ ঘটবে বাড়িবে রোগ,
যে জনা হয় শুদ্ধ সাধক
নবিজির ফরমানে চলে।।
২১.
নবী না চিনলে সে কি
খোদার ভেদ পায়,
চিনিতে বলেছেন খোদে
সেই দয়াময়।
২২.
যে নবী পারের কাণ্ডার
জিন্দা সে চার যুগের উপর,
হায়াতুল মুরসালিন নাম তাঁর
সেই জন্য কয়।।
২৩.
দিবানিশি থাকোরে সব বা-হুঁশারী
রসুল বলে এ দুনিয়া মিছে ঝাকমারী।।
২৪.
পড়িলে আউজুবিল্লা
দূরে যায় কি লানতুল্লা,
মুর্শিদরূপ যে করে হিল্লা
শংকা যায় তারই।।
২৫.
জাহের কথা সব সফিনায়
গুপ্তভেদ সব দিলাম সিনায়,
এমনি মতন তোমরা সবাই
দিও সবারই।।
…………………………………..
চিত্র:
ফকির লালন সাঁইজির প্রকৃত কোনো ছবি নেই। লেখাতে ব্যবহৃত ছবিটি লালন ফকিরের কাল্পনিক একটি ছবি মাত্র। বহুল ব্যবহৃত হলেও এই ছবির সাথে লালন সাঁইজির আদৌ কোনো যোগসূত্র খুজে পাওয়া যায় না।