২৬.
মহাপ্যাঁচ আইন তোমার
বুঝে উঠা সাধ্য বা কার,
কি করিতে কী করি আর
সহি না পেলে।।
২৭.
আহাদ নামে কেন আফি
মিম দিয়ে মিম করে নফি,
কি তার মর্ম কও নবিজী
লালন তাই বলে।।
২৮.
আশেক বিনে ভেদের কথা কে আর বোঝে ।
শুধালে খলিফাগণে বলে রাছুল বলেছেন ।।
২৯.
মাশুকের যে হয় আশেকি
খুলে যায় তার দিব্য আঁখি,
নফছ আল্লাহ নফছ নবি
দেখে অনাসে ।।
৩০.
মুর্শিদের হুকুম মান
দায়েমি নামাজ জান,
রাছুলের যে ফরমান
লালন তাই রচে ।।
৩১.
তোমার মতো দয়াল বন্ধু আর পাব না।
দেখা দিয়ে ওহে রাছুল ছেড়ে যেও না।।
৩২.
তুমি হও খোদার দোস্ত
অপারের কাণ্ডারী সত্য,
তোমা বিনে পারের লক্ষ্য
আর দেখা যায় না।।
৩৩.
আমরা সব মদিনাবাসী
ছিলাম যেমন বনবাসী,
তোমা হতে জ্ঞান পেয়েছি
আছি সান্ত্বনা।।
৩৪.
মক্কায় গিয়ে হজ্ব করিয়ে
রসুলের রূপ নাহি দেখি,
মদিনাতে গিয়ে দেখি রসুল মরেছে
তাঁর রওজা একি।।
৩৫.
কুল গেলো কলঙ্ক হলো
আর দিতে কি আছে বাকি,
দ্বীনের রসুল মারা গেলে
কেমন করে দুনিয়ায় থাকি।।
৩৬.
ইশা মুসা দাউদ নবি
বেনামাজী নহে কভি
শেরেক বেদাত তখনো ছিলো
নবি কি জানালো এসে।।
৩৭.
ইঞ্জিল তৌরাত জব্বুর কেতাব
বাতিল হলো কিসের অভাব
নবি-পয়গম্বর কি খাস
ভেবে আমি পাইনে দিশে।।
৩৮.
যে অঙ্গের অবয়ব মানুষ
জান না রে মন বেহুঁশ
মানুষ ছাড়া নয় সে মানুষ
অনাদির আদি।।
৩৯.
ভাবিতে দিন আখের হ’ল
ষোল আনা বাকি প’লো
কী আলস্য তোরে ঘিরলো
দেখলিনে খুলে আঁখি।।
৪০.
নিষ্কামী নির্বিকার হলে
জ্যান্তে মরে যোগ সাধিলে
তবে খাতায় উশুল হলে
নইলে উপায় কী দেখি।।
৪১.
পাপী অধম জীব হে তোমার
তুমি যদি না করো পার দয়া প্রকাশ করে।
পতিতপাবন পতিতনাশন
বলবে কে আজ তোমারে।।
৪২.
জলে স্থলে সর্ব জায়গায়
তোমারই সব কীর্তিময় ত্রিবিধ সংসারে।
তাই না বুঝে অবোধ লালন
প’লো বিষম ঘোরতরে।।
৪৩.
এসো হে অপারের কান্ডারী
পরেছি অকূল পাথারে দাও এসে চরণতরী।।
৪৪.
পতিতপাবন নাম তোমার গো সাঁই
কত পাপীতাপীর দিই গো দোহাই,
ফকির লালন বলে তোমা বিনে
ভরসা কারে করি।।
৪৫.
পাপীকে করিতে তারণ
নাম ধরেছ পতিত পাবন
সেই ভরসায় আছি যেমন
চাতক মেঘ নিহারি।।
৪৬.
সকলরে নিলে পারে
আমারে না চাইলে ফিরে
লালন বলে এ সংসারে
আমি কি তোর এতই ভারি।।
৪৭.
এসো হে প্রভু নিরঞ্জন।
এ ভবতরঙ্গ দেখে
আতঙ্কেতে যায় জীবন।।
৪৮.
ধ্যানযোগে তোমায় দেখি
তুমি সখা আমি সখী,
মম হৃদয় মন্দিরে থাকি
ঐরূপ দাও দরর্শন।।
৪৯.
ত্রিগুণে সৃজিলে সংসার
লীলা দেখে কয় লালন তার
সিদরাতুল মোন্তাহার উপর
নূর তাজেল্লার হয় আসন।।
৫০.
ভালো এক জলসেঁচা কল
পেয়েছো মনা,
ডুবারু জন পায় সে রতন
তোর কপালে ঠনঠনা।।
…………………………………..
চিত্র:
ফকির লালন সাঁইজির প্রকৃত কোনো ছবি নেই। লেখাতে ব্যবহৃত ছবিটি লালন ফকিরের কাল্পনিক একটি ছবি মাত্র। বহুল ব্যবহৃত হলেও এই ছবির সাথে লালন সাঁইজির আদৌ কোনো যোগসূত্র খুজে পাওয়া যায় না।