ভবঘুরেকথা
তথাগত গৌতম বুদ্ধ বৌদ্ধ ভগবান

অনু: ফাহিম ফেরদৌস

সাফাই: শিব মন্ত্র নির্বাণ শতকাম অনুবাদের পর এবার বৌদ্ধ মন্ত্র অনুবাদের সাহস করলাম। শিব মন্ত্রে সংস্কৃত থেকে মিলিয়ে দেখার সুযোগ ছিল। তাই অনেকটা নিশ্চিন্ত থাকা গিয়েছিল অর্থ কিংবা ছন্দে। এবার পুরোটাই ইংরেজি থেকে করতে হলো কারণ পালি ভাষার সমন্ধে কোনো ধারণা নাই আমার।

তাই অতটা নিশ্চিন্ত না থাকা গেলেও খুব বেশি দূরে নেই মনে হচ্ছে। দুটো মন্ত্রের মধ্যে অসম্ভব মিল। আমার বিশ্বাস ছিল এমন মিল খুঁজে পাওয়া যাবেই। মনে হচ্ছে সামনে এর ধারাবাহিকতায় আরো অনুবাদ করতে পারবো। ছোটোখাটো ভুলভ্রান্তি থাকতেই পারে তবু সেই চিন্তা থেকে দূরে থাকলাম।

অল্প জ্ঞান নিয়ে অনুবাদ করতে বসেছি, তাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি। অনেক ব্যাখ্যা সংযুক্ত করা যেতে পারতো তাতে শুধু পরিসর বাড়তো। চাইলে সেটা যে কেউ এখন ওয়েব সার্চ করে যার যার মতো করে দেখে নিতে পারবে। জয় গুরু।

মহাপ্রজ্ঞাপারমিতা মন্ত্র

অবলোকিতেশ্বর* বোধিসত্ত্ব গভীর প্রজ্ঞাপারমিতা ধ্যানে মগ্ন,
দিব্যদৃষ্টিতে দেখলেন পঞ্চ স্কন্ধ শূন্যগর্ভ নিদারুণ যন্ত্রণায় রূপান্তরিত।
সারিপুত্র শূন্যতা থেকে আলাদা নয়, শূন্যতা নয় কোনো আকার।
আকার হচ্ছে সম্পূর্ণ শূন্যতা, শূন্যতা হচ্ছে নির্ধারিত আকৃতি।
সংবেদনশীলতা, চিন্তা, প্রেরণা, চৈতন্য এগুলোও তাই।

সারিপুত্র এসবকিছুকেই চিহ্নিত করেছেন নিরাকারে-

নয় জন্ম, নয় ধ্বংস,
না দাগী, না শুদ্ধ,
না প্রাপ্তি, না ত্যাগ।

সেবশতই শূন্যতা না আকৃতি, না সংবেদনশীলতা,
না চিন্তা, না প্রেরণা, না চৈতন্য।
না চক্ষু, না কর্ণ, না নাসা, না জিহ্বা, না চিত্ত।
না রঙ, না শব্দ, না গন্ধ না স্বাদ, না স্পর্শ, না বস্তুস্বত্ব।
না দৃষ্টি রাজ্য, না চিন্তা রাজ্য ।

না অজ্ঞানতা এবং অজ্ঞানতার নাই কোনো সমাপ্তি, না বৃদ্ধ বয়স ও মৃত্যু এবং বৃদ্ধ বয়সের নাই কোনো শেষ ও মৃত্যু।

নাই যন্ত্রণা এবং নাই যন্ত্রনার কোনো উৎপত্তি, নাই বিনাশ, নাই মুক্তি।
নাই পাণ্ডিত্য, নাই সাফল্য।
নাই কোনো গন্তব্য,
বোধিসত্ত্ব বাঁচে প্রজ্ঞাপারমিতায় বিনা চিত্ত দ্বিধায়।

নাই বিপত্তি, না আছে ভয়।
যারা ভ্রান্তিচিন্তা থেকে থাকে দূরে, তারা সম্পূর্ণ নির্বাণ প্রাপ্তি হয়।
বুদ্ধের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত বাঁচে প্রজ্ঞাপারমিতায় তারপর বোধির আলো জ্বলে তার।

তাই জেনে রাখো প্রজ্ঞাপারমিতা এক মহামন্ত্র , বিচক্ষণ মন্ত্র,
অতুলনীয় মন্ত্র, সর্বোৎকৃষ্ট মন্ত্র, যা যন্ত্রণা থেকে দেয় সম্পূর্ণ মুক্তি।
এটা সত্য- নয় কোনো ধারণা, তাই শুরু করো প্রজ্ঞাপারমিতা মন্ত্র,
বসে যপ: “গাতে গাতে পারাগাতে পারাসামগাতে বোধি সোহা”**।

Enclosure 1:
PALI LYRICS

PRAJNA PARAMITA HRIDAYA SUTRA

aryavalokitesvaro bodhisattvo
gambhiram prajnaparamita caryam caramano vyavalokayati
sma panca skandhas tams ca sva bhava sunyam
pasyati sma iha sariputra
rupam sunyata (…) va rupam rupan na prithak
sunyata sunyataya na prithag rupam
yad rupam sa sunyata ya sunyata sa rupam
evam eva vedana samjna samskara vijnanam
iha sariputra sarva dharma sunyata
laksana anutpanna anruddha avmala anuna aparpurna
ta (…) sariputra sunyatayam
na rupam na vedana na samjna na samskara na vijnana
na caksuh srotam na ghrana jihva kaya manah
na rupa sabda gandha rasa spistavya dharmah
na caksur dhatur ya van na mano vijnanam dhatur
na vidya na vidya na vidya ksayo na(*) vidya ksayo
ya van jaramaranam na jaramarana ksayo
na duhkha samudaya nirdoha margajna
na jnanam na prapti na bhismaya tasmai na prapti
tvad bodhisattva prajnaparamita asritya
viha ratya citta varano vidya ksayo na vidya ksayo
ya van jaramaranam na jaramarana ksayo
na duhkha samudaya nirodha margajna
na jnanam na prapti na bhismaya tasmai na prapti
tvad bodhisattvanam prajnaparamita asritya
viha ratya citta varano citta varano
na siddhitvad atrasto vipa ryasa ti kranto
ni stha nirvana tya dha vyava sthitah
sarva buddhah prajnaparamitam asritya
(a?)nuttaram samyaksambodhim abdhisambuddhah
ta smai jnata vyam
prajna paramita maha mantram maha vidyamantram
anuttara mantram asamasama mantram
sarva duhkha prasa manam sa tyam ami thyatvat
prajna paramita yam ukto mantrah tadyatha

GATE GATE PARAGATE PARASAMGATE BODHI SVAHA

Enclosure 2:
ENGLISH LYRICS

MAHAPRJNA PARAMITA HRIDIAYA
(THE HEART SUTRA)

Avalokiteshvara Bodhisattva, practicing deep prajna paramita,
clearly saw that all five skandhas are empty, transforming all suffering and distress.
Shariputra, form is no other than emptiness, emptiness no other than form.
Form is exactly emptiness, emptiness exactly form.
Sensation, thought, impulse, consciousness are also like this.

Shariputra, all things are marked by emptiness:

not born, not destroyed,
not stained, not pure,
without gain, without loss.

Therefore in emptiness there is no form, no sensation, thought, impulse, consciousness.

No eye, ear, nose, tongue, body, mind.
No color, sound, smell, taste, touch, object of thought.
No realm of sight to no realm of thought.
No ignorance and also no ending of ignorance to no old age and death and also no
ending of old age and death.

No suffering, and also no source of suffering, no annihilation, no path.
No wisdom, also no attainment.
Having nothing to attain, Bodhisattvas live prajna paramita with no hindrance in the mind.

No hindrance, thus no fear.
Far beyond delusive thinking, they attain complete Nirvana.
All Buddhas past, present and future live prajna paramita and thus attain anuttara samyak sambodhi.

Therefore, know that prajna paramita is the great mantra, the wisdom mantra, the unsurpassed mantra, the supreme mantra, which completely removes all suffering.

This is truth, not deception. Therefore set forth the prajna paramita mantra, set forth this mantra and say: gone gone totally gone totally completely gone enlightened so be it

…………………………..
আরো পড়ুন:
নির্বাণ শতকাম

…………………………..
টিকা:

মহাপ্রজ্ঞাপারমিতা মন্ত্র: মহাপ্রজ্ঞাপারমিতা সূত্র ছিল প্রজ্ঞাপারমিতা গ্রন্থাবলির একটি বিশ্বকোষ তুল্য সংকলন। এটি নাগার্জুনের রচনা বলে কথিত। হিউয়েন সাঙ ও তার সহকারীরা এটি চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন। এই বইটি পঞ্চবিংশতিসাহস্রিকা প্রজ্ঞাপারমিতাসূত্র (২৫,০০০-পংক্তিবিশিষ্ট প্রজ্ঞাপারমিতা সূত্র) নামেও পরিচিত। -উইকিপিডিয়া।

* অবলোকিতেশ্বর হলেন বোধিসত্ত্বগণের অন্যতম মধ্যে যিনি সকল বোধিসত্ত্বের মধ্যে প্রকাশমান করুণার আধার। মূলধারার মহাযান বৌদ্ধধর্মে ইনিই হলেন সর্বাধিক পূজিত বোধিসত্ত্ব এবং সর্বাপেক্ষা অধিক সমাদৃত। অবলোকিতেশ্বর বোধিসত্ত্ব প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে যতক্ষণ এই পৃথিবীতে একটিও প্রাণী বদ্ধ থাকবে ততক্ষণ তিনি নির্বাণলাভ করবেন না। অবলোকিতেশ্বর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন তিব্বতি ভাষায় এনার নাম চেনরেজ্গি। ইনি হাতে পদ্ম ধারণ করে থাকেন বলে কখনও পদ্মপাণি হিসেবেও অভিহিত হন।

** “গাতে গাতে পারাগাতে পারাসামগাতে বোধি সোহা”- নাই নাই কোথাও নাই, চলে গেছে বোধি সব তাই তুমি হও বোধি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!