জ্ঞানবান পুত্র পিতার আনন্দজনক, কিন্তু হীনবুদ্ধি পুত্র মাতার খেদজনক। দুষ্টতার ধন কিছুই উপকারী নয়, কিন্তু ধার্মিকতা মৃত্যু হইতে উদ্ধার করে। সদাপ্রভু ধার্মিকের প্রাণ ক্ষুধায় ক্ষীণ হইতে দেন না; কিন্তু তিনি দুষ্টদের কামনা দূর করেন। যে শিথিল হস্তে কর্ম করে, সে দরিদ্র হয়; কিন্তু পরিশ্রমীদের হস্ত ধনবান করে।
যে গ্রীষ্মকালে সঞ্চয় করে, সে বুদ্ধিমান পুত্র; যে শস্য কাটিবার সময় নিদ্রিত থাকে, সে লজ্জাজনক পুত্র। ধার্মিকের মস্তকে বহু আর্শীবাদ বর্ত্তে; কিন্তু দুষ্টগণের মুখ উপদ্রব ঢাকিয়া রাখে। ধার্মিকের স্মৃতি আশীর্বাদের বিষয়, কিন্তু দুষ্টদের নাম পচিয়া যাইবে। বিজ্ঞচিত্ত লোক আজ্ঞা গ্রহণ করে, কিন্তু অজ্ঞান বাচাল পতিত হইবে।
যে সিদ্ধতায় চলে, সে নির্ভয়ে চলে; কিন্তু কুটিলাচারীকে চেনা যাইবে। যে চক্ষু দ্বারা ইঙ্গিত করে, সে দুঃখ দেয়; আর অজ্ঞান বাচাল পতিত হইবে। ধার্মিকের মুখ জীবনের উনুই; কিন্তু দুষ্টগণের মুখ উপদ্রব ঢাকিয়া রাখে। দ্বেষ বিবাদের উত্তেজক, কিন্তু প্রেম সমস্ত অধর্ম আচ্ছাদন করে।
জ্ঞানবানের ওষ্ঠাধারে প্রজ্ঞা পাওয়া যায়, কিন্তু বুদ্ধিবিহীনের পৃষ্ঠের জন্য দণ্ড রহিয়াছে। জ্ঞানবানেরা জ্ঞান সঞ্চয় করে, কিন্তু অজ্ঞানের মুখ আসন্ন সর্বনাশ ধনবানের ধনই তাহার দৃঢ় নগর, দরিদ্রদিগের দরিদ্রতাই তাহাদের সর্বনাশ। ধার্মিকের শ্রম জীবনজনক, দুর্জ্জনের উপস্বত্ব পাপজনক।
যে শাসন মানে, সে জীবন-পথে চলে; কিন্তু যে অনুযোগ ত্যাগ করে, সে ভ্রান্ত হয়। যে দ্বেষ ঢাকিয়া রাখে, তাহার ওষ্ঠাধর মিথ্যাবাদী; আর যে পরীবাদ রটায়, সে হীনবুদ্ধি। বাক্যের বাহুল্যে অধর্মের অভাব নাই; কিন্তু যে ওষ্ঠ দমন করে সে বুদ্ধিমান।
ধার্মিকের জিহ্বা উৎকৃষ্ট রৌপ্যবৎ, দুষ্টদের অন্তঃকরণ স্বল্পমূল্য। ধার্মিকের ওষ্ঠাধার অনেককে প্রতিপালন করে, কিন্তু অজ্ঞানেরা বুদ্ধির অভাবে মারা পড়ে। সদাপ্রভুর আশীর্বাদই ধনবান করে, এবং তিনি তাহার সহিত মনোদুঃখ দেন না।
কুকর্ম করা অজ্ঞানের আমোদ, আর প্রজ্ঞা বুদ্ধিমানের আমোদ। দুষ্ট যাহা ভয় করে, তাহার প্রতি তাহাই ঘটিবে; কিন্তু ধার্মিকদের বাসনা সফল হইবে। যখন ঘূর্ণবায়ু বহিয়া যায়, দুষ্ট আর নাই; কিন্তু ধার্মিক নিত্যস্থায়ী ভিত্তিমূলস্বরূপ। যেমন দন্তের পক্ষে অম্লরস ও চক্ষের পক্ষে ধূম, তেমনি আপন প্রেরণকর্ত্তাদের পক্ষে অলস।
সদাপ্রভুর ভয় আয়ুবৃদ্ধি করে; কিন্তু দুষ্টদের বৎসর-সংখ্যা হ্রাস পাইবে। ধার্মিকদের প্রত্যাশা আনন্দজনক; কিন্তু দুষ্টদের আশ্বাস বিনাস পাইবে। সদাপ্রভুর পথ সিদ্ধের পক্ষে দুর্গ, কিন্তু তাহা অধর্মাচারীদের পক্ষে সর্বনাশ। ধার্মিক লোক কখনও বিচলিত হইবে না; কিন্তু দুষ্টগণ দেশে বাস করিবে না।
ধার্মিকের মুখ প্রজ্ঞা-ফলে ফলবান; কিন্তু কুটিল জিহ্বা ছেদন করা যাইবে। ধার্মিকের ওষ্ঠাধার সন্তোষের বিষয় জানে, কিন্তু দুষ্টদের মুখ কুটিলতা মাত্র। ছলনার নিক্তি সদাপ্রভুর ঘৃণিত; কিন্তু ন্যায্য বাটখারা তাঁহার তুষ্টিকর। অহংকার আসিলে অপমান ও আইসে; কিন্তু প্রজ্ঞাই নম্রদিগের সহচারী।
সরলদের সিদ্ধতা তাহাদিগকে পথ দেখাইবে; কিন্তু বিশ্বাসঘাতকদের বক্রতা তাহাদিগকে নষ্ট করিবে। ক্রোধের দিনে ধন উপকার করে না; কিন্তু ধার্মিকতা মৃত্যু হইতে রক্ষা করে। সিদ্ধের ধার্মিকতা তাহার পথ সরল করে; কিন্তু দুষ্ট নিজ দুষ্টতায় পতিত হয়।
সরলদের ধার্মিকতা তাহাদিগকে উদ্ধার করে; কিন্তু বিশ্বাসঘাতকেরা নিজ নিজ কামনায় ধরা পড়ে। দুষ্ট মরিলে তাহার আশ্বাস নষ্ট হয়; আর অধর্মের প্রত্যাশা বিনাশ পায়। ধার্মিক সংকট হইতে উদ্ধার পায়, আর দুষ্ট তাহার স্থানে উপস্থিত হয়। মুখ দ্বারা পাষণ্ড আপন প্রতিবাসীকে নষ্ট করে; কিন্তু জ্ঞান দ্বারা ধার্মিকগণ উদ্ধার পায়।
ধার্মিকদের মঙ্গল হইলে নগরে উল্লাস হয়; দুষ্টদের বিনাশ হইলে আনন্দগান হয়। সরলদিগের আশীর্বাদে নগর উন্নত হয়; কিন্তু দুষ্টদের বাক্যে তাহা উৎপাটিত হয়। যে প্রতিবাসীকে তুচ্ছ করে, সে বুদ্ধিবিহীন; কিন্তু বুদ্ধিমান নীরব হইয়া থাকে। কর্ণেজপ গুপ্ত কথা ব্যক্ত করে, কিন্তু যে আত্মায় বিশ্বস্ত, সে কথা গোপন করে।
সুমন্ত্রণার অভাবে প্রজ্ঞালোক পতিত হয়; কিন্তু মন্ত্রি-বাহুল্যে জয় হয়। যে অপরের জামিন হয়, সে নিশ্চয় ক্লেশ পায়; কিন্তু যে জামিনের কর্ম ঘৃণ্য করে, সে নিরাপদ। অনুগ্রহশালিনী স্ত্রী সম্মান ধরিয়া রাখে আর দুর্দান্তেরা ধন ধরিয়া রাখে। দয়ালু আপন প্রাণের উপকার করে; কিন্তু নির্দয় আপন মাংসের কণ্টক।
দুষ্ট মিথ্যা বেতন উপার্জ্জন করে; কিন্তু যে ধার্মিকতার বীজ বুনে সে সত্য বেতন পায়। যে ধার্মিকতায় অটল, সে জীবন পায় কিন্তু যে দুষ্টতার পিছনে দৌড়ে, সে নিজ মৃত্যু ঘটায়। বক্রচিত্তেরা সদাপ্রভুর ঘৃণার পাত্র।
………………………………..
পবিত্র বাইবেল থেকে
পুণঃপ্রচারে বিনীত – প্রণয় সেন