ভক্ত রামকুমার আখ্যান
পয়ার
সাধুহাটি যুধিষ্ঠির বিশ্বাস হ’ল মত্ত।
পরিবার-সহ হ’ল হরিচাঁদ ভক্ত।।
তাহার ভগিনী হয় আনন্দা নামিনী।
প্রভু বলে ভক্তা মধ্যে তারে আমি গণি।।
নড়াইল গ্রামে ভক্ত শ্রীরামকুমার।
ভবানী নামিনী হয় ভগিনী তাহার।।
একদিন ঠাকুরকে আনিব বলিয়া।
ভাই বুনে পরামর্শ করিল বসিয়া।।
রাত্রিভরে সে ভবানী বধূগণে ল’য়ে।
ভক্তিরসে নানা মিষ্টি তৈয়ার করিয়ে।।
ব্রহ্ম মুহূর্তের কালে যাত্রা করিলেন।
তরী রামকুমার বাহিয়া চলিলেন।।
দু’দণ্ড আড়ই দণ্ড পথ পরিমাণ।
দণ্ডেকের মধ্যেতে তথায় চলি যান।।
ঘোর ঘোর ভোরকালে কেহ না গা তুলে।
হেনকালে ওঢ়াকাঁদি গিয়া পহুঁছিলে।।
ছড়া ঝাটি জল আনা গৃহাদি মার্জন।
রান্নাঘর পরিষ্কার প্রাঙ্গণ লেপন।।
গাত্রোত্থান করিয়া উঠিলা ঠাকুরানী।
মন জানি অন্তর্যামী সত্ত্বর উঠিল।
ভগবান ভবানীর নৌকায় বসিল।।
ভবানী উঠিল রামকুমার উঠিল।
ব’ঠে ধরি ধীরে তরী বাহিয়া চলিল।।
অর্ধ পথে যেতে যেতে হ’ল ঘোর মেঘ।
দক্ষিণে বাতাস বহে অতিশয় বেগ।।
প্রভু রামকুমারে বলেন কি করিবি।
এই বাতাসেতে নৌকা কেমনে বাহিবি।।
কুমার বলেন প্রভু মেঘে নাহি ডরি।
আপনি আছেন নায় এই শঙ্কা করি।।
মহাপ্রভু বলে তবে না হও বিমুখ।
দিলাম উহারে ভার যা ইচ্ছা করুক।।
তরণী বাহিয়া যায় শ্রীরামকুমার।
চতুর্দিকে মেঘ দিনে ঘোর অন্ধকার।।
অবিরলধারে ঘন মেঘ বৃষ্টি হয়।
বৃষ্টিবিন্দু নাহি পড়ে ঠাকুরের নায়।।
নিরাপদে উদয় হইল নড়াইল।
আনন্দে প্রভুকে ল’য়ে সেবা করাইল।।
পায়স পিষ্টক আদি লাড্ডুক শাল্যন্ন।
ডাল বড়া ভাজা শাক শুক্তাদি ব্যঞ্জন।।
সেবাদি শুশ্রূষা ইষ্ট গোষ্ঠ দিবা ভরি।
সন্ধ্যা সমাগম ক্রমে হইল শর্বরী।।
প্রভুকে নিজ বাসরে রাখিল কুমার।
গেল দিন কহে দীন কবি সরকার।।