মা সারদা দেবীর বাণী : এক
চঞ্চল মনকে শান্ত করে। চিন্তা-ভাবনার দিশাকে নয়া মোড় দেয়। নেতিবাচক ভাবনাকে দূরে সরিয়ে দিতে সাহায্য করে। ধৈর্যের শিক্ষা দেয়। মানুষকে কর্মঠ হতে শেখায়। বহুযুগ আগে যেসব কথা তিনি বলে গিয়েছেন, যা অনুভব করে গিয়েছেন, বর্তমান সমাজেও তা প্রযোজ্য। মা সারদা দেবী বলেছেন-
‘ঠাকুর বলতেন, ‘ছিপ ফেলে বসলে কি রোজই রুই মাছ পরে? অনেক মাল-মশলা নিয়ে একাগ্র হয়ে বসলে কোন দিন বা একটা এসে পরল, কোন দিন বা নাই পরল, তাই বলে বসা ছেড়ো না। জপ বাড়িয়ে দাও।’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘যে ব্যাকুল হয়ে ডাকবে সেই তাঁর দেখা পাবে। এই সেদিন একটি ছেলে মারা গেল। আহা, সে কত ভাল ছিল! ঠাকুর তাদের বাড়ি যেতেন। একদিন ট্রামে পরের গচ্ছিত ২০০ টাকা তার পকেট থেকে মারা যায়, বাড়ি এসে তা দেখে। ব্যাকুল হয়ে গঙ্গার ধারে গিয়ে কাঁদছে, ‘হায় ঠাকুর, কী করলে!’ তার অবস্থাও তেমন ছিল না যে নিজে ঐ টাকা শোধ করবে। আহা, কাঁদতে কাঁদতে দেখে ঠাকুর সামনে এসে বলছেন,
‘কাঁদছিস্ কেন? ঐ গঙ্গার ধারে ইটচাপা আছে দ্যাখ।’ সে তাড়াতাড়ি উঠে ইটখানা তুলে দেখে, সত্যই এক তাড়া নোট! শরতের কাছে এসে সব বললে। শরৎ শুনে বললো, তোরা তো এখনো দেখা পাস, আমরা কিন্তু আর পাইনে।’ ওরা পাবে কি? ওরা তো দেখে শুনে এখন গ্যাঁট হয়ে বসেছে। যারা ঠাকুরকে দেখেনি, এখন তাদেরই ব্যাকুলতা বেশি। যদি শুদ্ধ মন হয়, কেন ধ্যানধারণা হবে না? কেন দর্শন হবে না? জপ করতে বসলুম তো আপনা হতেই ভিতর থেকে গরগর করে নাম উঠতে থাকবে, চেষ্টা করে নয়। জপধ্যান সব যথাসময়ে আলস্য ত্যাগ করে করতে হয়।’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘দক্ষিণেশ্বরে একদিন শরীরটা খারাপ লাগায় একটু দেরিতে উঠেছি। তখন রাত তিনটায় উঠতুম। পরদিন আরও দেরিতে উঠলুম। ক্রমে দেখি আর সকালে উঠতেই ইচ্ছা যাচ্ছে না। তখন মনে হল, ওরে এইতো আলস্য পেয়েছে। তারপর জোর করে উঠতে লাগলুম, তখন সব পূর্বের মত হতে লাগল। এসব বিষয়ে রোক করে অভ্যাস রাখতে হয়।’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘জানবে কেউ না থাক, তোমার একজন মা আছেন। আমি মা থাকতে ভয় কি?’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘সন্তোষের সমান ধন নেই, আর সহ্যের সমান গুণ নেই।’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘ঠাকুরের জগতের প্রত্যেকের উপর মাতৃভাব ছিল। সেই মাতৃভাব জগতে বিকাশের জন্য আমাকে এবার রেখে গেছেন’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘যেমন ফুল নাড়তে নাড়তে ঘ্রাণ বের হয়,চন্দন ঘষতে ঘষতে গন্ধ বের হয়, তেমনই ভগবত তত্ত্বের আলোচনা করতে করতে তত্ত্বজ্ঞানের উদয় হয়’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘ভগবান দর্শন বলো, ধ্যান বল, সবই মন। নিত্য ধ্যান করবে। কাঁচা মন কিনা? ধ্যন করতে করতে মন স্থির হয়ে যাবে। সর্বদা বিচার করবে। যে বস্তুতে মন যাচ্ছে তা অনিত্য চিন্তা করে ভগবানে মন সমর্পণ করবে’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘একশো জনকে খাওয়াতে হবেনা; কিন্তু চোখের সামনে একজন ক্ষুদার্তকে দেখলে তাকে একটু খেতে দিও’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘যারা এসেছে, যারা আসেনি, যারা আসবে। আমার সকল সন্তানকে জানিয়ে দিও, আমার আশীর্বাদ সকলের উপর আছে’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘সংসারে কেমন করে থাকতে হয় জানো? যখন যেমন তখন তেমন, যাকে যেমন তাকে তেমন, যেখানে যেমন সেখানে তেমন’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘যে অল্পেতে তুষ্ট থাকে, তার কাছে এই পৃথিবীর সব কষ্ট সহজ হয়ে যায়’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘দেখো মা, যেখান দিয়ে যাবে তার চতুর্দিকে কি হচ্ছে না হচ্ছে তা সব দেখে রাখবে। আর যেখানে থাকবে সেখানকার সব খবরগুলি জানা থাকা চাই, কিন্তু কাউকে কিছু বলবে না’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
‘যিনি ব্রহ্ম, তিনিই শক্তি আর তিনিই মা। দরকার নেই ফুল, চন্দন, ধূপ, বাতি, উপাচারের। মাকে আপন করে পেতে শুধু মনটাকে দেও তাঁরে’ -শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী
…………………
আরও পড়ুন-
শ্রীরামকৃষ্ণদেবের বাণী: এক
শ্রীরামকৃষ্ণদেবের বাণী: দুই
মা সারদা দেবীর বাণী: এক
মা সারদা দেবীর বাণী: দুই
…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….