ভবঘুরেকথা
ফকির কাশেম আলী চিশতী

৫১
সঙ্গ গুণে, রঙ্গ ধরে।
পরশের ছোঁয়ায়, পরশ হয়।

৫২
বাঁশী বাজে ধা-ধা।
রাধা’য় শোনে রা-ধা।

৫৩
সাপ, স্বপন; পোনা;
-যে না কয়;
সে-ই একজনা।

৫৪
বাউল-বাউলি দিয়া কয়।
অন বিচারে সাধু মরে।

৫৫
ছোট্ট শব্দ ‘কল্পনা’,
-কথা কিন্তু অল্প না।
রাঢ়ী মাগী(অতৃপ্ত মন) স্বপ্ন দ্যহে,
টেরাক ভইরা ভাতার(কাংখিত বিষয়) আহে।

৫৬
রস থাকতে কর বশ,
রস শুকাইলে খস্ খস্।

৫৭
আত্মসমর্পণে আত্মসমর্থন।

৫৮
ওই! তোরা আমারে থামা, তোরা আমারে থামা;
নইলে কইলাম নিজেই থাইম্যা পড়মু।

৫৯
ক্ষেতের চাক, ক্ষেতে ভাঙ্গে।

৬০
অনুমানে ভজন নাস্তি।

৬১
যা নিন্দে, তা পিন্দে।
সাইধ্যা মাইধ্যা মুরীদ,
ঘইষ্যা মাইজ্য পিরীত,
-টিকে না।

৬২
দাঁতে ছাড়েনা জিহ্বা’রে।

৬৩
সাবধানের মাইর নাই।
মাইরেরও সাবধান নাই।

৬৪
বাছট(বাছাই) কইরা চলতে অয়।

৬৫
চাষী বীজ বুইনা হাল দেয় না।
জনগণ তো বীজ বুইনা হাল দেয়।

৬৬
স্বোয়াদ-দ্বোয়াত।
দোয়াতে কলম চুবাইয়ো হিসাব কইরা।

৬৭
ধরতে হবে কলে কলে।
যদি ধরবা বাহুবলে,
-তইলে পড়বা আরো তলে।
যে যারে ধায়, সে তারে পায়।

৬৮
মানলে-মানী, না মানলে-অকমানি।

৬৯
সকল মান ধারন করছে যে, সে-ই মুসলমান।

৭০
দর কইরা বেশ নিছে যে, সে-ই দরবেশ।

৭১
তরজমা’ই ফকিরি।

৭২
এক জবানে আউলিয়া।

৭৩
নীলা-নিত্য। লীলা বুঝ, নৃত্য কর।

৭৪
পাট বুইঝা পাট কর।

৭৫
সিন-স্বীন; সিনা ধইরা চিন।

৭৬
সৎ পুত্র কোলের ভূষন।-কোলে কোলে থাকে।

৭৭
চিন দেশে যাইতে হইলে, চেনা লোকের সঙ্গ কর।

৭৮
মিললে রুটি হোগা, না মিললে রোজা।
হইলে ভাল, না হইলে আরো ভাল।
আসল খাও, আসল হও।

৭৯
দাতার হাত উপরে থাকে, গ্রহীতার হাত নীচে।

৮০
ফকিরের পোলা, নেয়ারা না করলে খায় না।
(একজন সাধক, সেঁধে না খাওয়ালে সে খায় না।)

৮১
মজা’য় মিলে সাজা।
আনন্দ হতে নিত্যানন্দ।

৮২
বাইছা খাইলে, বাইচা থাকা যায়।
রাইখা খাইলে, বিলাইয়া যাওয়া যায়।

৮৩
তুমি-আমি, দু’য়ের মাঝে- কে স্বাধীন? কে পরাধীন?!

৮৪
এক বিন্দু অসতী থাকতে,
সতী’র দেখা মিলবে না।

৮৫
যার আছে এক, তার নাই ঠেক।

৮৬
খেয়ালের নেয়াল নাই।
স্মরনের মরন নাই।

৮৭
স্মরণেই চরণ।

৮৮
মানুষের পাছে মানুষ থাকে,
গ্রামের পাছে গ্রাম।

‘তাল গাছ’ই আমার সীমা।
(একজন প্রকৃত মানুষই একটা তাল গাছ/তালের মানুষ)

৮৯
মানুষের কোনো অভাব নাই, স্বভাবের অভাব ছাড়া।

৯০
সব গাছের গোড়া নীচে।
মানুষের গোড়াটা উপরে।
গোড়াটা উল্টাইয়া দেখতে অয়-
উল্টা-পাল্টা করলে, ভাও মিলে।

বিসমিল্লাহ্ সেই গাছের গোড়া।
ইল্লাল্লাহ্ তার মূল।
ফুলে পাতায় জপে নাম-
মোহাম্মদ রাসূল।

৯১
একা কভূ প্রেম চলে না,
ভাবছেন আমার সাই রাব্বানা।
অতএব,একজন মানুষের দরকার আছে।

৯২
সব গাছের গোড়া নীচে।
মানুষের গোড়াটা উপরে।
গোড়াটা উল্টাইয়া দেখতে অয়।
উল্টা-পাল্টা করলে ভাও মিলে।

৯৩
সবাই কিন্ত মানুষ না, বাবা। মানুষ আর জনগন
পার্থক্য আছে। পুরা পৃথিবী বেইচ্যা একটা মানুষের
মূল্য অইব না। মানুষ মাত্রই আউলিয়া। মানুষের
সংখ্যা আদিতে যা ছিল, এখনও তা-ই আছে।
মানুষের সংখ্যা বাড়েও না,কমেও না। মানুষ মাত্রই
আউলিয়া।

৯৪
নবী’র মতে যার মত, সে-ই নবী’র উম্মত।।

৯৫
সকালে খাইলে, অকালে মরে।

৯৬
যে ধরে গুরু’র আকৃত্তি,
সে পায় গুরু’র সম্পত্তি।

গুরু কোন মানুষ নয়।
গুরু হইল জ্ঞান।
বাইরে শিক্ষাগুরু থেইক্যা শিক্ষা লইয়া,
ভিতরে দীক্ষাগুরুকে জাগাইয়া লইতে অয়।

৯৭
জীবে করে ভোগ।
মানুষ করে উপভোগ।

৯৮
যদি মুখের কথায় মিলতো খোদা,
না হইত মানুষ অনুরাগী।

৯৯
জপো ঐ নাম হৃদকপটে,
পশু আত্মা যাবে দূরে;
মানুষ আত্মা বসবে ঘরে;
স্বভাব গেলে তোমার অভাব থাকবে না।

১০০
জীবাত্মার জন্য আত্মশুদ্ধি।
মানবাত্মা করে আত্মোৎসর্গ।
একটি কোরবানী,অপরটি ‘মহররমা’। মহররমা’ই সর্বোচ্চ কোরবানী।
হিযরত না করলে হযরত হওয়া যায় না।
জীবাত্মা (রুহ হায়ানী) থেকে মানবাত্মায় (রুহ ইনসানী) উত্তরণই ব্যাক্তি সাপেক্ষে হিযরতের অন্তর্নিহিত শিক্ষা। কোরবানী ও ‘যুদ্ধ ই আকবর’ (নফস্ এর বিরূদ্ধে জেহাদ) একই নির্দেশনা প্রদান করে।

<<ফকির কাশেম আলী চিশতীর বাণী : এক ।। ফকির কাশেম আলী চিশতীর বাণী : তিন>>

………………………
আরো পড়ুন-
ফকির কাশেম আলী চিশতী কাদ্দসাল্লাহ সের্রুহু’র বাণী : এক
ফকির কাশেম আলী চিশতী কাদ্দসাল্লাহ সের্রুহু’র বাণী : দুই
ফকির কাশেম আলী চিশতী কাদ্দসাল্লাহ সের্রুহু’র বাণী : তিন
ফকির কাশেম আলী চিশতী কাদ্দসাল্লাহ সের্রুহু’র বাণী : চার
ফকির কাশেম আলী চিশতী কাদ্দসাল্লাহ সের্রুহু’র বাণী : অন্যান্য

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!