-মূর্শেদূল কাইয়ুম মেরাজ
জোরাজুরি করেও দোকানি মোহম্মদ ওমর আলীকে কিছুতেই চায়ের দাম দেয়া গেলো না। তিনি নাকি কিছুইতেই টাকা নিতে পারবেন না। শেষে ওমর আলী জিহ্বায় কামড় দিয়ে বলিই উঠলো, মাফ করবেন স্যার বাপজির মেহমানের কাছ থেইক্ক্যা পয়সা নিতে পারমু না। ধর্মে সইবো না।
অগত্যা তিন কাপ চা আর এক গ্লাস পানির দাম না দিয়েই বেঞ্চিটাতে পুনরায় বসে পরতে হলো অগ্নিকে। গান শেষ করে সেই যে জীবন দা’ চোখ বন্ধ করেছেন; এখনো সেভাবেই আছেন। তাকে বিরক্ত করতে ইচ্ছে হলো না। বাদামী রঙের কুকুরটা অনেকক্ষণ ধরেই ঘুড়ঘুড় করছিল আশপাশ দিয়ে।
কালো রঙের কুকুরটা অনেকটা দূরে একটা গাছের ছায়ায় বসে আরাম করছে। অগ্নি মাতা ঘুরিয়ে বাদামী কুকুরটার দিকে দৃষ্টি দিলো। কুকুরটাকে দেখেই মনে হচ্ছে ও কিছু একটা মতলবে আছে। আশপাশ দিয়েই ঘুরছে; ফিরে ফিরে দোকানিকে দেখছে। কিছুটা দূরে চলে যাচ্ছে আবার ফিরে আসছে।
দোকানি ওমর আলী নিরাশক্ত ভঙ্গিতে অনেক সময় তার দিকে তাকিয়ে থেকে একসময় হালকা মাথা ঝাকিয়ে একটা ইশারা দিল। ইশারা পাওয়া মাত্রই গুটিগুটি পায়ে অগ্নির বেঞ্চির পাশের ফাঁকা জায়গাটায় আয়েশ করে বসে একটানা লেজ নাড়াতে শুরু করে দিলো বাদামী কুকুরটা।
বেশ খুশি খুশি ভঙ্গিতে দোকানির দিকে তাকিয়ে নিচু স্বরে বার দুয়েক অদ্ভুত স্বরে গড়গড় করে ডেকেও উঠলো। দোকানী ওমর আলী হাতের গামছাটা ঘাড়ে ঝুলিয়ে একটা খবরের কাগজের উপরে একটা আস্ত বনরুটি দিয়ে গেলো। বাদামী রঙের কুকুরটার বাদামী রঙের রুটি খাওয়ার দৃশ্যটা মুগ্ধ হয়ে দেখতে দেখতে ভাবনার ভেতরে ডুবে গেলো অগ্নি।
এটাই ফুলের ধর্ম বাপ। সাধুগুরুরাও তাই। তারা জ্ঞান বিলায়। তাদের যে জায়গাতেই রাখেন না কেনো; করবস্তান-শ্মাশান বলেন আর মন্দির-মসজিদ বলেন। যে আদি সত্য জানতে পারে, যে দিব্য জ্ঞানী হয়, সে সহজ মানুষ হয় তার কাজই সৌরভ ছড়ানো। আর সহজ মানুষ হইলো ফুলের মতো; সে কেবল সৌরভ ছড়ায়।
কত অল্পতেই খুশি হওয়া যায়-সুখি হওয়া যায়। একটা কুকুরের খাবারের দৃশ্য দেখেও মনটা ভরে উঠে কখনো কখনো-আবার কখনো কখনো শত কোটি টাকার কনট্রাক্ট পেয়ে গেলেও সুখ সৃষ্টি হয় না। আসলে মন বড়ই অদ্ভুদ আর রহস্যময় জটিল বিষয়।
জীবন দা’ এখনো সেই লোকনাথ ব্রহ্মচারী স্টাইলে চোখ বন্ধ করেই বসে আছেন। একটা ছবি তুলতে মন চাইলো অগ্নির। কি নির্মল দেখাচ্ছে ভদ্রলোককে। কিন্তু লোভটা সামলে নিলো। ফোনটা অন করলেই এই যে মনে একটা প্রশান্তি বয়ে যাচ্ছে, মুর্হূতে তা শেষ হয়ে যাবে। একের পর এক ফোন আসতে শুরু করে দিবে। বরঞ্চ বন্ধই থাক ফোনটা।
খিদেটা একটু দমে গেছে পরপর দু কাপ চা খাওয়ার পর। ভাবতেই অবাক লাগছে, সকালে কি পরিমাণ তাড়াহুড়ো ছিল। জীবনের কত হিসেব কিতাব ছিল। কত কি করার ছিল। কিন্তু এই ঘণ্টাখানেক সময়ে কতকিছু পাল্টে গেল। তবে এই রেশ কতসময় থাকবে তা কে জানে। আদৌ থাকবে কিনা সেটাও প্রশ্ন।
সেটা নিয়ে ভাবতেও ইচ্ছে করছে না আপাতত। অনেকদিন পর একটা ব্যস্ত দিন কি করে প্রশান্তিতে ভরে উঠলো এই মুর্হূতে এটা ভাবতে বিস্ময় লাগছে। অফিসের লোকজন যদি তাকে দেখে কাজ বাদ দিয়ে এক ফকির টাইপের লোকের সাথে বসে চা খাচ্ছে টং দোকানে বসে তাহলে তাদের তব্দা লেগে যাবে।
বাস্তবে তারও তব্দা লেগে যায় নাই তো? সেও তো একটা ঘোরের মধ্যেই আছে। তাই না?! তাই তো?
-বাপ! গাছে ফুল দেখছেন?
অগ্নি চমকে উঠলো জীবন দা’র কথায়। চোখ বন্ধ রেখেই জীবন দা’ বলে চললো, – ফুল সে তার আপন মহিমায় ফোটে। কেউ দেখলেও ফোটে, কেউ না দেখলেও ফোটে। সে ফোটে সৌরভ ছড়ায় এটাই তার ধর্ম। সেই ফুল দিয়ে প্রেম নিবেদনও হয়, মন্দিরের পুজাও হয়, শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাও জানানো হয় আরো কত কি করা হয়।
ফুল যেমন আনন্দঘন মুর্হূতে ব্যবহার করা হয় আবার শোকে-দু:খেও ব্যবহার হয়। এই ধরেন মরা মুনষেরও মানুষ ফুল দেয়; মরা মানুষের ছবিতে ফুল দেয়। প্রত্যেক জায়গায় ফুলের কাজ সমান। ফুল তার সৌরাভ ছড়ায়, সৌন্দর্য বিলায়; মানে রূপ-রস-গন্ধ সব বিলিয়ে দেয়।
এটাই ফুলের ধর্ম বাপ। সাধুগুরুরাও তাই। তারা জ্ঞান বিলায়। তাদের যে জায়গাতেই রাখেন না কেনো; করবস্তান-শ্মাশান বলেন আর মন্দির-মসজিদ বলেন। যে আদি সত্য জানতে পারে, যে দিব্য জ্ঞানী হয়, সে সহজ মানুষ হয় তার কাজই সৌরভ ছড়ানো। আর সহজ মানুষ হইলো ফুলের মতো; সে কেবল সৌরভ ছড়ায়।
পহাড়ে-জঙ্গলে-আশ্রমে বা নগরে যেখানেই থাকুক। যার যা ধর্ম প্রকৃতির নিয়মে সে সেটা পালন কইরা যায়; পার্থক্য হইলো কেউ জেনে-বুঝে করে আর কেউ তা না বুঝে। এই আর কি…
-ভালো বলেছেন তো! ফুলের কাজ সৌরভ ছড়ানো তা সকল পরিবেশেই সে তার বৈশিষ্ট্য অটুট রাখে। দারুণ! পরীক্ষায় একবার ভাব সম্প্রসারণে এসেছিল “পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না”। উত্তরে কি লিখেছিলাম মনে নেই। তবে আপনার মতো এভাবে কখনো ভাবতে পারিনি।
আসলে আমরা বিখ্যাত বিখ্যাত লোকজনের কথা উদৃতি দিয়ে কত কি বলি, কত কি লিখি; আসলে বুঝি কতটা সেটা নিয়ে ভাবিনা কখনো। পরীক্ষায় বেশি নাম্বার বা তর্কে জিতে গেলেই আমরা খুশি।
-খুশি থাকাটাই বড় ব্যাপার বাপ। অন্যের ক্ষতি এমন কাজ না করলেই হইলো বাপ। এতো কিছু বুইঝ্যা সকলের কাম নাই।
-কি বলেন এই সব। এগুলো জানতে হবে না? আচ্ছা বাদ দেন। আমি তর্কে যেতে চাচ্ছি না। একটা প্রশ্ন কিছুক্ষণ ধরে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রশ্নটা করি?
-করেন বাপ।
-আচ্ছা! আপনি এই যান্ত্রিক শহরে কি করছেন? হিসেব অনুযায়ী তো আপনার এ শহরে থাকবার কথা না। এ শহরে তো আমারই দম বন্ধ হয়ে আসে। আপনি কেন পরে আছেন এই শহরে?
-বাপ! যারা মোহের মধ্যে থাকে তারাই ভালো-খারাপের ভাগ করতে পারে। ভাল-মন্দ ভাগ করার জ্ঞান আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষের নাই বাপ। আচ্ছা বাপ! সুখ খুঁজলে কি আর সুখ পাওয়া যায়?
দু:খ না চাইলেই কি আর দু:খ দূরে থাকে? সংসারের নিয়মানুযায়ী সুখ যেমন আসবে, তেমনি দু:খও আসবে। বাছবিচার করলেই গোলে পরতে হয়। সবকিছু হইলো আপনি কেমন করে দেখছেন। সুখ-দু:খ, ভালো-মন্দ, শুভ-অশুভ এসবই দেখবার ভঙ্গি মাত্র বাপ।
আর মহাত্মা মানুষ তো আর পুস্তক বা শাস্ত্র না যেনো গোটা লাইব্রেরী; তাই মহৎরে সম্মান দিতে হয়। গুরুরে সম্মান দিতে হয়-ভক্তি দিতে হয়। সম্মান না দিতে জানলে-শ্রদ্ধা না করতে পারলে তো ভক্তি আসে না। আর ভক্তি না থাকলে মনে জন্ম নেয় সন্দেহ। আর এই সন্দেহই হইলো সর্বনাশের শিরোমণি।
-বলেন কি সুখ আর দু:খ একই? কোনো পার্থক্য নাই!
-কি করে বোঝাই আপনারে। বিষয়ের প্রতি আসক্তি থাকলে এগুলো মানুষরে কাবু করে। আর আসক্তি না থাকলে এগুলো কোনো প্রভাব তৈরি করতে পারে না।
-কিছু্ই বুঝলাম না।
-মনে করেন যখন অসুখ হয়। ধরেন আপনার দাঁত ব্যাথা শুরু হইলো। তখন আপনার মনে হইবো এই ব্যাথা থেকে মুক্তি পাইলেই সুখ। কিন্তু এখন আপনার দাঁতে ব্যাথা নাই; তাই বইলা কি আপনি এখন সেই জন্য সুখি? সুখ ভিন্ন বিষয় বাপ। দু:খ নিবৃত্ত হইলেই সুখ হয় না। মানে দু:খ নাই বইলাই সুখ, এটা ঠিক না। সুখকে বুঝতে গেলে গভীল জলে ডুবতে হয়। পরমের সন্ধান করতে হয়।
-বুঝছি জীবন দা’ আপনার কথা বোঝা আমার কর্ম্ম নয়। চলেন আগে লাঞ্চ করে আসি। তারপর শুরু থেকে শুরু করতে হবে। সহজ করে বলবেন যাতে আমি বুঝতে পারি-ধরতে পারি।
-বাপ! এ জ্ঞানবাণী সকলে নিতে পারে না; মূল কথা বলতে গেলে জ্ঞানী ভিন্ন অন্য কারো কাছেই এর কোন মূল্য নাই। একটু সহজ করে বলতে গেলে বলা যায়, জ্ঞানের কথা অলস ব্যক্তি শুনে আর মনে মানে ভাবে আমার দ্বারা হবে না, অজ্ঞানী ভাবে বড়ই কঠিন আমার জ্ঞানে কুলাবে না, চতুর ভাবে আমি এরচেয়ে অনেকবেশি জানি, মূর্খ তর্ক করে, জ্ঞানী সকল কিছুতেই জ্ঞান আহোরণ করে কারণ জ্ঞানীই জানে জ্ঞান কি করে নিতে হয়। বাকি সকলেই অভিনয় করে।
জ্ঞানী হতে গেলে লাগে দীর্ঘ সাধনা। লাগে সাধন ভজন। গুরুবাক্য মানতে হয়। মানে যারা জ্ঞানী তাদের যথাযথ সম্মান দিতে হয়; তাদের কথা বুঝে মানতে হয়। প্রত্যেকটা মানুষই এক একটা পুস্তক বা শাস্ত্র। তবে বাপ! মানুষরে পড়া শিখতে পারলে, প্রকৃতিরে পড়া শিখতে পারলে আর বই-পুস্তক-শাস্ত্র-কিতাব লাগে না।
আর মহাত্মা মানুষ তো আর পুস্তক বা শাস্ত্র না যেনো গোটা লাইব্রেরী; তাই মহৎরে সম্মান দিতে হয়। গুরুরে সম্মান দিতে হয়-ভক্তি দিতে হয়। সম্মান না দিতে জানলে-শ্রদ্ধা না করতে পারলে তো ভক্তি আসে না। আর ভক্তি না থাকলে মনে জন্ম নেয় সন্দেহ। আর এই সন্দেহই হইলো সর্বনাশের শিরোমণি।
সন্দেহ সাধকরে কোথাও পৌঁছাইতে দেয় না; খালি বিভ্রান্ত করে-খালি বিভ্রান্ত হয়। নিজেও বিভ্রান্ত হয় অন্যরে বিভ্রান্ত করে। আর জীবনে সন্তুষ্টি না থাকলে সন্দেহ দূর হয় না বাপজি।
-সন্তুষ্টি বিষয়টা আরেকটু খুলে বলবেন জীবন দা’?
-এই যে কিছুক্ষণ আগে হাসি হাসি মুখ করে আপনি বলছিলেন আপনার একটা কন্যা সন্তান আছে। আপনি আধুনিক পিতা; আপনি কন্যা সন্তান নিয়ে ব্যাপক খুশি। ছেলেমেয়েতে আপনি ভাগ করেন না। বিষয়টা সত্যও যেমন হইতে পারে আবার এমনো হতে পারে এটা আপনি লোককে দেখাচ্ছেন।
কিন্তু মনে মনে একটা পুত্র সন্তানের আশায় ঠিকই আরেকটা সন্তান নিবেন। যদি কোনো কারণে সেটিও কন্যা সন্তান হয় আবার পুত্র সন্তানের জন্য সন্তান নিবেন।
আর যদি না নেন তাহলে কিন্তু এটা প্রমাণ হয় না আপনি কন্যা সন্তানেই সুখি; মনে মনে আপনি পুত্র সন্তান চান কিন্তু আর্থিক সঙ্গতি নেই তিন সন্তান পুষবার বা তিন সন্তানকে সময় দেয়ার মতো সময় নেই; তার জন্যও সরে আসতে পারেন। কিন্তু মনে মনে পুত্র সন্তানের অসন্তুষ্টি থেকেই যাবে।
যাদের একটাই সন্তান দেখবেন তাদের বেশিভাগই পুত্র সন্তান। পুত্র সন্তানের আশায় সন্তান জন্ম দেয়া মানে কন্যা সন্তানে অসন্তুষ্টি। এই অসন্তুষ্ট চিত্ত নিয়ে সাধন হয় না।
সাধনে মনের কোনো সুপ্ত বাসনাও থাকতে পারে না বাপ। তার কাছে যেমন ভালো-মন্দের প্রভেদ নাই; সুখ-দু:খের প্রভেদ নাই তেমনি কন্যা বা পুত্র সন্তানেও কোনা পার্থক্য নাই। সে সব কিছুতেই তৃপ্ত। আর তৃপ্ত মনই সন্তুষ্টি দেয়।
অগ্নি মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়ে অনেকটা সময় চুপ করে থেকে ধরা গলায় বলল, -হুমম জীবন দা’ আপনার কথা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। আসলেই সাধনার পথ বড়ই কঠিন পথ। এখন মনে হচ্ছে আসলেই এ পথ সকলের জন্য না।
-না বাপ! এটাই সহজ পথ। আপনাদেরটাই কঠিন। অশান্তি আর অশান্তি। যত চাহিদা তত অশান্তি। তয় বাপ একদিনে তো আর সব ছাড়ান দেয়া যায় না। সেটা নিয়মও না। ধীরে ধীরে সব হয়। যদি শুদ্ধ মন থাকে।
-শুদ্ধ মন হবে কেমন করে জীবন দা’?
-বাপ! আপনি হয়তো দেখছেন বেশিভাগ মানুষ শেষ বয়সে এসে ধার্মিক হয়ে যায়। কেনো হয়?
-তখন মৃত্যু ভয় ঢুকে যায় মানে তাই হয়।
-মৃত্যু ভয় তো সকলেই আছে বাপ; তবে বয়স বাড়লে টের পাওয়া যায় সময় কমতেছে। মরতে কেউই চায় না, সকলেই বাঁচতে চায়। কিন্তু দেখবেন সে জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট না। কথায় কথায় বলবে, এরচেয়ে মরণ ভালো ছিল। এইটা কোনো জীবন? আবার সেই জীবনের জন্যই কত মোহ, কত মায়া, কত আসক্তি তাই না বাপ?
আসলে মানুষ অবলম্বন খোঁজে প্রতিমুর্হূতেই। সে সম্পর্ক গড়ে তোলে। তার ভেতরে সেই অবলম্বন খুঁজতে থাকে। কিন্তু বয়স বাড়তে থাকলে সে বুঝতে পারে এসব সম্পর্ক আসলে অবলম্বন না। তখনই সে বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়। বুঝতে পারে এই অবলম্বন তাকে কোথাও পৌঁছাতে দিবে না। তখন সে নতুন অবলম্বন খুঁজতে শুরু করে।
আর যেহেতু সারাজীবন মায়া-মোহ-আসক্তিতেই ছিল তাই সেই লোভও ছাড়তে পারে না। তখন সে এমন নতুন পথ খুঁজতে চায় যেটাতে জাগতিক সম্পর্ক না থাকলেও তাতেও প্রাপ্তি থাকবে। যে বাসনা-কামনাগুলো পূর্ণ হয়নি সেগুলোও যাতে পূর্ণ হয় এমন পথ চায় সে। আর যেহেতু সে অধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে জ্ঞান রাখে না, তাই হাতের কাছে যা পায় তাতেই ডুব দেয়।
অগ্নি ঠোঁট বাঁকিয়ে সব বুঝেছে এমন করে একটা নি:শব্দ হাসি দিয়ে পকেট থকে ফোনটা বের করল। মোবাইলটা অন করা মাত্রই একের পর এক ম্যাসেজ আসতে লাগলো; সেগুলোকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে। অলনাইনে খাবার অর্ডার করে দিলো সকলের জন্য। কিন্তু ঠিকানা হিসেবে যখন বলা হলো রমনা পার্ক।
এই ডুব দেয়া খারাপ না; কিন্তু প্রাপ্তির আসায় ডুব দিলেই বিপদ। এতে নতুন করে বাসনাগুলো কামনায় রূপ নেয়। অল্পতেই অস্থির হয়ে ওঠে। আচরণে হয়ে উঠে উগ্র। সে যে জ্ঞান পেয়েছে বলে ভাবতে শুরু করেন তা সকলের উপর চাপিয়ে দিতে চায়। শুরু হয় নতুন বিভ্রান্তি।
মনে রাখবেন বাপ! তাঁর দিদার করতে হয় নি:স্বার্থরূপে। কোনোরূপ কামনা-বাসনায় মনে পুষে রাখলে তার দিদার হয় না। মন শুদ্ধ হলে তবেই না মনে মন মিলবে বাপজি। চাওয়া-পাওয়া থাকলে তো ব্যবসা-বাণিজ্য হয়ে গেলে। লেনদেন তো করবো কারবারি। ইসক্ করবো আসেক। মোহব্বত করবো প্রেমিক।
আর প্রেম তো প্রেমিকের সাথে হয় আর কারবারির সাথে মানুষ বান্ধে ঘর। যাতে দুইটা ভালো খাওয়াইতে পারে-পরাইতে পারে। তাই না বাপ? তার সাথে সহবাস হয়, মনবাস হয় কি?
-আপনি বারবার সব উল্টে-পাল্টে দেন জীবন দা’। আমি হতাশ নাকি বিমোহিত তা ঠিক বুঝতে পারছি না।
এতো সময় পর অগ্নি খেয়াল করলো। তাদের ঘিরে সেই টোকাইয়ের দল আর কুকুর দুটা বসে আছে। তারাও জীবন দা’র কথা শুনছে। অগ্নি বললো, -চলেন জীবন দা’ লাঞ্চ করে আসি।
-বাপ! এই পুলাপানরে থুইয়া তো আমি যাইতে পারবো না খাইতে, এক কাজ করেন আপনি খায়া আসেন।
অগ্নি কয়েক সেকেন্ড চিন্তা করে বললো, -চলেন সবাই যেয়ে খেয়ে আসি।
-বাপ! হেরা টোকাই, হোটেলে খাইতে গেলে সবাই ত্যক্ত হয়। বিষয়টা আমার ভালো লাগে না। আমার জন্য না। হেরা কেমন জানি আরষ্ট হইয়া যায়। সুখ কইরা খাইতে পারে না। মনে অশান্তি নিয়া খাওয়া দাওয়া ঠিক না।
অগ্নি ঠোঁট বাঁকিয়ে সব বুঝেছে এমন করে একটা নি:শব্দ হাসি দিয়ে পকেট থকে ফোনটা বের করল। মোবাইলটা অন করা মাত্রই একের পর এক ম্যাসেজ আসতে লাগলো; সেগুলোকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে। অলনাইনে খাবার অর্ডার করে দিলো সকলের জন্য। কিন্তু ঠিকানা হিসেবে যখন বলা হলো রমনা পার্ক।
তখন যিনি ঐপাশে অর্ডার লিখছিলেন তিনি সন্ধিহান হয়ে গেলেন। অগ্নি অনেক বুঝিয়ে বলার পর বিকাশে পেমেন্ট করে দেয়ার পর অর্ডার এপ্রুভ হলো। শেষ পর্যন্ত খাবার অর্ডার করতে পারায় মনটা ভালো লাগলো কিন্তু খাবার খবরটা হলো এখন ফোন অন রাখতে হবে কারণ খাবার নিয়ে আসলে তাকে খুঁজে পেতে তাকে ফোন করবে।
কোনো মতেই ম্যাজেসগুলো দেখা ঠিক হবে না। একবার ম্যাসেজ পড়তে শুরু করলেই সে অন্য জগতে চলে যাবে। আপাতত সেই ইচ্ছাটা হচ্ছে না। ফোনটাকে সাইলেন্ট মোডে রেখে ভয়েস রের্কড অপসন অন করে দিলো। সেদিক থেকে মনযোগ ঘুরিয়ে বললো, জীবন দা চলেন পার্কের ভেতরে যেয়ে বসি অর্ডার নিয়ে আসবে ভেতরে, এদিকটায় বেশ গরম।
টোকাই ছেলেপুলেগুলো খাবারের কথা শুনে বেশ উৎফুল্ল মন নিয়ে পার্কের ভেতরে হাঁটছে। একজন একটা রিকসার টায়ারকে লাঠি দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দৌড়ে আগে চলে যাচ্ছে আবার ফিরে আসছে। অগ্নি বুঝতে পারছে না সে এমন আচরণ কেনো করছে। জীবন দা’ নামক লোকটাকি তাকে সম্মোহিত করেছে?
নাকি সে নিজে সম্মোহিত হতে চাচ্ছে? সেও কি সেই বৃদ্ধদের মতো নতুন অবলম্বন খুঁজছে জীবনের? তাও আবার জীবন দা’র কাছে? মাথায় কিছুই খেলছে না। নাহ্! এ জীবন আসলেই রহস্যময়।
পার্কের ভেতর অদ্ভুত এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, কয়েকজন টোকাই দুটা কুকুর একজন আলখেল্লাধারী মাঝবয়সী মানুষ আর একজন পুরুদস্তুর কর্পোরেট যুবক ঘাসের উপর বসে পরম আনন্দে দুপুরের খাবার খাচ্ছে। দূর থেকে অনেকেই দৃশ্যটা দেখছে। কেউ কেউ ছবিও তুলে নিচ্ছে।
তবে পার্কের এইদিকটায় বেশি সমাগম নেই বলে ভিড় হয়নি। তবে মৎস ভবনের পাশের অংশে হলে এতোক্ষণে ছোটখাটো একটা ভিড় লেগে যেত সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
বন্ধুবান্ধব, অফিস কলিগ, আত্মীয়-স্বজন, পরিবার, ক্লাইন্ট, পরিচিতজনদের সাথে প্রায়ই অগ্নিকে বাইরে দামী দামী রেস্টুরেন্টে খেতে হয়। সেখানে বিভিন্ন নিয়ম মেনে মেপে মেপে খেতে হয়। এক এক পরিবেশে এক এক ধরণের এ্যাটিকেট মানতে হয়। তবে সে ছোট্টবেলার পর এতো আয়েশ করে আর কখনো খেয়েছে কিনা মনে করতে পারছে না অগ্নি।
বাড়িতে আর অফিসে ম্যাসেজ করে আবার ফোনটা বন্ধ করেছে অগ্নি। খাওয়া শেষে সমস্ত কিছু কাগজপত্র-প্যাকেট একসাথে করে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে টোকাই দল সাথে নিয়ে চলে গেছে। জীবন দা’ হাত দিয়ে পায়ের তলা মালিস করছেন লোকনাথ স্টাইলে বসে আধা চোখ মুদে।
হয়তো আরো অনেক অনেক আরো আরো বেশি আয়েশ করে আরাম পরিবেশে অসংখ্যবার খাবার খেয়েছে। তবে এটা স্বীকার করতেই হবে এতো বেশি প্রশান্তি আগে কখনো পায়নি। এমনটা অবশ্য বারবারই হয়, যখন নতুন কিছু মানুষ পায় তখন মনে হয় আগের সবকিছুই তুচ্ছ। হয়তো এখনো তেমনি হচ্ছে এরবেশি কিছু নয়; এই ভেবে মনে মনে শান্তনা দিতে লাগলো নিজেকে।
তারপরও ভাবতে লাগলো রাস্তার দুটি কুকুর, কিছু ময়লা ছেড়া জামাকাপড় পরা শিশু তার সাথে খাচ্ছে? সে কুকুর লাভার; বেশ পছন্দ করে কুকুর। বাড়িতে একটা কুকুর ছিল কিন্তু সময় দিতে পারে না বলে এক বন্ধুকে দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু রাস্তার কুকুর নিয়ে তার কোনো আদিখ্যাতা ছিল না কোনোকালেই। এখনো নেই।
কিন্তু কুকুর দুটিকে দেখে ভীষণ মায়া হচ্ছে। মনে হচ্ছে কত জনমের সম্পর্ক। আয়েশ করে গা এলিয়ে প্রায় চোখ মুদে ফ্রাইড চিকেন সে যেভাবে তারা খাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে বহুদিন এমন আমোদ তাদেরও হয়নি। আর মাঝেমাঝে যখন পরম কৃতজ্ঞতায় অগ্নির দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে তখন মনটা ভরে যাচ্ছে।
জীবন দা’ নিরামিষ দিয়ে পরম যত্নে ধীরে ধীরে খাচ্ছে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে তিনি অমৃত খাচ্ছেন। কিছু সময় আগে চা যেভাবে খেয়েছেন ঠিক তেমন তৃপ্তি নিয়েই খাচ্ছেন তিনি। কোনো হেলদোল নেই। তবে শিশুগুলোর খাওয়া দেখে বেশ লাগছে; তারা অর্ডার করেছে পিৎজা-বার্গার।
সেগুলো তারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে খাচ্ছে। অন্য সময় হলে নিশ্চয়ই এমন ছড়িয়ে ছিটিয়ে খাওয়ার জন্য সে বকাঝকা করত। তবে আজ দেখতে ভালোই লাগছে। জীবনে এমন খুব কম সময়ই আসে যখন কেবল দেখতে ভালো লাগে। সকল কিছুতেই আনন্দের সৌরভ ছড়াতে থাকে। তা কেবল আধো বোজা চোখে উপভোগ করতে হয় আর কিছু নয়।
বাড়িতে আর অফিসে ম্যাসেজ করে আবার ফোনটা বন্ধ করেছে অগ্নি। খাওয়া শেষে সমস্ত কিছু কাগজপত্র-প্যাকেট একসাথে করে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে টোকাই দল সাথে নিয়ে চলে গেছে। জীবন দা’ হাত দিয়ে পায়ের তলা মালিস করছেন লোকনাথ স্টাইলে বসে আধা চোখ মুদে।
অগ্নি ভাবছে একটা সিগারেট খেতে পারলে মন্দ হত না। কিন্তু এই পরিবেশটা নষ্ট করতে ইচ্ছেও করছে না। এই যে প্রতিদিন সিগারেটের ধোয়া ছেড়ে পরিবেশ নষ্ট করে আসছে; তা নিয়ে আগে কখনো অনুশোচনা হয়নি; আজ হচ্ছে কেনো? বিষয়টা ভাবতে হবে, গভীরভাবে ভাবতে হবে।
পরিবেশ আন্দোলনে অনলাইনে বড় বড় নীতির কথা বললেই হবে না নিজেও ভূমিকা রাখতে হবে। সেটা রাজপথে হতেই হবে এমন তো নয়। নিজেও তো চেষ্টা করা যেতে পারে। এই নিজেই যদি পরিবেশ নষ্ট না করি তাহলে তো ক্ষুদ্র হলেও ভূমিকা রাখা যায়। এমনি ভাবতে ভাবতে ঝিমুনে চলে আসছিল। তখনি খেয়াল করল জীবন দা’ গুণ গুণ করে গাইতে শুরু করেছেন-
কাশি কি মক্কায় যাবি
চল দেখি যাই ।
দোটানাতে ঘুরলে পথে
সন্ধ্যাবেলায় উপায় নাই ।।
মক্কা যেয়ে ধাক্কা খেয়ে
যেতে চাও কাশি ধামে
এমনিভাবে কাল কাটালে
ঠিক নামালে কোথা ভাই ।।
নৈবেদ্য পাকা কলা
তা দেখে মন ভোলে ভোলা
শিরনি বিলায় দরগাতলা
তাও দেখে মন খলবলায় ।।
চুল পেকে হলো হুড়ো
পেলে না পথের মুড়ো
লালন বলে ছন্দ ভুলি
না পেলাম কূল নদীর ঠাঁই ।।
-সাঁইজি বলছেন, ‘চুল পেকে হলো হুড়ো, পেলে না পথের মুড়ো’। বয়স বাড়লেই মানুষ পথের দিশা পায় না বাপ। পথের খোঁজ শুরু না করলে পথ মিলবে কিরূপে? জ্ঞান-আদি জ্ঞান-সত্য জ্ঞানের সন্ধানী মন না থাকলে বিপথেই যেতে হয়। এমনও বলা যায়, সঠিক পথ পেলেও সে পথে সঠিকভাবে হাঁটতে পারে না মানুষ।
সেই পথে হাঁটার জন্য চাই দীর্ঘ প্রস্তুতি। ঐ যে যারা পাহাড়ে উঠে তারা আগে ছোট ছোট পাহাড়ে উঠে; কতরকম অনুশীলন করে-ট্রেনিং নেয়। তারপর তারা স্বপ্নের পাহাড়ে যাত্রা করে। এটাও এমনি বাপ। হঠাৎ একদিন মনে হইলো আর বিশাল পাহাড়ে উঠতে চলে গেলেন তাতে এমন নয় যে আপনি পথ পাবেন না।
তবে আগে ট্রেনিং থাকলে, সন্ধানী মন থাকলে যাত্রাটা আনন্দময় হয়, বোঝা হয় না। কিন্তু হঠাৎ রওনা দিলে বেশিভাগ সময়ই তা যন্ত্রণাময় হয় কিন্তু জেদের বসে মানুষ তা স্বীকার করে না। আনন্দ হচ্ছে এমন ভাব, মানে অভিনয় করে। নিজের সাথে নিজের এই অভিনয় বড় ভয়াবহ বাপ।
তাতেই মানুষ উগ্রবাদী হয়ে যায়। চাপিয়ে দিতে চায়। সাধনায় এমন কোনো পথ নেই। সাধনা হলো নিজেকে তৈরি করা; আনন্দযাত্রার জন্য।
-জীবন দা’ একটা প্রশ্ন করতে পারি?
-কি বাপ!
-আপনি এতো কথা জানলেন কেমন করে? বই পড়ে?
-না বাপ! এককালে একটু আধটু অভ্যাস ছিল কিন্তু সেসময় তো পড়তাম মজাকি বই।
-মজাকি বই মানে?
-মজাকি বই হইলো বাপ যে বই এমনি এমনি পড়া হয়; যা থেকে কিছু শেখার নাই জানার নাই এমনি এমনি পড়া আর কি।
-তাহলে এতো সব জানলেন কি করে? আপনার অনেক কথাতেই আমার কিছু প্রশ্ন আছে-কিছু সংশয়-সন্দেহ আছে সেটা ঠিক; কিন্তু কথা আপনি ভালো বলেন তা অস্বীকার করছি না। তা বলেন না কোথা থেকে শিখলেন?
-বাপ! আপনি কী জানতে চান সেটা যদি আগে ঠিক করতে পারেন তারপর তার প্রতি সৎ থাকেন ভক্তি আর শ্রদ্ধা নিয়ে তা জানার জন্য এগিয়ে যান সারা ব্রহ্মাণ্ড আপনার পক্ষে থাকবে বাপ। কিন্তু মনে যদি প্রাপ্তির আশা থাকে, শিক্ষায় যদি সংশয় থাকে, তাহলে সে শিক্ষা হবে কেবল পরীক্ষায় পাস করার জন্য বা চাকুরি পাওয়ার জন্য।
এই শিক্ষা জীবনের জন্য না বাপ। আর যে শিক্ষা জীবনের জন্য, নিজকে জানার জন্য, সে শিক্ষায় প্রাপ্তি নাই বাপ আছে আনন্দ আর আনন্দ। পরম আনন্দ। কিন্তু আপনি পরম আনন্দ চান কিনা সেটা আগে জানতে হবে। আর এটা জানতে পারলে বাকিটা ইতিহাস হয়ে থেকে যায় বাপ। জ্ঞান আপনাআপনি আসে।
-আপনাআপনি জ্ঞান আসে মানে? আকাশ থেকে জ্ঞান আসে নাকি?
-বাপ! বলতে পারেন কবিতা কোথা থেকে আছে? গান কোথা থেকে আসে? যে কবিতা-যে গান কাল উত্তীর্ণ হয়? সেই সব কবিতা-সেই সব গান কোথা থেকে আসে বাপ? আকাশ থেকে নাকি মাথা থেকে? না হৃদয় থেকে? না স্থিরতা থেকে?
এ বড় গোলমেলে ব্যাপার বাপজি। এগুলো বুঝতে গেলে মস্তিষ্ককে বুঝতে হয়, মানুষ কি করে ভাবে-কেমন করে ভাবতে পারে এসব তত্ত্ব জানতে হয়। না জেনে ভেদের কথা নিজেরে প্রকাশিবে কেমনে? সাঁইজি বলছেন–
না জেনে ঘরের খবর তাকাই আসমানে।
চাঁদ রয়েছে চাঁদে ঘেরা ঈশান কোণে।।
প্রথমে চাঁদ উদয় দক্ষিণে
কৃষ্ণপক্ষে অধঃ হয় বামে
আবার দেখি শুক্লপক্ষে কিরূপে যায় দক্ষিণে।।
খুঁজিতে আপন ঘরখানা
পাইতে সকল ঠিকানা
বার মাসে চব্বিশ পক্ষ, অধর ধরা তার সনে।।
স্বর্গচন্দ্র মণিচন্দ্র হয়
তাহাতে ভিন্ন কিছু নয়
এ চাঁদ ধরলে সে চাঁদ মিলে, লালন কয় তাই নির্জনে।।
(চলবে…)
<<লালন বলে কুল পাবি না: তিন।। লালন বলে কুল পাবি না: পাঁচ>>
……………………………….
স্থিরচিত্র: সুমন কুমার সাহা
.…………………………………………..
আরো পড়ুন:
সিজন : এক
লালন বলে কুল পাবি না: এক
লালন বলে কুল পাবি না: দুই
লালন বলে কুল পাবি না: তিন
লালন বলে কুল পাবি না: চার
লালন বলে কুল পাবি না: পাঁচ
লালন বলে কুল পাবি না: ছয়
লালন বলে কুল পাবি না: সাত
লালন বলে কুল পাবি না: আট
সিজন : দুই
লালন বলে কুল পাবি না: এক
লালন বলে কুল পাবি না: দুই
লালন বলে কুল পাবি না: তিন
লালন বলে কুল পাবি না: চার
লালন বলে কুল পাবি না: পাঁচ
লালন বলে কুল পাবি না: ছয়
লালন বলে কুল পাবি না: সাত
লালন বলে কুল পাবি না: আট
1 Comment