সাংখ্য-দর্শনের উৎস : কিস্তি ষষ্ঠ
-দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
বিষয়টি হলো, আদি-সাংখ্য শুধুই নিরীশ্বরবাদ নয়, জড়বাদ বা বস্তুবাদও। এই বিষয়টি সম্বন্ধে সম্যকভাবে সচেতন নন বলেই আধুনিক বিদ্বানেরা সাধারণত সাংখ্য-দর্শনকে বস্তুবাদ না বলে দ্বৈতবাদ বা dualism আখ্যা দিয়ে থাকেন।
দ্বৈতবাদ বলা হয় কেন? কেননা, সাংখ্যে প্রকৃতি ছাড়াও পুরুষের তত্ত্ব রয়েছে এবং প্রকৃতি অচেতন-পদার্থ হলেও পুরুষ চেতন পদার্থ।
অতএব, আমাদের পক্ষে প্রশ্ন তোলা দরকার সাংখ্য-দর্শনে প্রকৃতি ছাড়াও ওই পুরুষের তত্ত্ব আছে বলেই কি তাকে বস্তুবাদ না বলে দ্বৈতবাদ বলা প্রয়োজন? উত্তরে আমরা বলতে চাই, অন্তত আদি-সাংখ্যকে এইভাবে দ্বৈতবাদ বলবার প্রয়োজন নেই।
কেননা তা যদি থাকতো তাহলে বাদরায়ণ-প্রমুখ প্রাচীনের সে-তাগিদ অনুভব করতেন- অর্থাৎ, সাংখ্যকে সরাসরি অচেতনকারণ-বাদ না বলে তারা একে অচেতন-চেতন-কারণবাদ বা ওই ধরনের কোনো আখ্যা দিতে বাধ্য হতেন। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, প্রাচীনের সাংখ্যকে শুধুমাত্র অচেতনকারণ-বাদ আখ্যা দিতে কোনো রকম দ্বিধা বোধ করেননি।
আপাতত, সে-যুক্তির কথা বাদ দিয়েও আমরা দেখাতে চাইছি যে, সাংখ্য-দর্শনে পুরুষের তত্ত্ব থাকা সত্ত্বেও আদি-সাংখ্যকে দ্বৈতবাদ মনে করা ঠিক হবে না; কেননা ওই প্রকৃতি ও পুরুষের মধ্যে গুরুত্ব সমান নয়- প্রথমটির তুলনায় দ্বিতীয়টির স্থান এমনই গৌণ ও অকিঞ্চিৎ যে, আধুনিক বিদ্বানেরা এমন কি একথাও মনে করেছেন যে, এই তত্ত্বটিকে বাদ দিলেই বরং সাংখ্যকারেরা আরো বেশি সুসংলগ্ন চিন্তার পরিচয় দিতেন।
তার কারণ কি এই যে, তারা জানতেন না সাংখ্য-দর্শনে প্রকৃতি ছাড়াও পুরুষের তত্ত্ব আছে? নিশ্চয়ই জানতেন। কিন্তু তা ছাড়াও তাঁরা জানতেন যে, এই পুরুষের স্থান সাংখ্য-দর্শনের আদি-আকৃত্রিম সংস্করণটিতে এমনই গৌণ যে, তা থাকলেও যেন না থাকারই সামিল। কেননা পুরুষ অপ্রধান, পুরুষ উদাসীন। “কথঞ্চোদাসীন পুরুষঃ প্রধানং প্রবর্তয়েৎ?” – উদাসীন পুরুষ কী ভাবে প্রধানকে প্রেরণ করবে?
এবং বৈদান্তিকের অত্যন্ত স্পষ্টভাষাতেই বলেছেন, এ-বিষয়ে সাংখ্য-দর্শনের অন্ধ-পঙ্গু বা লৌহঅয়স্কান্তের উপমা কোনোমতেই সন্তোষজনক হতে পারে না। আমরা ইতিপূর্বেই দেখেছি, আধুনিক বিদ্বানেরাও অনেকেই কী ভাবে সাংখ্য-দর্শনের মধ্যে পুরুষের স্থান নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন-
ন্যায়সঙ্গতভাবে সাংখ্যতত্ত্বের সঙ্গে পুরুষের কোনো মৌলিক যোগাযোগ নেই, অথচ তা রয়েছে; জগৎকারণ অচেতন প্রকৃতি বা প্রধানের পাশে পুরুষের তত্ত্বটুকু বাস্তবিকই এতো গৌণ যে, সাংখ্য-দর্শনের প্রবর্তকের এটুকু বাদ দিলেই বরং আরো যুক্তিসঙ্গত মনোভাবের পরিচয় দিতেন।
আমরা দেখাবার চেষ্টা করেছি যে, আদিতে পুরুষ বলতে চেতন-আত্মার পরিবর্তে পুরুষমানুষই বোঝাতো এবং সাংখ্য-তত্ত্বের মধ্যে মাতৃপ্রধান সমাজবাস্তব প্রতিবিম্বিত হয়েছে বলেই সে-সমাজে পুরুষের স্থানকে কেন্দ্র করে যে-অন্তর্বিরোধ, তারই প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায় সাংখ্য-দর্শনের পুরুষতত্ত্বটি নিয়ে অন্তর্বিরোধের মধ্যে।
আপাতত, সে-যুক্তির কথা বাদ দিয়েও আমরা দেখাতে চাইছি যে, সাংখ্য-দর্শনে পুরুষের তত্ত্ব থাকা সত্ত্বেও আদি-সাংখ্যকে দ্বৈতবাদ মনে করা ঠিক হবে না; কেননা ওই প্রকৃতি ও পুরুষের মধ্যে গুরুত্ব সমান নয়- প্রথমটির তুলনায় দ্বিতীয়টির স্থান এমনই গৌণ ও অকিঞ্চিৎ যে, আধুনিক বিদ্বানেরা এমন কি একথাও মনে করেছেন যে, এই তত্ত্বটিকে বাদ দিলেই বরং সাংখ্যকারেরা আরো বেশি সুসংলগ্ন চিন্তার পরিচয় দিতেন।
এবং বাদরায়ণ প্রমুখ প্রাচীন বিদ্বানেরাও তর্ক করে বলেছেন, অচেতনকারণবাদ হিসেবে সাংখ্যের যেটা মূল দুর্বলতা (আমরা বলতে পারি বৈশিষ্ট্য) তা ওই উদাসীন পুরুষটির তত্ত্ব যোগ করেও খুব কিছু পরিবর্তিত হয় না। অতএব, প্রাচীন ও আধুনিক বিদ্বানদের এই যুক্তি যদি ঠিক হয় তাহলে, তত্ত্ব আছে বলেই সাংখ্য-দর্শনকে বস্তুবাদ বা materialism না বলে দ্বৈতবাদ বা dualism বলা যুক্তিসঙ্গত হবে না।
সাংখ্য হলো অচেতনকারণবাদ, প্রধানকারণবাদ। সাংখ্যমতে পুরুষ নেহাতই অপ্রধান এবং উদাসীন। এই মূল কথা ক’টি মনে রেখে এবার আমরা উপনিষদের সেই অংশগুলির বিচার করবো যেগুলির মধ্যে আধুনিক বিদ্বানেরা সাংখ্য-দর্শনের বীজ আবিষ্কার করবার কল্পনা করেছেন। এ-জাতীয় অংশের তালিকা আমরা ইতিপূর্বেই তৈরি করেছি; এখানে সে-তালিকা থেকে কিছু কিছু নমুনা উদ্ধৃত করা যাক-
অধ্যাপক সুরেন্দ্রনাথ দাসগুপ্ত[৭৩৭] ও প্রাচীন সাংখ্য সংক্রান্ত আর একটি অত্যন্ত মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করেছেন যার তাৎপর্য আমাদের এই যুক্তিকে সম্যকভাবে সাহায্য করতে পারে। তিনি দেখাচ্ছেন, সাংখ্য-দর্শনের প্রাচীনতর একটি রূপের পরিচয় পাওয়া যায় চরক-সংহিতায়,- যদিও দুঃখের বিষয়, অধ্যাপক সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত বলছেন, আধুনিক বিদ্বানেরা এই রূপটির প্রতি এখনো উপযুক্ত মনোযোগ দেননি।
অতএব প্রশ্ন হলো, চরক-সংহিতায় সাংখ্য-দর্শনের যে-পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে তার দিক থেকে প্রকৃতি ও পুরুষের সম্বন্ধ কী রকম? চরকের মতে, প্রকৃতিরই অব্যক্ত অংশটির নাম পুরুষ। প্রকৃতির যেটা বিকার বা পরিণামের দিক তার নাম ক্ষেত্র এবং প্রকৃতির যেটা অব্যক্ত দিক তার নাম ক্ষেত্রজ্ঞ- অব্যক্তমস্য ক্ষেত্রস্য ক্ষেত্রজ্ঞমৃষয়ো বিদ্যুঃ। অব্যক্ত এবং চেতনা একই।
এই চেতনা বা অব্যক্ত-প্রকৃতি থেকে বুদ্ধি, বুদ্ধি থেকে অহংকার, অহংকার থেকে পঞ্চভূত এবং পঞ্চেন্দ্রিয়ের উৎপত্তি এবং সেই উৎপত্তিকেই আমরা সৃষ্টি আখ্যা দিয়ে থাকি।
অধ্যাপক সুরেন্দ্রনাথ দাসগুপ্তের যুক্তি যদি ঠিক হয়,- অর্থাৎ, চরকসংহিতায় যদি সত্যিই সাংখ্য-দর্শনের কোনো প্রাচীনতর পর্যায়ের পরিচয় পাওয়া যায় এবং সেই পরিচয় অনুসারে সাংখ্যের পুরুষও যদি প্রকৃতিরই অব্যক্ত অংশমাত্র হয়,- তা হলে সাংখ্যের আদিরূপটিকে দ্বৈতবাদ না বলে বস্তুবাদ আখ্যা দেবার সম্ভাবনা অনেক বাড়ে না কি?
এবং সাংখ্য-দর্শন এইভাবে মূলত বস্তুবাদী ছিলো বলেই ভাববাদী ও অধ্যাত্মবাদী বৈদান্তিক চিন্তাধারার পক্ষ থেকে সাংখ্য-দর্শনকেই প্রধানতম প্রতিপক্ষ বলে গ্রহণ করবার তাগিদটাও অনেক ভালো করে বুঝতে পারা যায়।
সাংখ্য হলো অচেতনকারণবাদ, প্রধানকারণবাদ। সাংখ্যমতে পুরুষ নেহাতই অপ্রধান এবং উদাসীন। এই মূল কথা ক’টি মনে রেখে এবার আমরা উপনিষদের সেই অংশগুলির বিচার করবো যেগুলির মধ্যে আধুনিক বিদ্বানেরা সাংখ্য-দর্শনের বীজ আবিষ্কার করবার কল্পনা করেছেন। এ-জাতীয় অংশের তালিকা আমরা ইতিপূর্বেই তৈরি করেছি; এখানে সে-তালিকা থেকে কিছু কিছু নমুনা উদ্ধৃত করা যাক-
কঠোপনিষৎ থেকে-
ইন্দ্রিয়সমূহ হইতে ইন্দ্রিয়বিষয়সমূহ শ্রেষ্ঠ, ইন্দ্রিয়-বিষয়সমূহ হইতে মন শ্রেষ্ঠ, মন হইতে বুদ্ধি শ্রেষ্ঠ এবং বুদ্ধি হইতে মহান আত্মা শ্রেষ্ঠ।। ১,৩,১০।।
মহং হইতে জগতের বীজরুপ অব্যক্ত শ্রেষ্ঠ, অব্যক্ত হইতে পুরুষ শ্রেষ্ঠ, পুরুষ হইতে শ্রেষ্ঠ আর কিছুই নাই; তিনি শেষ, তিনি পরা গতি।। ১, ৩, ১১।। ইন্দ্রিয়সমূহ হইতে মন শ্রেষ্ঠ, মন হইতে সত্ত্ব শ্রেষ্ঠ, সত্ত্ব হইতে মহান আত্মা অধিক, মহৎ হইতে অব্যক্ত শ্রেষ্ঠ।। ২,৩,৭,।।
অব্যক্ত হইতে ব্যাপক এবং অ-লিঙ্গ পুরুষ শ্রেষ্ঠ, যাহাকে জানিয়া জীব মুক্ত হয় এবং অমৃতত্ত্ব প্রাপ্ত হয়।। ২,৩,৮,।।
শ্বেতাশ্বতরোপনিষৎ থেকে-
ঈশ্বর এই পরস্পরসংযুক্ত ক্ষর ও অক্ষর, ব্যক্ত ও অব্যক্ত সমুদয় বিষয় ধারণ করিয়া আছেন। আর অনীশ (অর্থাৎ ঈশ্বরত্ববিহীন) আত্মা ভক্ত ভাববশত: অবিদ্যাদি বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু দেবকে (অর্থাৎ ঈশ্বরকে) জানিয়া সমুদয় বন্ধন হইতে মুক্ত হয়।।১,৮।।
প্রধান (অর্থাৎ প্রকৃতি) ক্ষর; হর (the soul, হিউমের তর্জমা) অমৃত ও অক্ষর। সেই ‘একঃ দেবঃ’ প্রকৃতি ও আত্মাকে নিয়মিত করেন। তাঁহার চিন্তন এবং তাঁহার সহিত সংযোগ ও একত্বদ্বারা অন্তে সম্পূর্ণরূপে সমুদয় মোহ নষ্ট হয়।।১,১০।।
উপনিষদের ওই অংশগুলিতেও কি জগৎকারণ হিসেবে অচেতন প্রধানকেই চেনবার চেষ্টা করা হয়েছে? এখানেও কি পুরুষকে অপ্রধান এবং উদাসীন হিসেবে গৌণ জ্ঞান করা হয়েছে? নিশ্চয়ই নয়। বরং তার বিপরীত কথাই এই উক্তিগুলির মধ্যে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে দেখতে পাওয়া যায়।
পুরুষ অর্থাৎ পরমাত্মাই মহান প্রভূ, ইনি অন্তঃকরণের প্রবর্তক, মুনির্মল পরমপদ প্রাপ্তির নিয়ন্তা, জ্যোতির্ময় ও অব্যয়।।৩,১২।।
লোহিত-শুক্ল-কৃষ্ণা বহু প্রজার উৎপাদিকা এক অজার সহিত শয়ন করিয়া এক অজ উপভোগ করে; অপর আজ এই ভূক্তভোগ্যাকে পরিত্যাগ করে।।৪,৫৷৷ মায়াকেই প্রকৃতি বলিয়া জানিবে এবং মায়ীকে মহেশ্বর বলিয়া জানিবে; তাহার অঙ্গসমূহ দ্বারাই এই সমস্ত জগৎ ব্যাপ্ত রহিয়াছে।।৪, ১০৷৷
যে অদ্বিতীয় (পরমাত্মা) প্রত্যেক কারণ, সমুদয় রূপ এবং সমুদয় বীজের অধিষ্ঠাতা, যিনি সকলের অগ্রে প্রসূত ঋষি কপিলকে (= কনকবর্ণ হিরণ্যগৰ্ভ?) জ্ঞানদ্বারা পোষণ করেন এবং তাহাকে জন্মাইতে দেখিয়াছিলেন।।৫, ২৷৷
যিনি (পরমাত্মা) গুণত্রয়যুক্ত হইয়া সুখদুঃখাদি ফলবৎ কর্ম করেন, তিনিই সেই কর্মের ফলভোগ করেন। তিনি নানারূপ ত্রিগুণ, ত্রিবত্মর্ণ হইয়া নিজকর্মবশে সঞ্চরণ করেন।।৫, ৭৷৷
যিনি অঙ্গুষ্ঠমাত্র রবিতুল্যরূপ, যিনি সংকল্প ও অহংকারের সহিত মিলিত হইয়া বুদ্ধি ও আত্মগুণ সমন্বিত হইয়া লোঁহকণ্টকের অগ্রভাগের ন্যায় দৃষ্ট হন।।।৫, ৮।।
যে অদ্বিতীয় দেবতা উর্ণনাভের ন্যায় স্বভাবত প্রধানজাত তন্তুসমূহদ্বারা আপনাকে আচ্ছাদিত করিয়াছেন, তিনি আমাদিগের ব্রহ্মে প্রবেশ বিধান করুন।।৬, ১০ ৷৷
যিনি নিত্যদিগের মধ্যে নিত্য, চেতনাবাদিগের মধ্যে চেতনাবান, যিনি একাকী অনেকের কাম্যবস্তুসকল বিধান করিতেছেন, সেই কারণরূপী দেবকে সাংখ্য-যোগ দ্বারা জানিয়া সাধক সমুদয় বন্ধন হইতে মুক্ত হন।।৬, ১৩৷৷
(হিউমের(৭৩৮) তর্জমা অনুসারে এখানে সাংখ্য-যোগ discrimination and abstraction- প্রাচীন ভাষ্যকারদের অনুসরণ করেই হিউম এ-তর্জমা করেছেন)।
তিনি বিশ্বকৃৎ, বিশ্ববিৎ, স্বয়স্থ, কালের কর্ত, গুণী, সর্ববিৎ, প্রধানের ও ক্ষেত্রজ্ঞের স্বামী গুণের ঈশ্বর এবং সকলের স্থিতি, বন্ধন ও মোক্ষের কারণ।।৬, ৮৬ ৷৷
একইভাবে, গীতা-বর্ণিত সাংখ্যও(৭৩৯) বাদরায়ণ-খণ্ডিত সাংখ্য নয়।
এখানে, একটি অত্যন্ত সরল প্রশ্ন তোলা প্রয়োজন- বাদরায়ণ সাংখ্য-মত হিসেবে যে-অচেতনকারণবাদকে খণ্ডন করবার চেষ্টা করেছেন, উপনিষদের উদ্ভূত উক্তিগুলির মধ্যে কি সেই মতেরই পরিচয় পাওয়া যায়, ন, সেই মতকে চেতনকারণবাদের চেয়ে নিকৃষ্ট বলে প্রতিপন্ন করবার চেষ্টাই চোখে পড়ে?
উপনিষদের ওই অংশগুলিতেও কি জগৎকারণ হিসেবে অচেতন প্রধানকেই চেনবার চেষ্টা করা হয়েছে? এখানেও কি পুরুষকে অপ্রধান এবং উদাসীন হিসেবে গৌণ জ্ঞান করা হয়েছে? নিশ্চয়ই নয়। বরং তার বিপরীত কথাই এই উক্তিগুলির মধ্যে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে দেখতে পাওয়া যায়।
কঠোপনিষদ বলছে, অব্যক্ত হইতে পুরুষ শ্রেষ্ঠ, পুরুষ হইতে শ্রেষ্ঠ আর কিছুই নাই। একি সাংখ্যের মত, না, সাংখ্যমত খণ্ডন? অন্তত, সাংখ্যমত হিসেবে বাদরায়ণ যে-মতটি খণ্ডন করছেন এখানে নিশ্চয়ই তার পরিচয় পাওয়া যায় না।
(চলবে…)
<<সাংখ্য-দর্শনের উৎস : কিস্তি পঞ্চম ।। সাংখ্য-দর্শনের উৎস : কিস্তি সপ্তম>>
……………………….
আরও পড়ুন-
সাংখ্য-দর্শনের উৎস : কিস্তি প্রথম
সাংখ্য-দর্শনের উৎস : কিস্তি দ্বিতীয়
সাংখ্য-দর্শনের উৎস : কিস্তি তৃতীয়
সাংখ্য-দর্শনের উৎস : কিস্তি চতুর্থ
সাংখ্য-দর্শনের উৎস : কিস্তি পঞ্চম
সাংখ্য-দর্শনের উৎস : কিস্তি ষষ্ঠ
সাংখ্য-দর্শনের উৎস : কিস্তি সপ্তম
………………….
লোকায়ত দর্শন (২ম খণ্ড- বস্তুবাদ)- দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়।
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
……………..
৬৯৪. সাংখ্যকারিকা ২১, গৌড়পাদভাষ্য।
৬৯৫. বিশ্বকোষ ৭:৫০৭।
৬৯৬. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী- বৌদ্ধধর্ম ৩৭ ৷
৬৯৭. H. Zimmer PI 282–সাংখ্যকারিকাকে লেখক আরো পরে (পঞ্চম শতাব্দীর মাঝামাঝি ) রচিত বলে বিবেচনা করেন। মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীও (বৌদ্ধধর্ম ৩৮) একই মত পোষণ করেন।
৬৯৮. সাংখ্যকারিকা ৭০।
৬৯৯. ঐ ৭১।
৭০০. শঙ্করাচার্য- ব্রহ্মসূত্রভাষ্য ২.৪.৯।
৭০১. S. N. Dasgupta HIP 1:213.
৭০২. S. K. Belvalkar & R. D. Ranade HIP 2:412.
৭০৩. Ibid. 2:413f.
৭০৪. H. H. Wilson SK 160.
৭০৫. P. B. Chakravarti ODSST দ্রষ্টব্য I
৭০৬. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়- রচনাবলী (সাহিত্য-সংসদ ) ২:২২২।
৭০৭. মণীন্দ্রমোহন বস্তু- সহজিয়া সাহিত্য ৫২ ৷
৭০৮. উমেশচন্দ্র ভট্টাচার্য- ভারতদর্শনসার ১৪৯-৫০।
৭০৯. S. K. Belvalkar & R. D. Ranade op. cit. 2:428.
৭১০. ব্রহ্মসূত্রভাষ্য ২.২.৭। নিয়োস্থত তৰ্জমা কালীবর বেদান্তবাগীশ ২:১৪০।
৭১১. ERE 11:191.
৭১২. P. R. T. Gurdon K xix-xx.
৭১৩. G. Thomson SAGS 153.
৭১৪. K. Marx. & F. Engels C 210.
৭১৫. ERE 6:706.
৭১৬. R. Garbe SPB Preface ix.
৭১৭. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী- বৌদ্ধধর্ম ৩৭।
৭১৮. S. K. Belvalkar & R. D. Ranade op cit. 2:415.
৭১৯. S.N. Dasgupta op. cit. 1:213.
৭২০. S. K. Belvalkar & R. D. Ranade op. cit. 2:418f.
৭২১. Ibid. 2:420f.
৭২২. Ibid. 2:426f.
৭২৩. E. H. Johnston Es.
৭২৪. S. K. Belvalkar & R. D. Ranade op cit. 2:416.
৭২৫. ব্রহ্মসূত্রভাষ ২. ১, ১২। তর্জমা- কালীবর বেদান্তবাগীশ ২:৪৭।
৭২৬. ঐ ২, ১, ১। তর্জমা- কালীবর বেদাস্তবাগীশ ২৮।
৭২৭. ঐ। কালীবর বেদান্তবাগীশ ২:১০।
৭২৮. R. Garbe IACOPVMCSS Preface xx-xxi.
৭২৯. H. Zimmer PI 281.
৭৩০. ব্রহ্মসূত্রভাষ্য ১. ৪.১। তর্জমা- কালীবর বেদান্তবাগীশ ১:৪৯৭।
৭৩১. P. B. Chakravarti ODSST 4.
৭৩২. Ibid.
৭৩৩. তর্জমা- কালীবর বেদাস্তবাগীশ ২:১২৩-৪।
৭৩৪. তর্জমা- কালীবর বেদান্তবাগীশ ২:১২৮।
৭৩৫. কালীবর বেদান্তবাগীশ- সাংখ্য-দর্শনম্ ২২১-২।
৭৩৬. R. Garbe SPB Preface দ্রষ্টব্য।
৭৩৭. S. N. Dasguta op. cit. 1:213.
৭৩৮. R. Hume TPU.
৭৩৯. বরং আমরা দেখাবার চেষ্টা করেছি (পৃ. ৫৩৬ ), গীতা-বর্ণিত অসুরমতের সঙ্গেই সাংখ্যের আদিরূপের সংযোগ অনুমান করা যায়। গীতার দ্বিতীয় অধ্যায়ে বর্ণিত মতটিই যদি আদি-অকৃত্রিম সাংখ্য হতো তাহলে অবশ্যই বাদরায়ণ সাংখ্য-খণ্ডনের জন্য অতো আয়োজন করতেন না।
৭৪০. ব্রহ্মসূত্রভাষ্য ২. ১. ২.।
৭৪১. R. Garbe IACOPVMCSS Preface xii.
৭৪২. F. Engels LF 19.
৭৪৩. R. Garbe op. cit. Preface xix.