-সত্যানন্দ মহারাজ
তোর ভগবান হরি কোথায় আছে? পিতা হিরণ্য কশিপুরের উত্তরে প্রহ্লাদ বললেন, তিনি জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে সর্বত্রই বিরাজ করছেন। আপনার অহংকার, অভিমান ও অভক্তি জনিত অজ্ঞানতার কারণে আপনি তাঁকে দেখতে পাচ্ছেন না। এই উত্তরে আরও ক্রোধান্বিত হয়ে হিরণ্য কশিপুর বললো- ঐ থামটার মধ্যেও কি তোর হরি আছে?
প্রহ্লাদ হেসে বললো- হ্যাঁ, তিনি এই থামের মধ্যেও আছেন। এই কথা শুনে হিরণ্য কশিপুর যখন থামটায় আঘাত করলেন শ্রীহরিকে মারার জন্য- তখন শ্রীহরি নর-সিংহরূপ ধারণ করে হত্যা করলেন দৈত্য রাজ হিরণ্য কশিপুরকে।
এই গল্প অনেকেরই জানা। তবু ভগবান যে ইট, কাঠ, পাথর, অণু-পরমাণু সর্বত্রই আছেন- তা অনুভবে আসে না- আমাদেরই অবিশ্বাসের কারণে। তাছাড়া তাঁকে বাইরে কোথায় খুঁজতে যাবে- তিনি তো আমারই অন্তরের অন্ত:স্থলে অন্তর্যামী হয়েই বিরাজ করছেন।
এবং তিনি যে সর্বত্র বিরাজ করছেন- এ কথা শাস্ত্র পড়ে বা অন্য লোকের মুখে শুনেও বা লাভ কি? যতক্ষণ না নিজের চোখে দেখতে পারছি বা অনুভব করছি?
তাই ভগবানকে দেখতে বা অনুভব করতে গেলে আগে আমার মনটাকেই শুদ্ধ ও পবিত্র করতে হবে। কারণ- ঋষিরা বলে গেছেন- ‘ঈশ্বর শুদ্ধ মনের গোচর।’
জাগতিক বিজ্ঞান ইটের তৈরি থামটাকে জড় ও নিষ্প্রাণ বলবে। বলবে জড় বা নিষ্প্রাণ বস্তুর মধ্যে প্রাণের স্পন্দন অসম্ভব। তাই তাদের কাছে এই গল্প সম্পূর্ণ কাল্পনিক।
কিন্তু আধ্যত্ম-বিজ্ঞান বলে সবই চৈতন্যময়।
স্বামী দেবানন্দ মহারাজ বললেন- ‘জগতে জড় বলে কিছু নেই, যা কিছু দেখছ- সবই চৈতন্যময়।’
ঈশ্বর বা ভগবান চৈতন্যময়।
ঠাকুর রামকৃষ্ণ বললেন- ‘চৈতন্যকে ডাকলে কেউ কি অচৈতন্য হয় রে।’
তাই তো যাঁরা ভগবানকে ডাকে তারাই চেতন পুরুষ আনন্দময়।
আরো পড়ুন:
গুরুজ্ঞান
গুরু শিষ্য ধারণা
ত্রিতাপ জ্বালা
সদগুরু সঙ্গ
এটা মহাপুরুষের দেশ
জীবাত্মা ও পরমাত্মা
ভগবান কোথায় থাকেন?
সংসার ধর্ম
কি ভাবে সংসার করবো?
ভগবানের সর্বব্যাপীতা
জীবনধারা
ভগবানকে কেন ডাকি?
আমার জীবন জুড়িয়ে দাও
পরশ পাথর
খারাপ দিন
সব থেকে বড় হৃদয়
রথ ও রথের মেলা
আমরা সাধারণ মানুষ