ভবঘুরেকথা
ফকির লালন

ফকির লালনের বাণী : নিতাইলীলা

১.
কার ভাবে শ্যাম নদেয় এলো,
ও তাঁর ব্রজভাবে কি অসুসার ছিলো।

২.
গোলকেরই ভাব ত্যাজিয়ে সে ভাব
প্রভু ব্রজপুরে লয়েছিল যে ভাব।

৩.
সত্য যুগে সঙ্গে কয় সখি ছিল
ত্রেতায় সঙ্গী সীতা লক্ষ্মী হলো,
ছিলো দ্বাপরের সঙ্গিনী রাধা রাঙ্গিনী
কলির ভাবে তারা কোথায় বলো।

৪.
কলিযুগের ভাব একি অসম্ভব
নাহি ব্রতপূজা নাহি অন্য লাভ।

৫.
ছিলো দণ্ডীবেশ দণ্ড কমণ্ডলু
তাও নিতাই এসে ভেঙ্গে দিলো।

৬.
উহার ভাব জেনে ভাব লওয়া হলো দায়
না জানি কখন কি ভাব উদয়।

৭.
এ ধন যৌবন চিরদিনের নয়।
অতি বিনয় করে নিমাই মায়েরে কয়।

৮.
কেউ রাজা কেউ বাদশাগিরি
ছেড়ে নেয় অধীন ফকিরি।

৯.
আমি নিমাই, কি ছাড় নিমাই
ধন ছেড়ে বেহাল লয়েছি গায়।

১০.
যখন হাওয়া বন্ধ হবে
এই দেহ শ্মশানে যাবে।

১১.
তখন কুঠাবালাঘর, কোথা রবে কার
ভবের লোভ-লালসে দুকূল হারায়।

১২.
যাও শচীমাতা গৃহে
আমারে বিসর্জন দিয়ে।

১৩.
এই বলে নিমাই, ধরে মার পায়
ফকির লালন বলে ধন্য ধন্য নিমাই।

১৪.
দয়াল নিতাই কারো ফেলে যাবে না।

১৫.
ধর চরণ ছেড় না।

১৬.
হরিনাম তরণী লয়ে
ফিরছে নিতাই নেয়ে হয়ে।

১৭.
এমন দয়ালচাঁদকে পেয়ে
শরণ কেন নিলে না।

১৮.
দৃঢ় বিশ্বাস করে রে মন
ধর নিতাইচাঁদের চরণ।

১৯.
পার হবি তুফান
এপারে কেউ থাকবে না।

২০.
কলির জীবকে হয়ে সদয়
পারে যেতে ডাকছে নিতাই।

২১.
লালন বলে মন চল যাই
এমন দয়াল মিলবে না।

২২.
রস প্রেমের ঘাট ভাঁড়িয়ে তরী বেয়ো না।
আইন জানো না বললে মানো না।

২৩.
নতুন আইন এলো নদীয়াতে
প্রেমের ঘাটে উচিত কর দিতে।

২৪.
না জেনে সেই খবর, করিলে জোর জবর
উচিত সাজায় বাঁচবে না।

২৫.
প্রেমের ঘাটে রাজা নিতাই
রাইরাধা রসবতী চুন্নি তাই।

২৬.
সেই ঘাট মাড়িলে, পড়িবে দায়মালে
এই ঝাকমারি করো না।

২৭.
মেড়েছিলো সেই ঘাট শ্যামরাই
চালান হলো নদীয়া জেলায়।

২৮.
লালন ভেবে বলে আমার এই কপালে
হয় কি জানি ঘটনা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!