মৃত্যু ও অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া
মৃত্যু শয্যায় ঈশ্বরের নাম অপেক্ষা শান্তিপ্রদ ও মধুর কোন বস্তু নাই। পরলোকগমনোদ্যত আত্মীয়ের সম্মুখে তাঁহার আত্মীয়গণ ভক্তি ও ব্যাকুলতার সহিত ঈশ্বরের নাম উচ্চারণ করিবেন ও গান করিবেন। আত্মীয়দের হৃদয় সে সময় দু:খে শোকে অধীর হইবে, সন্দেহ নাই ; কিন্তু পরলোকগামী আত্মার শান্তির দিকে দৃষ্টি রাখিয়া তাঁহার শোকোচ্ছাস দমন করিবেন এবং অনন্তধামের যাত্রীকে দয়াময়ের নাম শুনাইবেন।
মৃত্যুতে শোক মানবের পক্ষে স্বাভাবিক। তাহা দ্বারা আত্মা কোমল ও পবিত্র হয়। কিন্তু সেই শোকের প্রকাশ বাহিরে যত অল্প হয় ততই ভাল। সদ্য: শোকপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ঈশ্বরের নাম ও তাঁর কাছে প্রার্থনা করিয়া হৃদয়ের শোকাবেগ প্রশমিত রাখিবেন। আত্মা দেহমুক্ত হইবার পর কিয়ৎকাল গৃহে ঈশ্বরের নিকটে প্রার্থনা ও ব্রহ্মনাম গান করা উচিত।
তৎপরে তাঁহারা বন্ধুবান্ধবদিগকে সংবাদ দিয়া মৃত দেহের সৎকারের আয়োজন করিবেন। পরলোকগত ব্যক্তি যদি জীবদ্দশায় নিজ দেহ সৎকার সম্বন্ধে কোন বিশেষ ইচ্ছা ব্যক্তি করিয়া গিয়া থাকেন, তবে সকলে তদ্রূপ ব্যবস্থা করিতেই চেষ্টা করিবেন।
পরিস্কৃত ও সৎকারার্থ সজ্জিত শবদেহের নিকটে বসিয়া বন্ধুবান্ধবগণ ঈশ্বরের উপাসনা করিবেন।
সৎকারের স্থানে দেহ লইয়া যাইবার সময় পথে ঈশ্বরের নাম গম্ভীর ভাবে গান করিতে করিতে অথবা উচ্চারণ করিতে করিতে গেলে ভাল হয়।
যাহা নশ্বর তাহা বিনষ্ট হইয়া যাইবে, কিন্তু অমরাত্মা তোমার ক্রোড়ে চিরদিন জীবিত থাকিবে। হে পরমেশ্বর, অমর জীবনে তুমি ইহাকে রক্ষা করও আশীর্ব্বাদ কর এবং পৃথিবীতে শোকার্ত্ত আমাদিগকে তুমি সান্ত্বনা দাও।
দেহকে দাহ কিংবা সমাধিস্থ করিবার সময় অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সকল যথাসম্ভব স্বাভাবিক ভাবে রাখিতে হইবে। যথোচিত সম্মানপূর্ব্বক দেহকে দাহ কিংবা সমাধিস্থ করা হইবে। তৎ পূর্ব্বে প্রধান শোককারী এই ভাবে প্রার্থনা করিয়া অগ্নি সংযোগ অথবা মৃত্তিকা প্রদান করিবেন-
হে জীবন মরণের অধিপতি, তোমার এই সন্তান তোমার করুণায় এতদিন পৃথিবীতে জীবিত থাকিয়া এখন আবার তোমার ক্রোড়ে আশ্রয়প্রাপ্ত হইয়াছেন। ইহার যে দেহকে অবলম্বন করিয়া তুমি এতদিন তোমার করুণা ইহার জীবনে প্রকাশ করিয়াছিল, আমরা শ্রদ্ধার সহিত সেই পরিত্যক্ত দেহের প্রতি আমাদের শেষ কর্ত্তব্য তোমার নাম লইয়া সম্পন্ন করিতেছি।
যাহা নশ্বর তাহা বিনষ্ট হইয়া যাইবে, কিন্তু অমরাত্মা তোমার ক্রোড়ে চিরদিন জীবিত থাকিবে। হে পরমেশ্বর, অমর জীবনে তুমি ইহাকে রক্ষা করও আশীর্ব্বাদ কর এবং পৃথিবীতে শোকার্ত্ত আমাদিগকে তুমি সান্ত্বনা দাও।
যে ক্ষেত্রে শবদেহ দাহ করা হয় সেখানে সমস্ত দেহ ভস্মৃীভূত হইবার পর আত্মীয়গণ ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করিবেন। যাঁহারা সমাধি নির্ম্মাণেল জন্য অস্থি-ভস্ম আহরণ করিতে চাহেন, তাঁহারা একটি পাত্রে কিঞ্চিৎ অস্থি-ভস্ম লইয়া আসিবেন।
…………………………
ব্রাহ্মধর্ম্ম ও ব্রাহ্মসমাজ
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
………
আরও পড়ুন-
ব্রাহ্মসমাজ
সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের সভ্য হইবার যোগ্যতা
ব্রাহ্ম ধর্মের মূল সত্য
ব্রহ্ম মন্দিরের ট্রাস্টডিড
ব্রাহ্মধর্ম্মের মূল সত্য
আত্মা
মানুষের ভ্রাতৃত্ব
উপাসনা ও প্রার্থনা
শাস্ত্র
গুরু
মধ্যবর্ত্তী ও প্রেরিত
সুখ-দু:খ : দু:খবাদ ও আনন্দবাদ
পাপ ও পুণ্য
পুনর্জ্জন্ম
পরকাল
স্বর্গ ও নরক
ধর্ম্ম রক্ষা
পরিবারে পুরুষ ও নারীর অধিকার-সাম্য
ব্রাহ্মসমাজের প্রতি ব্রাহ্মদিগের কর্ত্তব্য
সমবেত উপাসনা
পূর্ণাঙ্গ উপাসনার আদর্শ
স্তুতি
বিবিধ অবস্থায় প্রার্থনা
নৈমিত্তিক অনুষ্ঠান
সন্তান জন্ম
ব্রাহ্মধর্ম্ম গ্রহণ ও ব্রাহ্মসমাজে প্রবেশ
ধর্ম্মসাধন ব্রতে দীক্ষা
ব্রাহ্মধর্ম্ম গ্রহণ ও ধর্ম্মদীক্ষা
বিবাহ ও তাহার আনুসঙ্গিক অনুষ্ঠান
বিবাহের বাগদান
বিবাহ
মৃত্যু ও অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া
শ্রাদ্ধ
গৃহ প্রবেশ
ব্রহ্ম ও ব্রহ্মের স্বরূপ
ব্রহ্ম ধ্যান
ব্রাহ্মধর্ম
সকলেই কি ব্রাহ্ম?
ব্রাহ্মোপসনা প্রচলন ও পদ্ধতি
আদি ব্রাহ্ম সমাজ ও “নব হিন্দু সম্প্রদায়”
পূর্ণাঙ্গ উপাসনার আদর্শ