শ্রীকৃষ্ণের আশ্চর্যলীলা
-মেঘনা কুণ্ডু মহাভারতের যুদ্ধ চলছে!! ধর্ম ও অধর্মের যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন অনেক মানুষ, চারিদিকের মাটি রক্তাক্ত, কান্নার রোল, বিধ্বংসী এই যুদ্ধ করতে করতে আর না যেন আরও কতো মানুষের প্রাণ যাবে, এইসব ভাবতে ভাবতে অর্জুন কি সাময়িক সময়ের জন্যে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন!!
তিনি পার্থসারথি তথা শ্রীকৃষ্ণকে বলছেন, ওহে পার্থসারথি!! আমি ক্লান্ত অনুভব করছি, তুমি একটু অপেক্ষা করো, আমি গঙ্গায় দুটো ডুব দিয়ে আসি, এতো হত্যা করছি, যদি একটুও পাপস্খলন ঘটে, তাও সার্থক!!!
দেখুন তো, কি অদ্ভুত মায়া, গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতী ত্রিবেণী যাঁর চরণাশ্রিত, তাঁর পাদপদ্ম স্পর্শ করলেই পৃথিবীর সমস্ত পাপ ধুয়ে যায়, তাঁকে না চিনে, তাঁকে না বুঝেই অর্জুন চলেছেন, গঙ্গা নাইতে!!! শ্রীকৃষ্ণ মনে মনে ভাবতে লাগলেন, বন্ধু! তুমি আমায় চেনো না!!! মৃদু হেসেই মনে মনে বলতে লাগলেন, আচ্ছা বেশ!! অর্জুন! তোমার সাথে আজ একটু মশকরা করা যাক্!!! একটু লীলা হোক আজ!!
নদীর সামনেই ঘোর জঙ্গল!! এক জীর্ণ-শীর্ণ শেয়াল ঐ মৃতদেহটিকে দেখতে পেয়ে, সেটির কাছে এসে কিছু একটা পর্যালোচনা করে ফিরে যেতে লাগলো। রাস্তায় সেই শেয়ালটির আর এক বন্ধু শেয়ালের সাথে দেখা!! তারা গল্প করতে লাগলো!!
মুহূর্তের মধ্যেই শ্রীকৃষ্ণ বিছিয়ে দিলেন এক মায়াজাল!! ঘটে গেলো এক অদ্ভুত ঘটনা!! অর্জুন তাঁর স্নান সেরে, রথের সামনে গিয়ে পার্থসারথির দেখা না পেয়ে রথে বসে সখার জন্য অপেক্ষা করতে থাকলেন। ইতিমধ্যে, দু’জন ব্যক্তি এক শবদেহ ঘাটে নিয়ে এলো, দাহ করবেন বলে। কিন্তু কাঠ জোগাড় না হলে দাহকার্য সম্পন্ন হবে কি করে? এদিকে কারোরই শবের সাথে একাকী থাকার মতো সাহস নেই!!
তারা অর্জুনকে অনুরোধ করলেন শবদেহকে সাময়িক সময়ের জন্য দেখভাল করতে এবং অর্জুন রাজীও হয়ে গেলেন!! তারপর তারা অনুমতি নিয়ে বিদায় নিলেন, কাঠ জোগাড়ের উদ্দেশ্যে!! নদীর সামনেই ঘোর জঙ্গল!! এক জীর্ণ-শীর্ণ শেয়াল ঐ মৃতদেহটিকে দেখতে পেয়ে, সেটির কাছে এসে কিছু একটা পর্যালোচনা করে ফিরে যেতে লাগলো। রাস্তায় সেই শেয়ালটির আর এক বন্ধু শেয়ালের সাথে দেখা!! তারা গল্প করতে লাগলো!!
অর্জুনের এইসব কথা শুনে অশ্রুধারা বইতে লাগলো এবং নিজের ত্রুটি বুঝতে পারলেন, সেই সময়ে শ্রীকৃষ্ণ তাঁর সামনে অবতীর্ণ হতেই আছড়ে পরলেন শ্রীকৃষ্ণের চরণে। অর্জুন বললেন, হে প্রভু! আমার গুরুতর অন্যায় হয়েছে, আপনি আমার সামনে থাকতেও আমি আপনাকে চিনতে পারিনি, আপনার চরণেই ত্রিবেণী বিদ্যমান, আপনার চরণাশ্রিত সকল ভক্ত, সমস্তরকম বিপদ থেকে উদ্ধার পান, হে শ্রীকৃষ্ণ!! আমায় ক্ষমা করুন।। তারপর শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে আলিঙ্গন করলেন।
অর্জুনের এক বিশেষ ক্ষমতা ছিল যে, তিনি পশুপাখিদের ভাষা বুঝতে পারতেন!! তাই শেয়াল দুটোর কথা তিনি মন দিয়েই শুনছিলেন। বন্ধু শেয়াল বলছে, কিরে? তোর সামনে এতো সুন্দর খাবার পরে আছে, তুই না খেয়ে ফিরে যাচ্ছিস্ কেনো?
একেই তোর যেমন শরীর, না খেয়ে থাকলে তুই তো আর বাঁচবি নারে!! তখন সেই জীর্ণ শেয়াল বলছে, ওরে!! আমি তো খেতেই গিয়েছিলামরে ভাই, কিন্তু খেতে পারলাম না, কেনো জানিস? আমি প্রথমে ঐ লোকটির পা শুঁকলাম, দেখলাম লোকটি চরণ কখনও কোনো তীর্থস্থানে অবতরণ করেনি, হাতটা শুঁকে দেখলাম, লোকটি কখনও কিছু দান করেনি, লোকটির বুক শুঁকে দেখলাম, লোকটি কখনও কোনো সাধুকে আলিঙ্গন করেনি, মুখ ও কানটিও শুঁকেও দেখলাম, লোকটি কখনও জীবনে হরিনাম নেয়নি এবং শোনেও নি; এই রকম পাপীকে আমি ভক্ষণ করতে পারবো না। একথা শুনে বন্ধু শেয়াল বলছে, ওরে!!
এর চেয়েও বড়ো পাপী কে জানিস্? যে ঈশ্বরকে সন্নিকটে পেয়েও চিনতে না পারে, তার মতো পাপী এই দুনিয়াতে নেই, ঐ দেখ্ রথে বসে আছে!! অর্জুনের এইসব কথা শুনে অশ্রুধারা বইতে লাগলো এবং নিজের ত্রুটি বুঝতে পারলেন, সেই সময়ে শ্রীকৃষ্ণ তাঁর সামনে অবতীর্ণ হতেই আছড়ে পরলেন শ্রীকৃষ্ণের চরণে।
অর্জুন বললেন, হে প্রভু! আমার গুরুতর অন্যায় হয়েছে, আপনি আমার সামনে থাকতেও আমি আপনাকে চিনতে পারিনি, আপনার চরণেই ত্রিবেণী বিদ্যমান, আপনার চরণাশ্রিত সকল ভক্ত, সমস্তরকম বিপদ থেকে উদ্ধার পান, হে শ্রীকৃষ্ণ!! আমায় ক্ষমা করুন।। তারপর শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে আলিঙ্গন করলেন।
…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই “সাধু পঞ্জিকা” দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
………………………..
আরো পড়ুন:
মহাত্মা ফকির লালন সাঁইজি: এক
মহাত্মা ফকির লালন সাঁইজি: দুই
মহাত্মা ফকির লালন সাঁইজি: তিন
…
লালন ফকিরের নববিধান: এক
লালন ফকিরের নববিধান: দুই
লালন ফকিরের নববিধান: তিন
…
লালন সাঁইজির খোঁজে: এক
লালন সাঁইজির খোঁজে: দুই
…
মহাত্মা লালন সাঁইজির দোলপূর্ণিমা
মহাত্মা ফকির লালন সাঁইজির স্মরণে বিশ্ব লালন দিবস
লালন গানের বাজার বেড়েছে গুরুবাদ গুরুত্ব পায়নি
লালন আখড়ায় মেলা নয় হোক সাধুসঙ্গ
কে বলে রে আমি আমি
ফকির লালন সাঁই
ফকির লালনের ফকিরি
ফকির লালন সাঁই
…
বিশ্ববাঙালি লালন শাহ্
ফকির লালন সাঁইজির শ্রীরূপ
গুরুপূর্ণিমা ও ফকির লালন
বিকৃত হচ্ছে লালনের বাণী?
লালন অক্ষ কিংবা দ্রাঘিমা বিচ্ছিন্ন এক নক্ষত্র
লালন ফকির : হিন্দু কি যবন