দুলালচাঁদ
আবির্ভাব- বাংলা-১১৮২, ইং-১৭৭৬।
তিরোভাব- বাংলা-১২৩৯, ইং- ১৮৩৩।
পিতা- রামশরণ, মাতা- সতীমা। সতীমার একমাত্র পুত্র সন্তান দুলালচাঁদ, ওরফে রামদুলাল, (লালশশী)।
কর্তাভজা ধর্মালম্বীগণের অনেকের-ই বিশ্বাস সতীমার ভক্তির ডােরে বাঁধা পড়ে ঠাকুর আউলচাঁদ সতীমার গর্ভে দুলালচাঁদ রূপে জন্মগ্রহণ করেন। দুলালচাঁদ ছিলেন অতিশয় তীক্ষ্ণ ধারণ শক্তি ও অসাধারণ জ্ঞান সম্পন্ন এক ব্যক্তিত্ব, শৈশব কালেই তিনি প্রচলিত বিদ্যা শিক্ষাসহ সংস্কৃত, বাংলা, ইংরেজী ও ফার্সী ভাষায় বিশেষ পারদর্শী হয়ে উঠেন।
বাকসিদ্ধা, ঐশ্বরিকক্ষমতা ও অতিমানবীয় গুণাবলীর অধিকারিণী সতীমার গর্ভে জন্মগ্রহণ করায় দুলালচাঁদের মধ্যেও ঐশ্বরিক ক্ষমতার নিদর্শন ছিল। মাত্র সাত বছর বয়সেই দুলালচাঁদের ঐশ্বরিক ক্ষমতার নিদর্শন পেয়ে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দুলালচাঁদকে দেবমহান্ত উপাধিতে ভূষিত করেন।
বাংলা-১১৮৯ সালে রামশরণ পরলােকগমন করেন, দুলালচাঁদের বয়স তখন মাত্র সাত বছর, স্বামীর দেহত্যাগের পর ঠাকুর সংসারের দায়িত্ব নেবার মত আর কেউ না থাকায় সকল দায়িত্ব সতীমার উপর-ই বর্তেছিল, একদিকে ঠাকুরবাড়ি ও ভক্তবৃন্দের দেখা শুনা, আরেক দিকে সংসার, তারপর আরও কঠিন পরিস্থিতি ছিল সমাজপতিদের দ্বারা কর্তাভজা ধর্মের প্রতি প্রবল বিরােধিতা।
ওরা বলে কিনা শিক্ষা-দীক্ষা-জ্ঞান অর্জন করলে-ই সে দীক্ষা দাতা (গুরুদেব) হতে পারবে, মানুষ মাত্রেই সবার সমান অধিকার, ছিঃ ছিঃ ছিঃ, গুরু (শিক্ষক) হতে হলে ব্রাহ্মণ বংশ হতে হবে না! ঐ যে ডুবােপাড়ার (ঘােষপাড়া) এক বেটি আছে, উনি নাকি সতীমা, মানুষকে শিক্ষা-দীক্ষা দিচ্ছে, লােক সব মা মা বলে পাগল, সাথে কিছু কিছু ব্রাহ্মণ পুত্রও দেখছি মা মা করে পাগল হচ্ছে, উনি আবার সতী হলাে কি করে?
ব্রাহ্মণ্যবাদ তথা সমাজপতিদের একছত্র আধিপত্যে ভাঙন ধরায় প্রথম থেকেই গােড়া ব্রাহ্মণ সমাজপতিরা জাত-পাত-বর্ণ বৈষম্যহীন কর্তাভজা ধর্মকে ভাল চোখে দেখত না, তারপর রামশরণের পরলােকগমণের পর সমাজপতিরা কর্তাভজা ধর্মকে কটাক্ষ করে নানা রকম কুৎসা রটনা করতে থাকে।
তারা কখনও লেখনীর সাহায্যে কখনও লােকসমাজে, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা বিবৃতির মাধ্যমে বিদ্রুপ করে বলতে থাকে কর্তাভজা ধর্ম হচ্ছে ফকরে ধর্ম, ওরা বেদ-পূরাণের জাতিভেদ তত্ত্ব মানে না, ছােটজাত বড়জাত সব এক সাথে চলে ওরা জাত-পাত ধর্ম-কর্ম সব রসাতলে দিল, ওরা পৌরাণিক দেব-দেবীর পূজো করা পছন্দ করে না।
বলে কিনা মানুষ-ই ঠাকুর মানুষকে ভালবাসলে নাকি ভগবানকে ভালবাসা হয় আর গুরুপূঁজা-ই নাকি শ্রেষ্ঠ পূঁজা, তাহলে আমাদের বাপ-দাদারা বা আমরা যেসব দেব-দেবীর পূঁজা করছি এসব কি ভুল! ওরা বলে জগৎকর্তা একজন তিনি-ই সর্বশক্তির মূলাধার, তার ভজনা করলে আর কোন দেব-দেবীর ভজনা করার প্রয়ােজন থাকে না।
তাহলে সম্পদের জন্য লক্ষী দেবী, বিদ্যার জন্য স্বরসতী দেবী, অমঙ্গলের শনি দেবতা, বসন্ত রােগের জন্য শীতলা, বিপদ রক্ষায় মা’কালী, সাপের জন্য মনসা, সন্তানের জন্য ষষ্টী, আমরা এতকাল যা করছি সব-ই ভুল? এ সব কি বেদ শাস্ত্রের কথা?
ছিঃ ছিঃ। শুনছি ঘােষপাড়া নাকি একটা তীর্থধাম হয়েছে, ওখানে তাে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ছােটজাত বড়জাত সব একসাথে মিলে মিশে একাকার হয়, জাত ধর্ম বলে কিছু আর থাকল না সব রসাতলে গেল।
ওরা বলে কিনা শিক্ষা-দীক্ষা-জ্ঞান অর্জন করলে-ই সে দীক্ষা দাতা (গুরুদেব) হতে পারবে, মানুষ মাত্রেই সবার সমান অধিকার, ছিঃ ছিঃ ছিঃ, গুরু (শিক্ষক) হতে হলে ব্রাহ্মণ বংশ হতে হবে না! ঐ যে ডুবােপাড়ার (ঘােষপাড়া) এক বেটি আছে, উনি নাকি সতীমা, মানুষকে শিক্ষা-দীক্ষা দিচ্ছে, লােক সব মা মা বলে পাগল, সাথে কিছু কিছু ব্রাহ্মণ পুত্রও দেখছি মা মা করে পাগল হচ্ছে, উনি আবার সতী হলাে কি করে?
সতী নারী তাে মৃত স্বামীর সাথে জলন্ত চিতায় পুড়ে সহমৃতা হবে তবে তাে সে সতী! এই হলাে শাস্ত্রের বিধান, উনি বেদ-শাস্ত্রও মানে না আবার বিধবা হয়ে মাথা টাকও (নেড়া) করে না! বিধবা নারীর ধর্মে-কর্মে কোন অধিকার আছে নাকি? বেদশাস্ত্র জাত-ধর্ম সব রসাতলে গেল।
তারা কর্তাভজা ধর্মের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষের মনে বিভ্রান্তি ছড়ানাের সাধ্যমত চেষ্টা করতেন, কিন্তু এত বিরােধিতা সত্বেও সমাজপতিদের কটাক্ষ-বিদ্রপ উপেক্ষা করে ঠাকুর আউলচাঁদের আশির্বাদ ধন্য বাকসিদ্ধা, সতীমার দূঢ় চেতনা, সত্যের উপর অটল বিশ্বাস, মালিকের উপর ঐকান্তিক নির্ভরশীলতা এসব মহৎগুণ দ্বারা অবহেলিত, মানুষসহ উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়-হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খৃষ্টানসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে কর্তাভজা ধর্মের আদর্শ পৌঁছে দিতে সমর্থ হয়েছিলেন।
ওরা বলে ওদের কর্তাভজা ধর্ম গ্রহণ করলে মুচি-মেথর-চণ্ডাল-অস্পৃশ্য শূদ্র-বৈশ্য-ক্ষত্রিয়-ব্রাহ্মণ সব একজাত হয়ে যাবে শুধু ওই মন্ত্রে দীক্ষা নিলেই ছােটজাত শূদ্ররা মানুষ হয়ে গেল, তাহলে বেদ-পূরাণে যে সব বর্ণভেদের বিধান আছে সব কি ভুল। ছিঃ ছিঃ ছিঃ এরা ধর্ম-কর্ম কে একেবারে রসাতলে ডুবিয়ে দেবে, এই ভাবে তৎকালীন সময়ের ব্রাহ্মণ-সমাজপতিরা কর্তাভজা ধর্ম তথা সতীমাকে কটাক্ষ করত এবং অপপ্রচার চালাতাে।
এমতাবস্থায় ততকালীন সময়ে একজন বিধবা নারীর পক্ষে মেরুদণ্ড সােজা করে দাঁড়ানাে ছিল এক অসাধ্য কাজ। কর্তাভজাদের বিরুদ্ধে ব্যঙ্গ-বিদ্রপ করে যে সমস্ত ব্যক্তি কবিতা প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন পাঁচালীকার দাশরথি রায় ছিলেন তাদের অন্যতম, তিনি ছিলেন গােড়া ব্রাহ্মণ। কর্তাভজাদের গালাগালি করতে গিয়ে কর্তাভজা ধর্মের প্রকৃত রূপটি তিনি বর্ণনা করে ফেলেছেন। তিনি লিখেছেন-
ওদের একটি আলাদা তন্ত্র, ত্যাগ করে সব ইষ্ট মন্ত্র, হয় মানুষ মন্ত্রে দীক্ষে। কি নীচ কি ভদ্র, সকলে হয়ে একত্র, ঐক্য করে এক গােত্র, এইতাে তাদের শিক্ষে। জেতের বিচার নেই আচার শূন্য, একত্রে জুটে ছত্রিশবর্ণ, ধােবা, কলু, মুচি। বাগদি-হাড়ি-বামুন-কায়স্থ, ডােম কোটাল যবন সমস্ত, সকলে এক অন্নে রুচি। পরে না কপণি বর্হিবেশ, নয় বৈরাগী নয় দরবেশ, নয় কোন ভেকধারী ওরা পূরাণ মানে কি কোরান মানে, তার কিছুই বুঝতে নারি।
দাশুরথি রায়ের আক্রমন যেন ব্রাহ্মণ্য তেজে জ্বলে উঠেছে বর্ণপ্রথার ব্যভিচার দেখে। সমাজ সংস্কারকদের চোখে যা গুণ, দাশুরথি রায়ের মত ব্রাহ্মণদের কাছে তা অনাসৃষ্টি-অনাচার। তাছাড়াও জাত-পাত-বর্ণ বৈষম্যহীন উদার কর্তাভজা ধর্ম প্রচারিত হওয়ায় হিন্দুদের ধর্মান্তরিত হওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায় এজন্য ইসলামধর্ম প্রচারক কট্ররপন্থী মৌলভীগণ, ও খ্রীষ্টানধর্ম প্রচারক খ্রীষ্টান পাদ্রী-বিশপরাও সতীমায়ের উপর মনে মনে ক্ষিপ্ত ছিল,
তারা কর্তাভজা ধর্মের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষের মনে বিভ্রান্তি ছড়ানাের সাধ্যমত চেষ্টা করতেন, কিন্তু এত বিরােধিতা সত্বেও সমাজপতিদের কটাক্ষ-বিদ্রপ উপেক্ষা করে ঠাকুর আউলচাঁদের আশির্বাদ ধন্য বাকসিদ্ধা, সতীমার দূঢ় চেতনা, সত্যের উপর অটল বিশ্বাস, মালিকের উপর ঐকান্তিক নির্ভরশীলতা এসব মহৎগুণ দ্বারা অবহেলিত, মানুষসহ উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়-হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খৃষ্টানসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে কর্তাভজা ধর্মের আদর্শ পৌঁছে দিতে সমর্থ হয়েছিলেন।
এ জন্য সামাজিকভাবে অবহেলিত নির্যাতিত মানুষেরা পেয়েছিল ধর্মে-কর্মে অধিকার আর সহজ সরল গ্রাম্য গৃহবধূ সরস্বতী হয়েছিলেন স্ব-মহিমায় উজ্জল, দীন-দুঃখী, পাপী-তাপী, অবহেলিত মানুষের আশ্রয়স্থল পরম পূঁজনীয় সতীমা।
সন্ন্যাসীদের কাছ থেকে এসব কথা শুনে কৌতুহলী মনে সন্ন্যাসীদের কাছে দুলালচাঁদ জিজ্ঞাসা করলেন আপনারা সংসার ত্যাগী, বহুদিন যাবৎ সাধনা করেছেন নিশ্চয় নিজ নিজ সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছেন এবং ঈশ্বরের কৃপায় ঈশ্বর দর্শনও হয়েছে, এবার আমাকে কৃপা করে বলবেন কি, আপনারা কে কি রূপে ঈশ্বর দর্শন করেছেন?
ঠাকুর আউলচাঁদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘সতীমা’ প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার বিপরীতে অবস্থান নেওয়ায় উচ্চবর্ণ হিন্দুদের রক্ষণশীল ও আধিপত্যবাদের দূর্গে আঘাত লাগে, সে জন্য উচ্চবর্ণের কিছু কিছু মানুষ কর্তাভজা ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ পূর্ণ মনােভাব নিয়ে এর বিরুদ্ধে অপ-প্রচার চালাতে থাকে সেই ধারাবাহিকতা মৃদুভাবে হলেও আজও অব্যহত আছে।
এত প্রতিকূলতার মধ্যেও সতীমা তার সন্তান দুলালচাঁদকে শিক্ষা-দীক্ষা সহ সকল বিষয়ে পারদর্শী করে গড়ে তুলেছিলেন। শৈশব বয়সেই দুলালচাঁদ একবার অগ্রদ্বীপের মেলায় গিয়েছিলেন সেখানে অসংখ্য নারী-পুরুষ সাধু-সন্ন্যাসী দেখে দুলালচাঁদের এই ধারণা-ই হয়েছিল যে ঈশ্বর উপাসনা করতে হলে হয়তাে সংসার ছেড়ে সন্ন্যাসী হতে হয়।
এই ধারণার বশবর্তী হয়ে চিমটা-ত্রিশূল ধারী, জটাজুট-কমণ্ডূলধারী, দিগম্বর-কৌপিন ধারী, গেরুয়া বসন টিকিধারী, ভিন্ন ভিন্ন সাধু-সন্ন্যাসীর কাছে সাধন-ভজন ও ঈশ্বরতত্ব সম্মন্ধে জানার আগ্রহ প্রকাশ করলে, সন্ন্যাসীরা ভিন্ন ভিন্ন দিক নির্দেশনা দিলেন।
কেউ বললেন এ জগৎ মায়াময় মিথ্যা, মায়া ত্যাগ না করলে ঈশ্বর দর্শন হবে না, সংসারে আবদ্ধ হলে মায়াজলে আবদ্ধ হয়ে পড়বে, তাই মায়া ত্যাগ করতে হলে সংসার ধর্ম না করে তীর্থে-তীর্থে ঘুরে বেড়াও আর তীর্থ দেবতার নাম কর একদিন ঈশ্বর দর্শন হবে, কেউ বলল সময় গেলে সাধন হবে না।
তাই সংসারে আবদ্ধ না হয়ে সময় থাকতে একজন যােগীগুরুর আশ্রয় লও যােগ সাধনা কর, প্রাণায়াম সাধনা কর, মূলাধার পদ্মস্থিত কুলকুণ্ডলিনী জাগ্রত কর, তারপর ষটচক্র ভেদ করে সহস্রদল পদ্মে পরমাত্মার সাথে জীবাত্মার যােগ কর, তবেই ঈশ্বর দর্শন হবে।
কেউ বলল কামিনী কাঞ্চন (নারী-অর্থ সম্পদ) নরকের দ্বার স্বরুপ, এই নরক থেকে বাঁচতে হলে তােমাকে অবশ্যই সংসার ত্যাগ করতে হবে, তারপর সন্ন্যাসী গুরুর কাছে থেকে সন্ন্যাস মন্ত্র গ্রহণ করে সন্ন্যাসী হতে হবে, তারপর তীর্থে-তীর্থে ভ্রমণ কর আর প্রত্যহ অসংখ্য নাম জপ কর, একদিন ঈশ্বর দর্শন হবে।
সন্ন্যাসীদের কাছ থেকে এসব কথা শুনে কৌতুহলী মনে সন্ন্যাসীদের কাছে দুলালচাঁদ জিজ্ঞাসা করলেন আপনারা সংসার ত্যাগী, বহুদিন যাবৎ সাধনা করেছেন নিশ্চয় নিজ নিজ সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছেন এবং ঈশ্বরের কৃপায় ঈশ্বর দর্শনও হয়েছে, এবার আমাকে কৃপা করে বলবেন কি, আপনারা কে কি রূপে ঈশ্বর দর্শন করেছেন?
কিশাের বালকের মুখে শিশু সুলভ প্রশ্ন শুনে সন্ন্যাসীগণ বললেন ওরে বালক জীবদশা থাকতে কি ঈশ্বর দর্শন হয়! শুধু আশায় আশায় বসে আছি যদি তাঁর কৃপা হয়।
অগ্রদ্বীপের মেলায় গিয়ে দুলালচাঁদ মনে করেছিল কিভাবে ঈশ্বরের দর্শন পাওয়া যায় সন্ন্যাসীদের কাছ থেকে সেই পথের সন্ধান জানা যাবে কিন্তু সাধু সন্ন্যাসীর কাছে ভিন্ন ভিন্ন দিকনিদে্শনা পেয়ে বিভ্রান্ত মন নিয়ে দুলালচাঁদ মায়ের কাছে উপস্থিত হল এবং অগ্রদ্বীপের মেলার সাধু সন্ন্যাসীদের সাথে আলাপকৃত সকল কথা মায়ের কাছে খুলে বলল। দুলালচাঁদ তাঁর স্ব-রচিত পবিত্র ‘ভাবেরগীত’ গ্রন্থে বলেছেন-
একবার অগ্রদ্বীপের মহােৎসব দেখতে গেলাম একা,
আখড়াধারী কত পুরুষ নারী তা হয় না লেখা-জোখা।।
হল দেখতে গিয়ে বারেক চেয়ে আপনাতে ভুল, বলবাে কি ভুল হয়ে দেখি আজ বুঝি বাধলাে আরম্ভুল। জানি আদ্য প্রান্ত অবিশ্রান্ত মনত বিচক্ষণ, অমনি সেই গুণমনি আপনি করলেন স্মরণ, যা হারিয়ে ছিলাম বর্তে গেলাম দেখতে পেলাম দর্পণে দুলালচাঁদ যে অসাধারণ জ্ঞান সম্পন্ন ও বিচক্ষণ ব্যক্তি ছিলেন কিশাের বয়সেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
(‘ভাবেরগীত, গীত নং-৩২৬, কলি-৪)
……………..
‘সতীমা ও সত্যদর্শন’ বই থেকে সংগৃহীত
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
……………..
আরও পড়ুন-
কর্তাভজা ধর্মের ইতিহাস
ঠাকুর আউলচাঁদের আবির্ভাব
গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ভুক্ত ভক্তদের বিশ্বাস
রামশরণ ও সতীমার দীক্ষা গ্রহণ
কর্তাভজা সম্প্রদায়ের দশ আজ্ঞা
সতীমা কে?
শূদ্র কারা?
ঘোষপাড়ার ডালিম তলা ও হিমসাগরের মাহাত্ম্য
কর্তাভজার বাইশ ফকির
আউলচাঁদের তিরােধান
দুলালচাঁদ
সতীমায়ের উপদেশ বাণী
ঘোষপাড়ার রথযাত্রা উৎসব
সতীমার তিরােধান
কর্তাভজা ধর্মের মূলস্তম্ভ
ত্রিশ ধারা