ভবঘুরেকথা

৪৪৮
দুনিয়া বিমুখতা কোরানের দুটি বক্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আল্লাহ বলেন, ‘পাছে তোমরা যা পাও নি তার জন্য নিজে নিজে দুঃখ কর এবং তিনি তোমাদের যা দিয়েছেন সে জন্য অতি উল্লসিত হয়ে পড়।’ (কোরান ৫৭:৩২)

যে ব্যক্তি হারানো বিষয়ে দুঃখ করে না এবং যা পায় তাতে বিদ্রোহ করে না সেই প্রকৃত দুনিয়া বিমুখতা অর্জন করেছে।

৪৪৯
নিদ্রা দিনের সংকল্পের কতই না ভঙ্গকারী।

৪৫০
শাসন ক্ষমতা মানুষের প্রমাণ-ক্ষেত্র।

৪৫১
তোমাদের ওপর তোমাদের নিজেদের শহর অপেক্ষা অন্য কোন শহরের বেশি অধিকার নেই। সে শহর তোমার জন্য সর্বোত্তম যেটিতে তুমি বাস করা।

৪৫২
আলী মালিক আশতারের শাহাদাতের সংবাদ শুনে বললেন, ‘হায় মালিক! কতো বড়ো মানুষ ছিল মালিকা!! আল্লাহর কসম, যদি সে পর্বত হতো, তাহলে হতো এক মহাপর্বতমালা।

সে যদি পাথর হতো তাহলে সে এতোটা কঠিন ও বিশাল হতো যে, কোন অশ্বারোহী তার ওপর ওঠতে পারতো না, কোন পাখী পারতো না তার ওপর দিয়ে উড়তে।’

৪৫৩
যা স্থায়ী হয় তার সামান্যও ওটার অনেকটা থেকে ভালো যা দুঃখ বয়ে আনে।

৪৫৪
যদি কোন ব্যক্তির অতি প্রাকৃত একটি গুণ প্রকাশ পায় তবে তার সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তার অন্যান্য গুণাবলী দেখে নিয়ো।

৪৫৫
আলী গালিব ইবনে সাআ’ সাহ কবি ফারাজদাকের পিতার সাথে কথোপকথন কালে বললেন, ‘আপনার বিপুল সংখ্যক উটের কী অবস্থা?’

গালিব উত্তর দিলেন, ‘হে আলী! দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উট নিঃশেষ হয়ে গেছে।’

আলী বললেন, ‘উটগুলো হারানোর প্রশংসিত পথ সেটাই।’

৪৫৬
দ্বীনের আইন-কানুন না জেনে যে ব্যবসায় করে সে কুসীদ ব্যবসায়ে জড়িয়ে পড়ে।

৪৫৭
ছোট-খাট বিপদাপদকে যে বড় কিছু মনে করে আল্লাহ তাকে বড় দুঃখ-কষ্টে ফেলেন।

৪৫৮
যে ব্যক্তি আত্মসম্মানের দিকে খেয়াল রাখে। তার কামনা-বাসনা তার কাছে হালকা হয়ে যায়।

৪৫৯
যখনই মানুষ হাসি-তামাশায় লিপ্ত হয় তখনই সে তার প্রজ্ঞা থেকে কিছুটা সরে পড়ে।

৪৬০
যে ব্যক্তি তোমার দিকে ঝুঁকে পড়েছে তার দিক থেকে মুখ ফেরানো তোমারই সুবিধার অংশ হারানো। অপর দিকে তুমি কারো প্রতি ঝুঁকে পড়লে সে তোমার দিক থেকে মুখ ফেরানো তোমার জন্য অবমাননাকর।

৪৬১
ধনসম্পদ ও দুঃখ-দুর্দশা আল্লাহর সম্মুখে উপস্থাপনার পর প্রকাশিত হয়ে পড়বে।

৪৬২
জুবায়েরের দুরাচার পুত্র আবদুল্লাহ্ জন্মাবার পূর্ব পর্যন্ত জুবায়ের আমাদের একজন ছিল।

৪৬৩
মানুষ কিসে দম্ভ করে যেখানে তার উৎপত্তি হলো রতি আর পরিণতি হলো লাশ এবং সে নিজেকে খাওয়াতে পারে না বা মৃত্যুকে ঠেকাতে পারে না।

৪৬৪
কেউ একজন আমি করুল মোমেনিনকে জিজ্ঞেস করলেন, সব চাইতে বড় কবি কে? উত্তরে তিনি বললেন, কবিরা সকলে একই লাইনে তাদের চিন্তাভাবনা ব্যক্ত করে না। ফলে আমরা তাদের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ণয় করতে সক্ষম হই না। তাসত্ত্বেও আল-মালিক আদ-দিল্লিল অর্থাৎ ইমরিউল কায়েস শ্রেষ্ঠ।

৪৬৫
এমন কোন মুক্ত লোক কি নেই, যে দুনিয়ার উচ্ছিষ্টকে যারা পছন্দ করে তাদের জন্য তা রেখে যায়। নিশ্চয়ই, তোমার জন্য একমাত্র মূল্য হলো বেহেশত। সুতরাং বেহেশত ছাড়া অন্য কিছুর জন্য নিজকে বিক্রি করো না।

৪৬৬
দুই ধরনের লোভী ব্যক্তি কখনো তৃপ্ত হয় না। এদের একজন হলো জ্ঞান অন্বেষণকারী আর অপরজন হলো দুনিয়া অন্বেষণকারী।

৪৬৭
ইমানের চিহ্ন হলো- তুমি সত্যকে আঁকড়ে ধরবে যদি তাতে তোমার ক্ষতিও হয় এবং মিথ্যাকে বর্জন করবে যদি মিথ্যা দ্বারা তোমার লাভও হয়। তোমার কথা যেন কাজের চেয়ে বেশি না হয় এবং অন্যদের সম্পর্কে কথা বলতে আল্লাহকে ভয় করো।

৪৬৮
ভাগ্য আমাদের পূর্ব-স্থিরীকৃত বিষয়েরও নিয়ন্ত্রণকারী যতক্ষণ পর্যন্ত না চেষ্টা ধ্বংস সংঘটিত করে।

৪৬৯
ক্ষমা আর ধৈর্য জমজ এবং দুটি উচ্চ স্তরের সাহসের ফল।

(চলবে…)

…………………………….
সূত্র: নাহজ আল-বালাঘা

…………………………….
আরো পড়ুন:
মাওলা আলীর বাণী: ১
মাওলা আলীর বাণী: ২

মাওলা আলীর বাণী: ৩
মাওলা আলীর বাণী: ৪
মাওলা আলীর বাণী: ৫
মাওলা আলীর বাণী: ৬
মাওলা আলীর বাণী: ৭
মাওলা আলীর বাণী: ৮
মাওলা আলীর বাণী: ৯
মাওলা আলীর বাণী: ১০
মাওলা আলীর বাণী: ১১

মাওলা আলীর বাণী: ১২
মাওলা আলীর বাণী: ১৩
মাওলা আলীর বাণী: ১৪
মাওলা আলীর বাণী: ১৫

মাওলা আলীর বাণী: ১৬
মাওলা আলীর বাণী: ১৭
মাওলা আলীর বাণী: ১৮
মাওলা আলীর বাণী: ১৯
মাওলা আলীর বাণী: ২০

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!