ফকির লালন সাঁইজির দোলপূর্ণিমা উৎসব ১৪২৮
সুধী,
প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমায় অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে দোল উৎসব। হিসেবের স্রোতে এইবার দোলপূর্ণিমা পড়েছে ৪চৈত্র ১৪২৮ বঙ্গাব্দ। সেই মোতাবেক ১৮মার্চ ২০২২ খ্রিস্টাব্দ। যতদূর জানা যায়, ফকিরকূলের শিরোমণি ফকির লালন সাঁইজি নিজে ছেঁউড়িয়ার আখড়ায় এই উৎসব পালন করতেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজও ভক্তকুল দোলপূর্ণিমা তিথিতে জমায়াত হয় ফকিরের আখড়াবাড়িতে।
কাল পরিক্রমায় আজ আখড়াবাড়ির নাম পরিবর্তন করে জোর প্রচার করা হয়েছে “লালন শাহ্’র মাজার” নামে। যদিও প্রকৃত ভক্তরা এই শব্দের রাজনীতিতে পড়তে নারাজ। তারা আজও ‘লালন আখড়া’ বা শ্রদ্ধা-বিনয়ে বলে থাকেন- “লালন ধাম”।
অন্যদিকে লালন আখড়ায় সাধুসঙ্গের বদলে আজ আনুষ্ঠানিকতার বেড়াজ্বালে হয়ে উঠেছে স্মরণোৎসব বা মেলা। সেটিও লালন মতাদর্শ থেকে বহুদূরে। যৌলুশ নয় সাত্ত্বিকতাই ফকিরের পথ। কিন্তু এতোশত প্রশাসনিক জটিলতা আর ফকিরদের গুরুর আখড়ার দায়িত্বভার বুঝে না নেয়ার সুযোগে আচারের জায়গায় কিছু কিছু অনাচারও ঢুকে পরছে আনুষ্ঠানতায়।
লোক দেখানো বেশধারী সাধুগুরু আর পোশাকী শিল্পীরাই আজ হয়ে উঠেছে উৎসবের মূখ্যমণি। প্রকৃত সাধুগুরুপাগলভক্তরা তাদের দাপটে চলে গেছে আড়ালে-আবডালে। তাই তাদের খুঁজে পাওয়া বা বুঝে পাওয়া আজ আর সাধারণের কর্ম নয়। এইভাবে ফকির লালন তাঁর রহস্যময়তা বরাবরের মতোই আরও বিস্তার করেছে।
ঝলমলে মেলা, দামী পোশাকের শিল্পী, অহংকারী সাধু আর অন্ধ ভক্তদের মাঝ থেকে যে প্রকৃত মানুষ খুঁজে নিতে পারে; পাড়ে যাওয়ার তরী তার জন্যই অপেক্ষারত। আর প্রকৃত ভক্ত সেই পথেরই অনুসন্ধানে রত থাকে। আর তাদের জন্যই আকূল হয়ে অপেক্ষায় থাকেন মহত’রা। সেই সাক্ষাৎ হয় সকলের সম্মুখে কিন্তু সকলেরই অগোচরে।
এমনই এক রহস্যের মেলা আবারো আয়োজিত হতে যাচ্ছে। যেখানে কেউ কাউকে আমন্ত্রণ করার প্রয়োজন হয় না। ভক্ত নিজ নিজ দায়িত্ব-কর্তব্য, ভাব-আবেগ, আকুতি-কাকুতি থেকে নিজেই নিজেকে দাওয়াত করে। নিজেই নিজের মতো হাজিরা দেয়।
বিশ্বব্যাপী অতিমারীর কারণে বিগত কয়েকবার ফকির লালন সাঁইজির ধামে কোনো প্রকার অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়া হয়নি। তবে লালন ভক্তদের জন্য আনন্দের সংবাদ হলো এইবার লালন ধামে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতার অনুমতি দেয়া হয়েছে। হবে সাধুসঙ্গ। বসবে মেলা। কিন্তু এই উৎসবে কে কাকে দাওয়াত করবে। কে এখানে দাওয়াতী আর কেউ দাওয়াতদ্বার সেটাই বড় প্রশ্ন।
যদিও সাধুগুরুরা বলেন, যাঁর অনুষ্ঠান তিনি তাঁর ভক্তদের কোনো না কোনভাবে দাওয়াত দিয়েই দেন। বা নিয়েই যান। গুরুর সংবাদ ভক্তের কাছে পৌঁছাতে পত্রের প্রয়োজন পরে না।
তারপরও সকলের অবোগতির জন্য তিথি নক্ষত্র লগ্ন যোগ পরিবর্তন করে যে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। তা জানিয়ে দেয়ার প্রয়োজন পরে যায়। এইবারও তাই ঘটেছে। পঞ্জিকা অনুসারে ৪ চৈত্র ১৮ মার্চ দোলপূর্ণিমা। সেই অনুযায়ী ১৮ তারিখে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা অর্থাৎ অধিবাস আরম্ভ হওয়ার কথা থাকলেও। এইবার ফকির লালন সাঁইজির দোলপূর্ণিমার মেলা অনুষ্ঠিত হবে ১৫ থেকে ১৭ মার্চ। অর্থাৎ ১-৩চৈত্র। আর ২৪ ঘণ্টাব্যাপী সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠিত হবে ৩ চৈত্র থেকে ৪ চৈত্র পর্যন্ত। অর্থাৎ ১৭ থেকে ১৮ মার্চ।
সাধুগুরুপাগলভক্ত সর্বচরণে পাপীর মস্তক দণ্ডপাত। সকলের কাছে ক্ষমাভিক্ষা চেয়ে পুন:বার ফকির লালন সাঁইজির দোলপূর্ণিমা উৎসবে “ফকির লালন সাঁইজির আখড়াবাড়ি” ছেঁউড়িয়া, কুষ্টিয়ায় সকলের সাথে যাতে সাক্ষাৎ দেখা-সাক্ষাৎ হয় সেই নিমন্ত্রণ রইল, এই মিনতি রইলো।
এই ভাবে লিখিত আহ্বান ও নিমন্ত্রণ জানানোর জন্য ঘোর অপরাধী। তবে সাধু দয়াময়, মার্জনা ভিক্ষা। জয়গুরু।।
বিনয়াবনত-
ভবঘুরেকথা.কম
সময়:
মেলা অনুষ্ঠিত হবে-
মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।
১-৩ চৈত্র ১৪২৮ বঙ্গাব্দ।
১৫-১৭ মার্চ ২০২২ খ্রিস্টাব্দ।
সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠিত হবে-
বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার ২৪ঘণ্টাব্যাপী।
৩-৪ চৈত্র ১৪২৮ বঙ্গাব্দ।
১৭-১৮ মার্চ ২০২২ খ্রিস্টাব্দ।
স্থান:
লালন আখড়া
ছেঁউড়িয়া, কুমারখালী, কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ।
“ফকির লালন সাঁইজির আইন অনুযায়ী সাধুসঙ্গে যে সকল গুরুকর্ম আছে তা ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও পালন করা হবে ২৪ ঘণ্টাব্যাপী সাধুসঙ্গে।”
অনুষ্ঠান সূচি:
প্রথমদিন অর্থাৎ ৩ চৈত্র/১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার
বিকেল ৫:০০-৬:০০ – সাধু আগমন।
সন্ধ্যা ৬:৩০-৭:০০ – সাধুগণের আসন গ্রহণ।
সন্ধ্যা ৭:০০-৭:৩০ – চাল জাল সহকারে গুরুকর্ম।
সন্ধ্যা ৭:৩০-৮:০০ – দীন ডাকা।
সন্ধ্যা ৮:৩০-৯:০০ – রাখাল সেবা প্রদান।
রাত ১০:০০-১০:৩০ – অধিবাস সেবা।
রাত ১১:৩০-৩:০০ – ফকির লালন সাঁইজির ভাবগান।
পরদিন অর্থাৎ ৪ চৈত্র/১৮ মার্চ শুক্রবার
সকাল ৬:০০-৭:০০ – গোষ্ঠ গান।
সকাল ৭:০০-৭:৩০ – গুরুকর্ম।
সকাল ৭:৩০-৯:৩০ – বাল্যসেবা।
বিকেল ২:০০-৩:০০ – পুণ্য সেবা।
ভাব সংগীত পরিবেশন:
কুষ্টিয়া-মেহেরপুরেসহ দেশ-বিদেশের
প্রবীন সাধুগুরু ও বিশিষ্ট শিল্পীবৃন্দ।
যাতায়াত :
ঢাকা থেকে
বাস সার্ভিস : যমুনা সেতু দিয়ে-
সড়কপথে ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ার দূরত্ব ২৭৭কিমি। ঢাকা শহরের গাবতলী, কল্যাণপুর ও সায়দাবাদ থেকে শ্যামলী, এসবি, হানিফ ইত্যাদি বাসে করে সরাসরি যাওয়া যায় কুষ্টিয়া। এছাড়াও আরো বেশকিছু বাস এই লাইনে চলাচল করে। গাবতলী থেকে লোকাল বাসও প্রতিদিন ছেড়ে যায় ঢাকা থেকে।
বাসে করে কুষ্টিয়ার মজমপুর গেটে নেমে সেখান থেকে রিকসা/অটো করে লালন ফকিরের ধাম ছেঁউড়িয়াতে। রাস্তায় মহাসড়কে যানযট না থাকলে আনুমানিক ৬ থেকে সাড়ে ৬ ঘণ্টা সময় লাগে। ভাড়া ৫ শ’ টাকার মতো।
পদ্মা নদী পারাপার-
ঢাকার যে কোনো বাসস্ট্যান্ড যেমন- গুলিস্তান, সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়ি, মহাখালী বা উত্তরা থেকে গাবতলী যেতে হবে। গাবতলী থেকে পাটুরিয়া ঘাট। গুলিস্তান বিআরটিসি বাসে করে সরাসরি পাটুরিয়া ঘাটে যাওয়া যায়। উত্তরা আব্দুল্লাপুর থেকে নবীনগর এসেও পাটুরিয়ার বাস ধরা যায়।
গাবতলী থেকে পাটুরিয়া ঘাটে যাওয়া যায় তুলনামূলক সহজে। সেক্ষেত্রে গাবতলী থেকে সেলফী, পদ্মালাইন বা নীলাচল বাসে করে সরাসারি পাটুরিয়া ঘাট। অসংখ্য লোকাল বাসও এই পথে পাটুরিয়া ঘাটে যায়। তবে লোকাল বাসে সময় অনেক বেশি লাগে। সরাসরি বাসে বর্তমানে ১৩০-১৫০ টাকায় ঘাট পর্যন্ত যাওয়া যায়। সময় লাগে আনুমানিক সোয়া দুই ঘণ্টা থেকে আড়াই ঘণ্টার মতো।
পাটুরিয়া ঘাটে নেমে কয়েক মিনিটের হাঁটা পথেই পৌঁছে যাওয়া যায় লঞ্চঘাটে। সেখান থেকে লঞ্চ, স্প্রীডবোর্ড বা ফেরীতে করে পদ্মা পাড়ি দেওয়া যায়। লঞ্চে ৩৫ টাকার বিনিময়ে শীতকালে আনুমানিক ২০-২৫ মিনিটে পদ্মা পাড়ি দেয়া যায়।
স্প্রীড বোর্ডে ১০ মিনিটের অনেক কম সময়ে পাড়ি দেয়া যায় ; তবে এরজন্য বাড়িতে ভাড়া গুণতে হয়। আর ফেরীতে কম ভাড়ায় পাড়ি দেয়া গেলেও এতে সময় লাগে অনেক অনেক বেশি। তবে ঝড়-বৃষ্টির দিনে ছোট ছোট লঞ্চ বা স্প্রিড বোর্ডের চাইতে ফেরী তুলনামূলকভাবে নিরাপদ।
পদ্মা পাড়ি দিয়ে দৌলতদিয়া বাস স্ট্যান্ড থেকে গড়াই, পদ্মাগড়াই ছাড়াও আরো কয়েকটা বাস আছে তাতে করে কুষ্টিয়া যাওয়া যায়। সময় লাগে ২:২৫-২:৪৫ ঘণ্টা। ভাড়া ১৫০-১৭০টাকা। লালন আখড়ায় যেতে হলে নামতে হবে দবির মোল্লার গেটে। সেখান থেকে মিনিট পাঁচেক পায়ে হেঁটে বা অটো/রিক্সা/ভ্যানে করেও যাওয়া যায় সাঁইজির ধামে।
আকাশপথে-
ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমানে আসলে যশোর বিমান বন্দর আসতে হবে। অবশ্য বেসরকারি বিমান হলে নামা যাবে যশোর ছাড়াও ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে। যশোর ও ঈশ্বরদী হতে সড়ক পথে এবং ট্রেন যোগে আসা যাবে কুষ্টিয়া।
নারায়ণগঞ্জ থেকে
বাস সার্ভিস-
নারায়ণগঞ্জ থেকে সরাসরি শ্যামলী পরিবহন ছাড়াও আরো কয়েকটা বাস সার্ভিস আছে কুষ্টিয়াগামী। প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যাতেই নারায়ণগঞ্জ থেকে কুষ্টিয়ার পথে ছেড়ে যায় বাস। আগে বুকিং করে রাখলে বাস চলার পথে যে কোনো স্টপিজ থেকেই বাসে চেপে কুষ্টিয়া যাওয়া যায়। মজমপুর নেমে অটো/রিক্সা করে সোজা লালন সাঁইজির মাজার। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার গুলিস্তান/সায়দাবাদ/গাবতলী এসেও কুষ্টিয়া যাওয়া যায়।
টাঙ্গাইল থেকে
বাস সার্ভিস-
টাঙ্গাইল থেকে হানিফ, শ্যামলী করে সরাসরি কুষ্টিয়া যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ভাড়া লাগবে ৪০০ টাকার মতো। আর এসকে সহ অন্য বাসে গেলে লাগবে ২৫০-৩৫০ টাকার মতো। তবে এসব বাসে বলে উঠতে হবে কুষ্টিয়া মজমপুর নামিয়ে দিতে হবে। কারণ অনেক বাস আবার ভেড়ামারা পর্যন্ত যায়। তাই সেগুলোতে না চড়াই উত্তম। বাসে গেলে টাঙ্গাইল এলেংগা থেকে যাওয়া ভালো।
বাসে সরাসরি না গিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গেও যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে লোকাল বাসে টাঙ্গাইল থেকে বনপাড়া ৯০-১২০ টাকায়। বনপাড়া পর্যন্ত ট্রাকে করেও যাওয়া যায় ভাড়া ৭০ টাকা। বনপাড়া থেকে কুষ্টিয়ার বাসভাড়া ৯০ টাকার মতো। সকল গাড়ির ভাড়া মিটিয়ে উঠাই ভালো। নইলে ভাড়া অনেক বেশি চাইতে পারে। এভাবে গেলে স্বল্প টাকায় পৌঁছানো যায়। আবার টাঙ্গাইল থেকে বাসে করে পাবনা গিয়ে সেখান থেকে কুষ্টিয়া যাওয়া যায় বাসে করে। এতেও ভাড়া অনেকটাই কম লাগে।
টেন সার্ভিস-
ট্রেন আছে ২টা; সকাল ৮টার দিকে আর ৯টার দিকে ভাড়া ২৫০ টাকার মতো। স্টেশন দুইটি টাঙ্গাইল ও যমুনা পূর্বপার। ট্র্রেনে ভেঙ্গে ভেঙ্গেও যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে টাঙ্গাইল থেকে ট্রেনে করেই ঈশ্বরদী বাইপাসে নেমে সেখানে থেকে ট্রেনে কুষ্টিয়া। কম ভাড়ায় যারা যেতে চান তারা এই পথে যেতে পারেন।
বগুড়া থেকে
বাস সার্ভিস
বগুড়ার ‘শাকপালা’ বাস স্ট্যান্ডে সারাদিনই কুষ্টিয়াগামী বাস পাওয়া যায়। উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা দক্ষিণবঙ্গগামী প্রায় সকল বাসই কুষ্টিয়ার উপর দিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে কথা বলে উঠে পরলেই হলো। সেক্ষেত্রে ভাড়া ২৫০-২৭০ টাকার মধ্যে। সময় লাগতে পারে প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার ঘন্টার মতো।
রাজশাহী থেকে
ট্রেন সার্ভিস
রাজশাহী থেকে মধুমতি ট্রেনে সরাসরি কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশনে হবে। সেখান থেকে অটো বা রিক্সায় সাঁইজির মাজার। বৃহস্পতিবার রাজশাহীর মধুমতি ট্রেন বন্ধ থাকে। সময় লাগে তিন ঘণ্টার মতো। ভাড়া সাধারণ শ্রেণী ২০৫টাকা। ৮টার সময় রাজশাহী থেকে ছেড়ে এসে ১১টায় কুষ্টিয়ার কোর্ট স্টেশনে থামে। আবার বিকেল ৫টায় কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় রাজশাহীর উদ্দেশ্যে।
খুলনা থেকে
বাস সার্ভিস
খুলনা থেকে সরাসরি বাসে করে আসা যায় কুষ্টিয়া। সেক্ষেত্রে খুলনার সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে রুপসা বা গড়াই বাসে করে কুষ্টিয়ার মজমপুরে নামতে হয়। বিকাল ৫টা পর্যন্ত বাস পাওয়া যায়। ভাড়া ৩০০-৩৫০ টাকার মত। রাস্তা সংস্কারের কাজ চলায় সময় লাগে প্রায় ৫-৬ ঘণ্টার মতো।
ট্রেন সার্ভিস
খুলনা থেকে সরাসরি কুষ্টিয়ার পোড়াদহ স্টেশনে বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল করে। কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস, নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস, মহানন্দা এক্সপ্রেস, রকেট এক্সপ্রেস, রূপসা এক্সপ্রেস, সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস, সীমান্ত এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস চলাচল করে এই পথে। সময় ৩-৪ঘণ্টার মতো লাগে। পোড়াদহ নেমে সেখান থেকে অটো বা সিএসজি করে সাঁইজির মাজার।
সিলেট থেকে
বাস সার্ভিস
সিলেট থেকে সরাসরি বাসে করে কুষ্টিয়া যাওয়া যায়। শ্যামলী পরিবহন, পাবনা এক্সপ্রেস, মামুন এন্টারপ্রাইজ বাসে করে সরাসরি কুষ্টিয়া পৌঁছানো যায়। ভাড়া ৭৫০-৮০০টাকার মধ্যে। অন্যথায় ঢাকায় এসে কুষ্টিয়া যেতে হবে।
চুয়াডাঙ্গা থেকে
বাস সার্ভিস-
চুয়াডাঙ্গা একাডেমি মোড় থেকে যেকোন বাসে করে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই যাওয়া যায় কুষ্টিয়া।
ট্রেন সার্ভিস-
সকালে চুয়াডাঙ্গা থেকে নকশিকাথা মেইল ট্রেন বা গোয়ালন্দ মেইল ধরে সরাসরি কুষ্টিয়া যাওয়া যায়। কুষ্টিয়া বড় স্টেশনে বা কোর্ট স্টেশনে নেমে সেখান থেকে অটো/ভ্যান/রিক্সায় করে লালন সাঁইজির মাজার। আবার অন্য যেকোন ট্রেনে পোড়াদহ পর্যন্ত গিয়ে ওখান থেকে সিএনজি বা অটোতে করেও লালন সাঁইজির মাজারে যাওয়া যায়।
যশোর থেকে
বাস সার্ভিস-
খুলনা থেকে যশোর হয়ে কুষ্টিয়া মজমপুর বা টার্মিনাল পর্যন্ত যথাক্রমে গড়াই ও রুপসা নামে দুটি বাস চলাচল করে। যশোর টার্মিনাল থেকে সারাদিনই ২০-৪০ মিনিট পরপর বাস ছেড়ে যায় এই পথে। ভাড়া ১২০ টাকা। যশোরের চাচড়া, ধর্মতলা, পালবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকেও বাসে উঠা যায়।
ট্রেন সার্ভিস-
কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস শনিবার ব্যাতিত প্রতিদিন সকাল ৭-৪১মিনিটে যশোর স্টেশন থেকে পোড়াদহমুখী যাত্রা করে আর বিকাল দুপুর ২-২০ মিনিটে পোড়াদহ থেকে যশোরমুখী যাত্রা করে।
রুপসা এক্সপ্রেস বৃহষ্পতিবার ব্যাতিত প্রতিদিন সকাল সকাল ৮-২১মিনিটে যশোর স্টেশন থেকে পোড়াদহমুখী যাত্রা করে আর বিকাল ৪-২৮ মিনিটে পোড়াদহ থেকে যশোরমুখী যাত্রা করে।
সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস সোমবার ব্যাতিত প্রতিদিন সকাল বিকাল ৫-২৮ যশোর স্টেশন থেকে পোড়াদহমুখী যাত্রা করে আর সকাল ৮-৫৩ মিনিটে পোড়াদহ থেকে যশোরমুখী যাত্রা করে।
চিত্রা এক্সপ্রেস সোমবার ব্যাতিত প্রতিদিন সকাল সকাল ৯-৪১ মিনিটে যশোর স্টেশন থেকে পোড়াদহমুখী যাত্রা করে আর রাত ১২-২৮ মিনিটে পোড়াদহ থেকে যশোরমুখী যাত্রা করে।
ট্রেন থেকে নামতে হবে পোড়াদহ স্টেশনে। ট্রেনের ভাড়া ১২০ টাকা। পোড়াদহ থেকে সিএনজি ধরে যেতে হবে কুষ্টিয়া মজমপুর। অটো বা সিএনজি ভাড়া ৩০/৪০ টাকা। সেখান থেকে অটোতে ১০ টাকায় লালন সাঁইজির মাজার।
কুষ্টিয়া থেকে বাসে যশোর ফেরত
কুষ্টিয়া মজমপুর মোড় থেকে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত গড়াই বাস ছেড়ে যায়। গড়াই মিস হয়ে গেলে টার্মিনাল অথবা চৌড়হাস মোড় থেকে রুপসা ধরতে হবে।
কলকাতা থেকে
বাস/ট্রেন সার্ভিস-
কলকাতা থেকে সোজা মৈত্রি ট্রেনে বা বাসে করে খুলনা। আর খুলনা থেকে কুষ্টিয়া। আবার শেয়ালদহ থেকে বোনগাও এসে হরিদাসপুর বর্ডার হয়ে যশোর হয়ে কুষ্টিয়া(ট্রেন/বাস)। আর কুষ্টি রেলস্টেশন বা বাস স্ট্যান্ড যেখানেই নামুন। সেখান থেকেই লালন সাঁইজির মাজারের অটো/রিক্সা পেয়ে যাবেন।
…………………………….
ছবি কৃতজ্ঞতা: মাহামুদুল হাসান
……………….
কাভার ছবি প্রসঙ্গে: ফকিরকূলের শিরোমণি ফকির লালন সাইজির কোনো ছবি পাওয়া যায় না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শিল্পী তার নিজ নিজ কল্পনায় ফকির লালনকে চিত্রায়িত করবার চেষ্টা করেছে মাত্র। এই ছবিটিও তেমনি একটি ছবি। এই ছবির সাথে ফকির লালনের কোনো যোগসূত্র বা মিল আছে কিনা তা জানা যায় না। ধন্যবাদ।
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
………………………..
আরো পড়ুন:
ফকির লালন সাঁই
ফকির লালনের ফকিরি
ফকির লালন সাঁইজি
চাতক বাঁচে কেমনে
কে বলে রে আমি আমি
বিশ্ববাঙালি লালন শাহ্ফকির লালন সাঁইজির শ্রীরূপ
গুরুপূর্ণিমা ও ফকির লালন
বিকৃত হচ্ছে লালনের বাণী?
লালন ফকিরের আজব কারখানা
মহাত্মা লালন সাঁইজির দোলপূর্ণিমা
লালন ফকির ও একটি আক্ষেপের আখ্যান
লালন আখড়ায় মেলা নয় হোক সাধুসঙ্গ
লালন অক্ষ কিংবা দ্রাঘিমা বিচ্ছিন্ন এক নক্ষত্র!
লালনের গান কেন শুনতে হবে? কেন শোনাতে হবে?
লালন গানের ‘বাজার বেড়েছে গুরুবাদ গুরুত্ব পায়নি’
‘গুরু দোহাই তোমার মনকে আমার লওগো সুপথে’
মহাত্মা ফকির লালন সাঁইজির স্মরণে বিশ্ব লালন দিবস
মহাত্মা ফকির লালন সাঁইজি: এক
মহাত্মা ফকির লালন সাঁইজি: দুই
মহাত্মা ফকির লালন সাঁইজি: তিন
লালন ফকিরের নববিধান: এক
লালন ফকিরের নববিধান: দুই
লালন ফকিরের নববিধান: তিন
লালন সাঁইজির খোঁজে: এক
লালন সাঁইজির খোঁজে: দুই
লালন সাধনায় গুরু : এক
লালন সাধনায় গুরু : দুই
লালন সাধনায় গুরু : তিন
লালন-গীতির দর্শন ও আধ্যাত্মিকতা: এক
লালন-গীতির দর্শন ও আধ্যাত্মিকতা: দুই
…………………………..
আরো পড়ুন:
মাই ডিভাইন জার্নি : এক :: মানুষ গুরু নিষ্ঠা যার
মাই ডিভাইন জার্নি : দুই :: কবে সাধুর চরণ ধুলি মোর লাগবে গায়
মাই ডিভাইন জার্নি : তিন :: কোন মানুষের বাস কোন দলে
মাই ডিভাইন জার্নি : চার :: গুরু পদে মতি আমার কৈ হল
মাই ডিভাইন জার্নি : পাঁচ :: পাপীর ভাগ্যে এমন দিন কি আর হবে রে
মাই ডিভাইন জার্নি : ছয় :: সোনার মানুষ ভাসছে রসে
মাই ডিভাইন জার্নি : সাত :: ডুবে দেখ দেখি মন কীরূপ লীলাময়
মাই ডিভাইন জার্নি : আট :: আর কি হবে এমন জনম বসবো সাধুর মেলে
মাই ডিভাইন জার্নি : নয় :: কেন ডুবলি না মন গুরুর চরণে
মাই ডিভাইন জার্নি : দশ :: যে নাম স্মরণে যাবে জঠর যন্ত্রণা
মাই ডিভাইন জার্নি : এগারো :: ত্বরাও গুরু নিজগুণে
মাই ডিভাইন জার্নি : বারো :: তোমার দয়া বিনে চরণ সাধবো কি মতে
মাই ডিভাইন জার্নি : তেরো :: দাসের যোগ্য নই চরণে
মাই ডিভাইন জার্নি :চৌদ্দ :: ভক্তি দাও হে যেন চরণ পাই
মাই ডিভাইন জার্নি: পনের:: ভক্তের দ্বারে বাঁধা আছেন সাঁই
মাই ডিভাইন জার্নি : ষোল:: ধর মানুষ রূপ নেহারে
মাই ডিভাইন জার্নি : সতের:: গুরুপদে ভক্তিহীন হয়ে
মাই ডিভাইন জার্নি : আঠার:: রাখিলেন সাঁই কূপজল করে
মাই ডিভাইন জার্নি :উনিশ :: আমি দাসের দাস যোগ্য নই
মাই ডিভাইন জার্নি : বিশ :: কোন মানুষের করি ভজনা
মাই ডিভাইন জার্নি : একুশ :: এসব দেখি কানার হাটবাজার