শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ : উপাসনা
সংক্ষিপ্ত ব্যক্তিগত উপাসনা
ক. ব্রহ্মগায়ত্রী তিনবার পাঠ করিবেই, কারন তুমি ব্রাহ্মণ
খ. জগন্মঙ্গল-সঙ্কল্প করিবেই, কারন তুমি স্বরূপানন্দ-সন্তান এবং অখন্ডমন্ত্রের অধিকারী, জগন্মঙ্গল চিন্তা ও জগন্মঙ্-কার্য্যই ব্রাহ্মণের প্রকৃত লক্ষণ।
গ. তারপরে অখন্ড নাম করিবেই, কারন ইহাই তোমার পরমা গতি।
-শ্রীশ্রী উপাসনা প্রণালী পৃষ্ঠা ২১
সমবেত উপাসনায় শ্রীশ্রীবাবামণির অঞ্জলি
আমার অনুপস্থিতিতে আমার জন্য রক্ষিত পুস্প বিল্বপত্রাদি কেহ নিজ অধিকারের দাবিতে বিগ্রহে অর্পণ করিতেছ এ ভাব রাখিতে পারিবে না। যে নিকটে আছ, যে ক্ষিপ্রতার সহিত সুশৃঙ্খলভাবে কাজটি করিতে পারিবে, যাহার মনে দাবীর অহঙ্কার নাই, মনে আছে ‘অনুগৃহীত হইলাম’ এইরূপ দীনভাব, যে ‘আমি সুরজ্ঞ’ আমি গৃহকর্ত্তা, আমি উপাসনার ব্যয়- বহনকারী, আমার প্রিয়জনের কল্যানার্থে অনুষ্ঠান হইতেছে’ এই জাতীয় বা অন্যরূপ অন্তরে পোষণকরিবে না, এমন সাত্ত্বিক সভাব ভক্তিবিনম্রচিত্ত ব্যক্তিই মাত্র অঞ্জলির ঐ পুস্পাদি বিগ্রহে অর্পণ করিবে।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ (প্রতিধ্বনি, শ্রাবণ ১৩৭২ পৃষ্ঠা-৪০৬)
শ্রীশ্রীবাবামণির অঞ্জলির থালিকায় ফুল। বেলপাতা, দুর্ব্বা, তুলসী, হরিতকী, তিল, আতপচাল ও চন্দন এই আটটী উ-রণ থাকিবে। আমার ফটোর মধ্যে আমি আছি। তুমি প্রানঢালা বিশ্বাস দিতে পারিলে ফটোখানা সজীব হইবে।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ (ধৃতং প্রেম্না, ৩৫ খন্ড, পত্র নং ১১)
সমবেত উপাসনায় ঘট, কোশাকুশি, জলশঙ্খ ইত্যাদির কোন প্রয়োজন নাই। অযথা বাহুল্য বর্জ্জনীয়।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ
সমবেত উপাসনা শুরু হইবার আগে লোক জমাইবার জন্য কীর্ত্তন, সঙ্গীতানুষ্ঠান ইত্যাদি কঠোর ভাবে বর্জ্জনীয়।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ
নিরামিষ ও সাধুত্ব
দ্বিপ্রহরে দুই ঘটিকার সময়ে ইট তৈরীর কাজে লাগা হইল।
একজন কর্ম্মী জিজ্ঞাসা করিলেন, কেহ নিরামিষ খাইলে তাহাকে সাধু বলিয়া মনে করা যাইতে পারে কি না।
শ্রীশ্রীবাবামণি হাসিয়া বলিলেন, গন্ডারেও ত’ নিরামিষ খায়, তাই বলে সে কি কম হিংস্র?
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ
সমবেত উপাসনা-ব্যক্তিগত উপাসনা
তৎপরে শ্রীশ্রীবাবামণি বলিলেন-সমবেত উপাসনাতে যোগ দেওয়াকে জীবনের শ্রেষ্ঠ পূণ্য বলে জ্ঞান কর্ব্বে। সমবেত উপাসনার প্রসাদ গ্রহনকে জীবনের পরম লাভ বলে গণনা কর্ব্বে। সমবেত উপাসনার নির্ম্মাল্য-সংগ্রহকে সকল অকুশলের নিবারক বলে জানবে। সমবেত উপাসনার সহায়তা করাকে মহৎ-ব্রত বলে মনে রাখবে। যেদিন যে বেলা সমবেত উপাসনাতে যোগ দেবে, সেদিন সে বেলা ব্যক্তিগত উপাসনা করার প্রয়োজন হবে না।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ (অখন্ড সংহিতা, প্রথম খন্ড)
সমবেত উপাসনায় ভোগ-নৈবেদ্য ও পক্কান্ন
সমবেত উপাসনায় ভোগ-নৈবেদ্য ছাড়াও হয়। তথাপি অনেকে ভোগ-নৈবেদ্য দিতে চাহেন। এই অভিলাষে আপত্তি করিবার কিছু নাই কিন্তু কদাচ পক্কান্ন-ভোগ উপাসনার আসরে সাজাইবে না। নিজ নিজ ব্যক্তিগত জেদ, রুচি, গোঁড়ামি বা গোয়ার্ত্তুমিকে আমার নির্দ্দেশের উর্দ্ধে যাইতে দিও না। সমবেত উপাসনার আসরে কেন আমি পক্কান্ন ভোগ সাজাইতে কড়া নিষেদ দিয়া রাখিয়াছি, তাহা বিষদ ব্যাখ্যা করিয়া তোমাদিগকে বহুবার বলিয়াছি।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ (অখন্ড সংহিতা, ষোড়শ খন্ড পৃষ্ঠা-২৫০)
অতীতের পাপের জন্য অকপটে অনুতপ্ত হও এবং ব্যাকুল অন্তরে সর্ব্বমঙ্গলনিলয় শ্রীভগবানের চরণে প্রার্থনা কর মার্জ্জনা, প্রার্থনা কর সবলতা, প্রার্থনা কর নিষ্পাপ সূর্য্যকরপ্রদীপ্ত পূর্ণময় জীবন। অন্ধকার তোমার পাপের জন্ম দিয়াছে, জীবনকে জ্ঞানের আলোকে ঝলসিত করিয়া পাপকে পরাভূত কর। হতাসা যাও ভুলিয়া, অনন্ত তৃপ্তময় সুন্দর ভবিষ্যতে কর বিশ্বাস, বর্ত্তমানের সহস্র বিরোধিতাকে পরাজিত করিয়া দ্বিগিজয়ী বীরের মত দৃঢ়পদে অগ্রসর হইবার শক্তি কর অর্জন।
কৃতজ্ঞ হও ভগবচ্চরণে এই ভাবিয়া যে, ইহা অপেক্ষাও দুর্ল্লঙ্ঘতর বাধার শৈলমালা তোমাকে ঘেরিয়া ধরে নাই, কৃতজ্ঞ হও এই জন্য যে, ইহা অপেক্ষাও জঘন্যতর জীবন তোমাকে যাপন করিতে হয় নাই; নামিতে নামিতে যেখানে আসিয়া দাঁড়াইয়াছ, সেখান হইতেও অনেক নীচে এতদিনে নামিয়া যাইতে পারিতে। কাঁহার স্নেহের দৃষ্টি তোমাকে টানিয়া রাখিয়াছে? কাঁহার করাঙ্গুলির কোমল পরশ এখনো তোমার হৃদয় খানাকে অনুভূতিহীন প্রস্তরে পরিনত হইতে দেয় নাই? কাঁহার দিব্য চেতনা এখনো তোমার মনের কোনে ক্ষণে ক্ষণে বিবেক-বুদ্ধি-বিচারকে জাগাইয়া তুলিতেছে?
নিজের ভ্রমের জন্য অনুতপ্ত হও। ভগবানের করূনার জন্য কৃতজ্ঞ হও। অনুতাপ যখন কৃতজ্ঞতার হাত ধরিয়া চলে, তখন সে চিত্তকে শুদ্ধ এবং মনকে ঋদ্ধ করে, তখন সে সুপ্-ক্তিকে প্রবুদ্ধ করে।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ (পথের সাথী পৃষ্ঠা ৫)
স্বামী স্বরূপানন্দ : কবিতা/গান>>
………………
আরও পড়ুন-
স্বামী স্বরূপানন্দের বাণী
স্বামী স্বরূপানন্দ : গুরু-শিষ্য
স্বামী স্বরূপানন্দ : সরল ব্রহ্মচর্য্য
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ : চিঠিপত্র
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ : উপাসনা
স্বামী স্বরূপানন্দ : কবিতা/গান
স্বামী স্বরূপানন্দ : উপদেশ
স্বামী স্বরূপানন্দ : উপদেশ দুই
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : এক
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : দুই
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : তিন
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : চার
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : পাঁচ
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : ছয়
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : সাত
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : আট
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : নয়
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : দশ
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : এগারো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : বারো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : তেরো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : চোদ্দ
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : পনেরো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : ষোল
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : সতেরো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : আঠারো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : উনিশ
…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….
……………….
আরও পড়ুন-
মহানবীর বাণী: এক
মহানবীর বাণী: দুই
মহানবীর বাণী: তিন
মহানবীর বাণী: চার
ইমাম গাজ্জালীর বাণী: এক
ইমাম গাজ্জালীর বাণী: দুই
গৌতম বুদ্ধের বাণী: এক
গৌতম বুদ্ধের বাণী: দুই
গৌতম বুদ্ধের বাণী: তিন
গৌতম বুদ্ধের বাণী: চার
গুরু নানকের বাণী: এক
গুরু নানকের বাণী: দুই
চৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী
কনফুসিয়াসের বাণী: এক
কনফুসিয়াসের বাণী: দুই
জগদ্বন্ধু সুন্দরের বাণী: এক
জগদ্বন্ধু সুন্দরের বাণী: দুই
শ্রী শ্রী কৈবল্যধাম সম্পর্কে
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বাণী
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ১ম খন্ড
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ২য় খন্ড
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ৩য় খন্ড
স্বামী পরমানন্দের বাণী: এক
স্বামী পরমানন্দের বাণী: দুই
স্বামী পরমানন্দের বাণী: তিন
স্বামী পরমানন্দের বাণী: চার
স্বামী পরমানন্দের বাণী: পাঁচ
স্বামী পরমানন্দের বাণী: ছয়
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: এক
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: দুই
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: তিন
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: চার
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: পাঁচ
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: ছয়
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: সাত
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: আট
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: নয়