ভবঘুরেকথা
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব

সরল ব্রহ্মচর্য্য

সরল ব্রহ্মচর্য্য

দক্ষিণা-বঞ্চিত, অন্নাভাব-ক্লিষ্ট অথবা চিপিটক-সর্ব্বস্ব কুল পুরোহিত একান্ত দায়ে ঠেকিয়াই মাথার টিকি আর ললাটের ফোঁটা কষ্ট সৃষ্টে বজায় রাখিয়াছেন। আয়ুর্বেদ বিশারদ আজ মোদক বেচিতেই ব্যস্ত, আর শক্তিমান লেখক কামাতুর নায়ক-নায়িকার মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষনে মগ্ন। ফলে, সমাজের ক্ষত-বিক্ষত সর্ব্বাঙ্গে ব্রহ্মচর্য্যের শান্তি-প্রলেপ তাহাদিগকে নিজের চেষ্টাতেই মাখিতে হইবে, যাহারা অসংযমের আগুনে জ্বলিয়া পুড়িয়া তারপরে কল্যানের পন্থা পাইয়াছে। এই জন্য আজিকার প্রত্যেক ব্রহ্মচর্য্যাভ্যাসীকে আংশিকভাবে প্রচারকের কার্য্যভারও গ্রহন করিতে হইবে।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ

 

সরল ব্রহ্মচর্য্য

এই অবস্থার প্রতিকার আশু প্রয়োজন। এই জন্য ব্যক্তিগতভাবে আত্ম-গঠনের যেমন আবশ্যক আছে, তেমনি আবার আত্মগত মহদাদর্শকে প্রচারের দ্বারা চতুর্দ্দিকে প্রসারিত করিয়া দিবারও উপযোগিতা রহিয়াছে। কারন,ব্রহ্মচর্য্য-প্রচার যাঁহাদের নিত্য-কর্ত্তব্য, তাঁহারা ইহাকে সেচ্ছায় হউক আর অনিচ্ছায় হউক, অনায়াসে উপেক্ষা করিয়াছেন।

অজ্ঞানান্ধ-জীবে ব্রহ্ম-জ্ঞান বিলাইবার জন্য যাঁহারা যোগী, দন্ডী, সন্ন্যাসী বা পরমহংসের পুণ্যময় ধর্ম্মসংস্কার গ্রহণ করিয়াছেন, দেশের, দশের এবং জগতের দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁহাদের মধ্যে অনেকেই আজ যেন বিস্মৃত হইয়া গিয়াছেন যে, ব্রহ্মচর্যহীন অগ্রাহী কুপাত্রে ব্রহ্মজ্ঞান জ্যোতিঃ বিকীর্ণ করে না। কুল-গুরুগণ, সহজ-বিশ্বাসী মানব-সমাজ যাঁহাদের চরণতলায় নিজেদের ধ্যান-ধর্ম্ম সব সমর্পণ করিয়া রাখিয়াছে, তাঁহারা আজ বার্ষিক চৌথ আদায়ের অতিরিক্ত চিন্তার ঝঞ্জাট মাথা পাতিয়া লইতে স্বীকৃত নহেন।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ

 

সরল ব্রহ্মচর্য্য

আর্য্য সন্তানের নিত্য প্রতিপাল্য সাত্ত্বিক বিধিসমূহ লঙ্ঘন করিয়া আজিকার বালক এবং যুবক বীর্য্যহীন দেহে অপচয়িত ক্ষীণ মস্তিস্কে চন্দন-ভারবাহী গর্দ্দভের ন্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুঞ্জীকৃত পুস্তকের পসরা বহন করিতেছে।

ঈশ্বর বিশ্বাস হারাইয়া, শ্রদ্ধা, ভক্তি ও অপরাপর সদগুণাবলীতে বঞ্চিত রহিয়া, মানুষ হইয়াও তাহারা অমানুষ থাকিয়া যাইতেছে; ত্যাগাবতার, জগৎপাবন অখন্ড-পবিত্রতার আধাঁর-স্বরূপ সদগুরুর সৎসঙ্গ না পাইয়া উন্নতিমুখিনী সাত্ত্বিক বৃত্তিনিচয়ের উন্মেষ-সাধনে তাহারা অপারগ এবং ধর্ম্মে ধর্ম্মে যথার্থ মানবীয় মহত্ত্ব অর্জ্জনে অসমর্থ রহিয়া যাইতেছে।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ

 

সরল ব্রহ্মচর্য্য

তোমরা স্বীকার কর, আর গোপনই রাখ, তোমাদের সেবা করিতে যাইয়া আমি নির্দ্ধারিত-রূপে জানিয়াছি যে, প্রতি সহস্রে নয় শত নিরানব্বই জন যুবক আত্মহত্যার অপরাধে অপরাধী। সমাজ-শাসনে বিশৃঙ্খলা, গার্হস্থ্য পবিত্রতার ব্যাভিচার এবং ভারতের নিজস্ব শিক্ষা-সংস্কারে বিপর্য্যয়,- এই তিনটি প্রধান কারনে আজিকার কিশোর ও যুবক তাহার চরিত্রকে গঠন করিয়া তুলিবার পকৃত সুযোগ পাইয়া উঠিতেছে না; পরন্তু বিসদৃশ চিন্তা-প্রবাহে পরিচালিত হইয়া দুর্জ্জনসংসর্গের মধ্য দিয়া আত্ম-অপচয়ের কলুষিত কদভ্যাসে জর্জ্জরিত হইয়া পড়িয়াছে।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ

 

সরল ব্রহ্মচর্য্য

নির্ভর মানুষকে নির্ভয় করে, তাই মানুষ বিজন অরণ্যেও বন্ধুহীন নহে। তোমাদের প্রত্যেককে আমি জীবনের প্রতি পদবিক্ষেপে এইরূপ সবান্ধব দেখিতে চাহি। অর্থাৎ তোমাদিগকে অনলস এবং নিঃশঙ্ক দেখিতে চাহি। এই জন্যই আমি তোমাদিগকে ব্রহ্মচর্য্যের কল্যাণ-কথা কহিতে আসিয়াছি।

ব্রহ্মচর্য্যের দ্বারা তোমাদের প্রকৃত বন্ধু লাভ হইবে এবং তোমাদের কপট বন্ধু-গকে চিনিতে পারিবে। তাই, আজ তোমাদিগকে ব্রহ্মাচর্য্য-ম্বী করিতে চাহিয়াছি।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ

 

সরল ব্রহ্মচর্য্য

অর্থাৎ আত্মশক্তিতে বিশ্বাসহীনতায় তাহাকে অশান্তির জীবন্ত বিগ্রহ করিয়া তোলে।- -এ জগতে শান্তি কে না চাহে? কিন্তু যে নির্ভর করিতে জানে না, শান্তি তাহার জন্য নহে। আত্ম-নির্ভ- দ্বারাই ভগবন্নির্ভর লাভ হয়, আবার ভগবানে নির্ভর করি-আত্মনির্ভর আপনিই আসে।
-শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ

শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ : চিঠিপত্র>>

………………
আরও পড়ুন-
স্বামী স্বরূপানন্দের বাণী
স্বামী স্বরূপানন্দ : গুরু-শিষ্য 
স্বামী স্বরূপানন্দ : সরল ব্রহ্মচর্য্য
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ : চিঠিপত্র
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ : উপাসনা
স্বামী স্বরূপানন্দ : কবিতা/গান
স্বামী স্বরূপানন্দ : উপদেশ
স্বামী স্বরূপানন্দ : উপদেশ  দুই

শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : এক
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : দুই
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : তিন
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : চার
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : পাঁচ
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : ছয়
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : সাত
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : আট
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : নয়
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : দশ
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : এগারো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : বারো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : তেরো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : চোদ্দ
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : পনেরো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : ষোল
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : সতেরো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : আঠারো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : উনিশ

…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন- voboghurekotha@gmail.com

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

……………….
আরও পড়ুন-
মহানবীর বাণী: এক
মহানবীর বাণী: দুই
মহানবীর বাণী: তিন
মহানবীর বাণী: চার
ইমাম গাজ্জালীর বাণী: এক
ইমাম গাজ্জালীর বাণী: দুই
গৌতম বুদ্ধের বাণী: এক
গৌতম বুদ্ধের বাণী: দুই
গৌতম বুদ্ধের বাণী: তিন
গৌতম বুদ্ধের বাণী: চার

গুরু নানকের বাণী: এক
গুরু নানকের বাণী: দুই
চৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী
কনফুসিয়াসের বাণী: এক
কনফুসিয়াসের বাণী: দুই
জগদ্বন্ধু সুন্দরের বাণী: এক
জগদ্বন্ধু সুন্দরের বাণী: দুই
শ্রী শ্রী কৈবল্যধাম সম্পর্কে
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বাণী
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ১ম খন্ড
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ২য় খন্ড
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ৩য় খন্ড
স্বামী পরমানন্দের বাণী: এক
স্বামী পরমানন্দের বাণী: দুই
স্বামী পরমানন্দের বাণী: তিন
স্বামী পরমানন্দের বাণী: চার
স্বামী পরমানন্দের বাণী: পাঁচ
স্বামী পরমানন্দের বাণী: ছয়
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: এক
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: দুই
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: তিন
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: চার
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: পাঁচ
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: ছয়
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: সাত
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: আট
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: নয়

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!