ভবঘুরেকথা
খাদেম জাফর কাকার জবানে গণি শাহ্ বাবা

খাদেম জাফর কাকার জবানে গণি শাহ্ বাবা: কিস্তি দুই

-মূর্শেদূল মেরাজ

প্রতিটা দোকানদার চলতাছে। কতগুলান মানুষ বেঁচাকেনা করতাছে। এহন যে দরবার এই জায়গা তো সব ভক্তরা পরে কিনা দিছে। এই সব জায়গাই ভক্তের অবদান। কেউ দশটাকা দিছে, কেউ এক টাকা দিছে, কেউ চাইর টাকা দিছে। যে যেমন পারছে ভক্তেরা।

এহন রওজা পরিচালিত হয় কমিটির মাধ্যমে। আমার মতো আরো অনেকজন খাদেম আছে। আমার মতো এখানে আমরা দশজন লোক ডিউটি করি বর্তমানে। আমরা এখানে বেনিফিট ভুক্ত। আমরা এর থেকে চলি তিন’শ লোক বর্তমানে।

মানে আমরা সবাই। পরিবার-পরিজন নিয়া আছে সকলতে। দয়াল যাদের নিয়া আসছে। তাদের বংশধর। অনেকে বিয়ে করছে। কেউ ফ্যামিলি নিয়া আসছে। এফিলে আসতে আসতে বাড়তাছে। আবার দেখা যায় এলাকার লোকও কিছু খাইতাছে। ভরতাছে।

কেউ চলতারেনা। কারো জামাই মইরা গেছে গা। পাঁচজন বাচ্চা লইয়া চলতারেনা। দিয়ালাও দরবারের চাল-ডাল। তারে চাল-ডাল দিয়ালাও। এভাবে এলাকার লোকও নিতাছে। দয়ালের সবকিছুই আসলে ভক্তদের দেওয়া।

এহনও রওজায় যে কাম হইতাছে, দেখতাছেন সবই কিন্তু ভক্তদের দয়ায় হচ্ছে। দরবারের আয়-উন্নয়ন-সম্মেলন সবই কিন্তু হয় ভক্তের অনুদানে। সম্মেলনে আসলে দেখতে পাইবেন অগনিত মানুষ; আইতাছে-যাইতাছে।

দয়ালের এই এলাকাতে বেশি ভক্তবৃন্দ ছিল না। উনার যত ভক্তবৃন্দ ছিল দূরদূরান্তের। যেমন সিলেট, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চিটাগাং এই রকম বিভিন্ন জায়গায় উনার ভক্ত ছিল। এলাকার এতো ভক্ত ছিল না।

আমারও হেইলারে বাপ ডাকছি। হেইলাও আমরারে বাপ ডাকছে। আমরা যেমন হেইলার সাথে চলছি… এই যেমন আপনার লগে চলতেছি-ফিরতেছি। চললে-বুঝলে একটা ইয়া হইতো না। আমরা হেই বিশ্বাসে আছি। আমারও যেমন হেইলারে বাপ ডাকছি। হেইলাও আমরারে বাপ ডাকছে।

আপনি যদি দয়ালকে বিশ্বাস করেন। আমরা জানি দয়াল বাবা শিক্ষাগুরু-দীক্ষাগুরু-মাতাগুরু-পিতাগুরু সবই। উনার হাত ধরলে আর দীক্ষা নেয়ার আর প্রশ্নই আসে না।

এইটা হইলো আমার যে ধ্যান-ধারণা বললাম। আবার অনেকে মনে করে আমি তো দয়াল বাবারে দেখলাম না, একটা লোক ধরা দরকার। একটা মাধ্যমে যাওয়া দরকার। শিক্ষা নেওয়া দরকার। এমুনো চিন্তাধারা আছে। কিন্তু আমার কাছে এই চিন্তাধারাটা আসে না।

আমি বুঝি আপনি দয়ালরে বিশ্বাস করছেন নি? কইলেন ‘হ’। তাইলে উনাই আপনারে পথ দেখাইবো। আমি তো কোনো অন্ধের পাছে ঘুরি না। যে পথ দেখাইতে পারতো না।

উনি অন্ধ না। উনি দেখে। তাইলে উনি পথ দেখাইতে পারবো না কেন? আমি আপনার অপেক্ষায় বয়া রইছি। আপনিই আমার পথ দেখান। আমি আবার শিক্ষাগুরু-দীক্ষাগুরু এইগুরু-ঐগুরু ধরা… এই সব আমি বুঝিও না। আমার দরকারও নাই। আমি যদ্দুর বুঝি। আমি ছুডু মানুষ।

কথাটা বুঝছেন? আমি দয়াল বাবারে বিশ্বাস করছি। দয়াল বাবা যদি আমারে এদ্দুর আন্তারে, তাইলে আবার শিক্ষাগুরু আরেকজনরে ধরুম ক্যারে? আর যারা অন্ধ, তাদের শিক্ষাগুরু লাগে। কিন্তু আমার দয়াল বাবা অন্ধ না। দয়াল বাবা হাত ধইরা কাউরে বয়াতও করা নাই। উনি কাউরে ইয়াও করে নাই।

আমারও হেইলারে বাপ ডাকছি। হেইলাও আমরারে বাপ ডাকছে। আমরা যেমন হেইলার সাথে চলছি… এই যেমন আপনার লগে চলতেছি-ফিরতেছি। চললে-বুঝলে একটা ইয়া হইতো না। আমরা হেই বিশ্বাসে আছি। আমারও যেমন হেইলারে বাপ ডাকছি। হেইলাও আমরারে বাপ ডাকছে।

দয়াল বলছে, ধরো বাজান। তইলে আমাদের যে আত্মবিশ্বাসটা বাড়ছে, আমরা যে উনার পাছে পাছে ঘুরছি। উনারে বাপ হিসাবে দাবি করি। কেমনে করি? আমরা হেইলার কাছে জবান পাইছি বইলাই তো করি।

যে বুইজ্জ্যা নেয় যে ভাঁজে। কথা ঠিক না? দেখেন আমরা যে এতো বৎসর… আজকা দেখেন… আমিই তো দেখেন ৫২ বৎসর হইয়া গেছে। আমি যেদিন থেকে আইছি দয়াল বাবার কাছে। এ বৎসর সম্মেলন হইলে ৫২টা সম্মেলন হইবো। আমি এ পর্যন্ত আছি। এ পর্যন্ত তো মানুষটারে কিছু না কিছু দেখতাছি।

আপনিও যদি উনারে স্মরণ করেন। আশা করি আপনারেও জওব দেবো। আশায় থাকলে। এমুন দেখা যাইতো যে, সৌদিআরব থেইক্ক্যা এক লোক আইছে দয়াল বাবার লগে। সেই লোক নাকি ছয় মাস দয়াল বাবার পিছে নামাজ পইড়া আইছে। বিছরাইতে বিছরাইতে আইয়া দেখছে যে এই সেই লোক।

ঐখানে মানে সৌদিআরবে নাকি দয়ালের পাছে নামাজ পড়ছে। হেই লোক আইসা বলছে, আমি উনার পিছে মক্কা শরীফে নামাজ পাইড়া আসছি। এম্রিকায় এক লোক বিপদে পড়ছে, সেইখানে স্মরণ করলে যদি তারে উদ্ধারে দয়াল যাইতারে। তাইলে আপনারে আমারে দেহাইতে পারতো না? পারতো না?

এই বিশ্বাসটা মনে রাখতে হইবে, আমি পৃথিবীর যেই প্রান্তে থাকি, আমার গুরু আমি স্মরণ করলে যায়। আমি বিপদে পরলে। আমি যখন স্মরণ করি। আমার মুর্শিদ আমি বিপদে পরছি আমারে উদ্ধার করো।

গুরু যদি কাউরে কিছু দিয়া থাকে, কোনো নাম দিয়া থাকে যে- তুমি এইটা জপ করো। তাইলে এইটা হইলো উনাগো ব্যক্তিগত ব্যাপার। গুরু কি মন্ত্র দিবো সেইটা শুধু গুরু যে শিষ্যরে দিবো সেই শিষ্যই শুধু জানে। আর কেউ জানার কথা না। গুরুর নাম ঠিকমত কেবল সেই বেটাই জানে। যারে দিবো।

আমি যখন দোকান করি। তাই আমি আমারটা জানি। আমার দয়াল বাবা আমারে কি কইছে। কি স্মরণ করি। হয়তো হেইটা আমার জন্য প্রযোজ্য। সেইটা আপনার জন্য প্রযোজ্য নাও হইতে পারে। অহন আপনার যা প্রয়োজন হেইডাই আফনেরে দিবো।

সেটা দেখা গেছে অন্যের বেলা নাও হইতে পারে। আমার বেলায়ও নাও হইতে পারে। উনার কখন কারে কি দিবো। আর কখন কারে কি দেয়া দরকার এইটা উনি জানে। সেই সময়ই তারটা তার জন্য হাজির হইবো।

আমি অন্যায় করলে আমার বিচারও করে। আমি অন্যায় করলে আমারে ছাড়ে না। কিন্তু আরেকজন আপনার সামনেই দেখা গেছে অন্যায় করতাছে, আপনি দেখতাছেন। আফনের বিবেকে বাঁধতাছে। কিন্তু হেইলা আফনের তে ভালো আছে। তাইলে তার মাহাত্ম্য কি? এরমধ্যেই তো একটু ভেদাভেদ আছে!

যে বুইজ্জ্যা নেয় যে ভাঁজে। কথা ঠিক না? দেখেন আমরা যে এতো বৎসর… আজকা দেখেন… আমিই তো দেখেন ৫২ বৎসর হইয়া গেছে। আমি যেদিন থেকে আইছি দয়াল বাবার কাছে। এ বৎসর সম্মেলন হইলে ৫২টা সম্মেলন হইবো। আমি এ পর্যন্ত আছি। এ পর্যন্ত তো মানুষটারে কিছু না কিছু দেখতাছি।

হেইলা আসার পর থেকে আমরা এই পথে বেশি আসছি। তবে দয়াল কত বৎসর বয়সে বাসা থেকে বের হয়ে গেছিল তা আমি সঠিক কইতে পারবো না। তবে আমি জানি, হেইসময় উনি বিয়াশাদি করেন নাই। উনি হেই সময় প্রায় ১৬/১৭/১৮ বৎসরের হইবো।

এর ভেতর দিয়া নিজেরও তো কিছু আইডিয়া হইতাছে না? কি দেখতাছি। কি করতাছি। কেনো এই বেটার পাছে পইরা রইছি। এ পর্যন্ত একচুয়ালি কিন্তু আমরার কুনু সয়সম্পত্তি নাই। এ পর্যন্ত আমরা কিন্তু এই ভাবেই চলতাছি। তিনিই পরাইতাছেন। তিনিই চালাইতাছেন।

আমরা কি কুনু কাজ করি? করি না। যারা ব্যবসা করে বাণিজ্য করে। তারা লস খায়; চলতারেনা। আমরার তো হেই লস নাই। দয়াল বাবা তো আমগো হেই লসে ফালাইসে না। দয়াল বাবা তো আমাগো চালাইতাছে। ঝড়-তুফান কিচ্ছু না। এমুনি চলতাছে। আমার জন্য আর কি?

এখানে যারা আছে তারা কিন্তু এইওই। যারা আছে তাদের এইভাবেই খাওয়াতাছে। আমার মতোনওই। কেহই কিন্তু না খায়া থাকতাছে না। একভাবে না একভাবে। কেউ রে কি ভাবে চালাইতাছে।

আমি যে সময় আইছি সেই সময় দয়ালের বয়স প্রায় পঞ্চাশ-ষাইটের মতোন হইবো। ষাইটের কাছাকাছি হইবো। আমার দাদারে তো আমরা দেখছি না। আমরা বাপ-চাচাগো লগে দয়াল সম্পর্কে জিজ্ঞাস করলে কইছে- তোর এক জেডা আছে পাগল। কই থাকে কি করে জানি না। আমরাও বিছরাইয়া পাই না।

এমুন দেখা গেছে দুই বৎসর-পাঁচ বৎসর হেরাও বিছরাইয়া খবর পায় নাই; কই আছে। যখন হেইলা এই এলাকায় আইলো তখন থেইকা না উনারা আবার আসা আরম্ভ করলো। আমরার একজন ভাই আছে। হেনে থাকে। হেই না তখন থেইক্কা তাগো আসা যাওয়া শুরু হইলো।

যতদূর শুনছি, দয়াল বাবা ছোটবেলায় অত্যাধিক অমায়িক মানুষ ছিলেন। যখন মসজিদে ইমামতি করতো। উনি যখন কোরান তেলওয়াত করতো মানুষে চোখের পানি ছাড়তো। কইলাম না আফনেরে আমরা মোল্লা বংশ। আমার দাদা মোল্লা ছিল।

হেইলার দাদা মোল্লা ছিল। চাচারা ছিল। তখন আমাগের পরিবার হেইরহমই ছিল। নামাজ রোজা এই পথেই ধাবিত ছিল। কোরান-কিতাব পড়া, এইগুলোই ছিল।

হেইলা আসার পর থেকে আমরা এই পথে বেশি আসছি। তবে দয়াল কত বৎসর বয়সে বাসা থেকে বের হয়ে গেছিল তা আমি সঠিক কইতে পারবো না। তবে আমি জানি, হেইসময় উনি বিয়াশাদি করেন নাই। উনি হেই সময় প্রায় ১৬/১৭/১৮ বৎসরের হইবো।

আবার ইমুনো দিন গেছে। আমরা যে নৌকায় আছি ইলাও আমাগো লগে গানে টান দিছে। আসলে উনি কি কর্ম করছে হেইয়া তো আমরা সেসুম অনুভব করতে পারছি না। কিন্তু উনি একটা সেকেন্ড… আপনিই দেখা গেছে রাতে একটা দুইটা আপনি শুইয়া আছেন, হেইলা তো শুয়া আছে।

উনি কোথায় কোথায় ছিলেন তা কিছু বলেন নাই। তবে এমনে দেখা গেছে যেমন আপনার কাছে, অমুকের কাছে মুখে জানা গেছে- আমি হেইলারে দেখছি সিলেট আছিলো। অমুকখানে আছিলো। যেমন কুমিল্লা গেলে শোনা যায়। কুমিল্লা থেইক্ক্যা লোক আইলে জানা যায়, দয়াল বাবা তো আমাগো ঐখানে থাইকা আইছে।

এইখান দিয়া হাঁটছে। ঐখান দিয়া গেছে। এমুন করছে। অমুন করছে। কোনো খান থেইক্ক্যা লোক আইলে বোঝা গেছে, তারা আমাগো লগে আলোচনা করতো, দয়াল বাবা তো আমাগো ঐখানে থাইক্ক্যা আইছে অনেক দিন। আমাগো এই এলাকায় আছিলো, কুমিল্লায় আছিলো, বান্দুরায় আছিলো।

নিম্ন এলাকায় বা সিলেট, এরম জানা যায়। মানে ভাটি অঞ্চলটা দিয়াই। উনি সিলেট থাকতো সুনামগঞ্জ হেইখান থেকে লোক আইলেও বলতো, আমাগো ঐখানে দয়াল বাবা তো আছিলো।

দয়াল বাবা নিজে গান বাজনা করতো না। আগে পুঁথি পড়তো না? দয়ালের কণ্ঠ খুব ভালো ছিল। উনি পুঁথি ভালো পড়তারতো। আগে যে ঐ যে, গাজির গান ঐসব পুঁথি পড়তো। দেখা গেছে রাইত বেলা পুঁথি পড়া শুরু করছে। কণ্ঠ খুব ভালো ছিল।

অহনি ছবির মধ্যে দয়ালের চেহারা দেইখেন। নূরের পুতুলের মতোন চেহারা হেই সময়। উনি নিজে গান না করলেও হের সামনে গান বাজনা হইতো। এইখানে কামাল নামে একজন আছে। ওর বাপ শাহাদত মিঞা কইরা নাম আছিলো। উনি দয়ালের অনেক ভক্ত। উনি মারা গেছেন।

উনার তো দোতারা ঠাট করোন লাগতো না। এমনেই গান শুরু করছে। গুরুভজন-মুর্শিদ ভজন এই রকম গান হইতো। অর্থাৎ আমি যখন আমার গুরুর সামনে গান গামু তখন তো আমার গুরু ভজনার জন্যই গামু। আমি তো আর ইলার ভজনার জন্য করতাম না।

আমরা যারাই দয়ালের সামনে গান বাজনা করছি, আমরার ভজনার গানই আমরা গাইছি। কেমনে আমরা গুরুরে পাইতে পারি। কেমনে গুরুরে সেবা করতে পারি। বহু সাধকের গানই মানুষে গাইতো দয়ালের সামনে। মনোমোহন, লালন সহ অনেক মহতের গানই গাইতো। উনি গান শুনতো। মাঝেমধ্যে নিরবে বাইসাও থাকতো।

আবার ইমুনো দিন গেছে। আমরা যে নৌকায় আছি ইলাও আমাগো লগে গানে টান দিছে। আসলে উনি কি কর্ম করছে হেইয়া তো আমরা সেসুম অনুভব করতে পারছি না। কিন্তু উনি একটা সেকেন্ড… আপনিই দেখা গেছে রাতে একটা দুইটা আপনি শুইয়া আছেন, হেইলা তো শুয়া আছে।

আপনিও শুয়া আছেন। নাক টাইনা ঘুমাইতাছে। আমরা মনে করছি দয়াল ঘুমায়া গেছে। কিন্তু এইটা ঐটা কেউ ধরলে কইছে- কিরে। আসলে ঘুমেও উনি উনার কর্ম করে গেছে। সজাগেও করে গেছে। আসলে উনার জগতেই উনি ছিল।

কিন্তু আমি তো দেখলাম ভালা খানা। পরিষ্কার মাংস; সব কিছু। হেইলার যে অন্তরচক্ষু ছিল। হেইলাই তা দিয়া দেখছে হেইডা খারাপ, না ভালা। আমরা তো দেখছি না। আমরা তো যা আছে তা সব বাইট্টা খায়ালামু। হেইলা সব সময় সীমিত খাওয়া খাইতো। দুই তিন নলা।

উনার ঘুমের কোনো ঠিক ছিল না। উনার সময় হইলোই শুইয়া পরছে। উনি তো কোনো দিন ঠেং সোজা কইরা ঘুমাইছে না। উনি যেভাবে দেখেন না বসার ছবিটা সেইভাবে। কোনসম এই কাইত হইয়া শুইয়া রইছে। কোনোসম কইছে আমারে ধরো। আমরা ধইরা রাখছি। উনি হেই কাইত হইয়া রইছে।

উনি প্রায় এক যুগ এই ঠেংটা সোজা করছে না। এক ভাবেই বসা রইছে। এক কাইতই। হেই দিক দিয়া পিঁপড়ায় খায়াইলাছে। কোনদিন কইছে না- একটা মারো।

আমরা হইলাম মানবজাতি। মানবজাতির দেহেতে খাওনআদি দিলে না কি চলতো? কিন্তু দেখা গেছে চব্বিশ ঘণ্টায় এক নলা ভাতও খাইছে না।

উনি যখন খাইতেন তখন দুই থেকে তিন নলার বেশি খাইছে না কুনু সময়। দুই-তিন নলা খাইলে শেষ। এই খানাটাই মনে করেন, আপনি লয়া আইছেন বিরানি, উনায় আনছে মাংস, উনায় আনছে মাছ, উনায় আনছে এইডা, উনায় আনছে হেইডা। কিন্তু দয়াল দশটা প্লেট থেকে দশবার খাইছে না।

সবাই তো আফসোস কইরা আনছে। দয়াল যদি একটু খাইতো। আমরা দশটাত্তোই একবার এক বাসনে লইছি। মাছও লইছি, মাংসও লইছি, দুধও লইছি সবই লইছি। সব মাইখ্খ্যা-মুইখ্যা উনি দুই নলা খাইছে। আর আমরা বাকিটা ভাগজোক কইরা খাইছি।

সবই একসাথে। আলাদা কোনো জিনিস নাই। এই মাছের মজার কোনো টেস্ট, মাংসের কোন টেস্ট, মুরগির কোন টেস্ট এসব বুঝি নাই। সব একসাথে।

তবে উনি কোনটা খাবেন সেটা উনিই ভালো জানতেন। এটা উনার খানা’ডা আওয়ার উপর নির্ভর করছে। আপনি একটা খান লইয়া আইছেন। কি আনছেন হেইডা হেইলাতো দেখছে। আমিও না দেহি না। আমি অন্ধ আমি দেখি না। হেয় তো দেখছে। আমি তো দেখছি ভালা খানা। হেইলা কইছে এইডা ঢিল দিয়া ফালায় দেও।

কিন্তু আমি তো দেখলাম ভালা খানা। পরিষ্কার মাংস; সব কিছু। হেইলার যে অন্তরচক্ষু ছিল। হেইলাই তা দিয়া দেখছে হেইডা খারাপ, না ভালা। আমরা তো দেখছি না। আমরা তো যা আছে তা সব বাইট্টা খায়ালামু। হেইলা সব সময় সীমিত খাওয়া খাইতো। দুই তিন নলা।

(চলবে…)

<<খাদেম জাফর কাকার জবানে গণি শাহ্ বাবা: কিস্তি এক ।। খাদেম জাফর কাকার জবানে গণি শাহ্ বাবা: কিস্তি তিন>>

……………………….
আঞ্চলিক ভাষার কিছু শব্দার্থ-

আওয়ার= আসার।
আন্তারে= আনতে পারে।
আমরাও= আমাদেরও।
আমরার= আমাদের।
ইলা= উনি।
উনায়ই = উনিই।
এখন= এখন।
এলান= এইটা।
কিয়ের= কিসের।
খাঁড়া= দাঁড়ানো।
গাং= নদী।
চাইর= চার।
চুইক্ক্যা= চুক্তি করে।
ছুডু= ছোট।
জওব= জবাব।
থায়ে = থাকে।
থাইকা=থেকে।
পাছে = পেছনে।
বইন= বোন।
বয়া= বসে।
বাইল্য= বাল্যকাল।
বোগলে= কাছে।
বিছরাইয়া= খোঁজ করে।
লাইগ্গ্যা= জন্য।
মুহে= মুখে।
মুর= পাশ।
তহনো= তখনো।
সমকা= সময়ে।
সম= সময়।
হাপের লেজ= সাপের লেজ।
হেইলা = উনি।
হেইলারে = তাকে।
হেই = সেই।
হেই সমকা= সেই সময়।

………………………..
আরো পড়ুন-
খাদেম জাফর কাকার জবানে গণি শাহ্ বাবা: কিস্তি এক
খাদেম জাফর কাকার জবানে গণি শাহ্ বাবা: কিস্তি দুই
খাদেম জাফর কাকার জবানে গণি শাহ্ বাবা: কিস্তি তিন
খাদেম জাফর কাকার জবানে গণি শাহ্ বাবা: কিস্তি চার

…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন- voboghurekotha@gmail.com

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

………………………………….
আরও পড়ুন-
হযরত শাহ্জালাল
নাসির উদ্দিন সিপাহসালার
বাবা খানজাহান আলী
শাহ মখদুম রূপোশ: এক
শাহ মখদুম রূপোশ: দুই

হযরত ছৈয়দ শাহ্ আলী বোগদাদী
হযরত কেল্লা শাহ্‌ বাবা

মনসুর হাল্লাজ ফকির সে তো: এক
মনসুর হাল্লাজ ফকির সে তো: দুই
মনসুর হাল্লাজ ফকির সে তো: তিন
মনসুর হাল্লাজ ফকির সে তো: চার
মনসুর হাল্লাজ ফকির সে তো: পাঁচ

বড় পীর আবদুল কাদের জিলানী
হযরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী
সুলতানুল হিন্দ খাজা গরীবে নেওয়াজ
দিল্লীর নিজামউদ্দিন আউলিয়া-১
দিল্লীর নিজামউদ্দিন আউলিয়া-২
দিল্লীর নিজামউদ্দিন আউলিয়া-৩
দিল্লীর নিজামউদ্দিন আউলিয়া-৪
খাজা নিজামউদ্দিন আউলিয়ার কাশফের নিদর্শন

মুজাদ্দিদে আলফে সানী: এক
মুজাদ্দিদে আলফে সানী: দুই
মুজাদ্দিদে আলফে সানী: তিন

শেখ বাহাউদ্দীন নকশবন্দী: এক
শেখ বাহাউদ্দীন নকশবন্দী: দুই

ইমাম গাজ্জালী : জীবন ও দর্শন :: এক
ইমাম গাজ্জালী : জীবন ও দর্শন :: দুই
ইমাম গাজ্জালী : জীবন ও দর্শন :: তিন
ইমাম গাজ্জালী : জীবন ও দর্শন :: চার
সালমান আল-ফারেসী: এক
সালমান আল-ফারেসী: দুই
সালমান আল-ফারেসী: তিন
সালমান আল-ফারেসী: চার

উয়াইস করনি পাগল: এক
উয়াইস করনি পাগল: দুই
উয়াইস করনি পাগল: তিন
রহস্যাবৃত শামস তাবরিজি: পর্ব-১
রহস্যাবৃত শামস তাবরিজি: পর্ব-২
মাওলানা শ্রেষ্ঠ জালালউদ্দিন রুমি
আত্তারের সাধনার সপ্ত স্তর : এক
আত্তারের সাধনার সপ্ত স্তর : দুই
সুফিবাদের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ইবনে আল আরাবী
হযরত বাবা হাজী আলী
খাজা ফুজাইল : ডাকাত থেকে ওলী
সাধক বায়জিদ বোস্তামী
মরমী বুল্লেশাহ্
সারমাদ কাশানি

বাংলাদেশের প্রথম ইসলাম প্রচারক শাহ্ সুলতান
শাহানশাহ রাহাত আলী শাহ
বাবা সিরাজ শাহ্
বাবা হায়দার শাহ্
মদন পাগলার মোরতবা
মোখলেছ শাহর কারামতি
বাবা জাহাঙ্গীর

সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী : পর্ব এক
সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী : পর্ব দুই
সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী : পর্ব তিন

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!